• ‘নিখোঁজ’ ৫৮ হাজার, বাবার নামের জটিলতায় শুনানিতে পাঁচ লক্ষাধিক, হুগলিতে কমিশনের সামনাসামনি হবে ৯ লক্ষেরও বেশি
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: হুগলিতে খুঁজেই পাওয়া যায়নি ৫০ হাজারের বেশি ভোটারকে। এমনই তথ্য মিলেছে নির্বাচন কমিশন সূত্রে। এই তথ্য ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। কমিশন পৃথকভাবে মৃত ও স্থানান্তরিত ভোটারদের তালিকা প্রকাশ করেছে। ফলে, ‘নিখোঁজ’ ভোটার কারা, তা নিয়ে সরগরম গোটা জেলা। বিশেষ করে সংখ্যাটি ৫৮ হাজার ৬৩৮ হওয়ায় আলোচনা আরও বেশি হচ্ছে। এনিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল বিভিন্ন দাবি পেশ করেছে। পাশাপাশি, একাধিক জীবিত ভোটারকে ‘মৃত’-এর তালিকাভুক্ত করার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। ফলে, রাজনৈতিক চর্চার পালে বাড়তি বাতাস লেগেছে।

    নিখোঁজ ভোটারদের পাশাপাশি জেলার ৯ লক্ষ ৬ হাজার ৩৬০ জন ভোটারকে শুনানিতে হাজির হতে হবে। যাঁর মধ্যে সিংহভাগের ‘অপরাধ’ বাবার নামে গণ্ডগোল ধরা পড়েছে। আবার একাংশের ফর্মে  লিঙ্গ বিষয়ক গণ্ডগোল রয়েছে। এনিয়েও বিতর্ক তৈরি হয়েছে। অভিযোগ, এই ধরনের ভুল শুধুমাত্র নথি ডিজিটাইজ করার ক্ষেত্রেই হয়ে থাকতে পারে। কারণ, ভোটার নিজে এই সাধারণ বিষয়গুলি ভুল করবেন না। কোনও কোনও ক্ষেত্রে আবার বানানের ত্রুটিও আছে। ফলে, কার্যত প্রায় ৬ লক্ষ ভোটারকে অকারণেই হেনস্তা হতে হবে।

    এ নিয়ে তৃণমূলের জেলা চেয়ারম্যান অসীমা পাত্র বলেন, নির্বাচন কমিশনের কারণেই লক্ষ লক্ষ মানুষকে হেনস্তা হতে হবে। আমাদের বিশ্বাস, তাড়াহুড়ো করে কাজ করতে গিয়ে বিএলওরা ডিজিটাল নথি তৈরির সময় কিছু ভুল করেছেন। বিএলওদের উপর বিপুল চাপ ছিল। তাঁরা সঠিকভাবে যান্ত্রিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা পাননি। ফলে, তাঁদেরও দোষ দেওয়া যায় না। তাঁরা সঠিক সময় পেলে সমস্যা কম হতো, মানুষ হেনস্তা হতেন না। আর নিখোঁজ ভোটারদের প্রকৃত পরিচয় কী, সেটাও আমরা জানতে চাইব। এ বিষয়ে স্পষ্ট বার্তা থাকা প্রয়োজন। 

    বিজেপির জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুরেশ সাউ বলেন, নিখোঁজ ভোটাররা আসলে তৃণমূলের ভুয়ো ভোটার। নাহলে তাঁদের কেন পাওয়া যাবে না। আর ত্রুটি আদৌ হয়েছে, নাকি অনেকেই ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ভোটার হওয়ার চেষ্টা করেছেন, তা দেখতে হবে। শুনানিতে যাওয়া নিয়ে তৃণমূলের আপত্তি সন্দেহজনক। কিছু মানুষের ক্ষেত্রে হয়তো ত্রুটি হয়েছে। কিন্তু সিংহভাগের ঘাড়ে তা চাপিয়ে দিয়ে তৃণমূল নিজেদের উদ্দেশ্য সাধন করতে চাইছে। সিপিএম নেতা মনোদীপ ঘোষ বলেন, অবৈধ ভোটার চিহ্নিত হওয়া যেমন প্রয়োজন, তেমনই মানুষের হেনস্তা না হওয়া নিশ্চিত করাও আবশ্যক। নির্বাচন কমিশনের কার্যপদ্ধতি দু’টি বিষয়েই প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে।কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলি জেলায় বাবার নাম নিয়ে সমস্যা হয়েছে এমন ভোটারের সংখ্যা ৫ লক্ষ ২৪ হাজার ৫০১ জন। শুনানিতে ডাক পাবেন প্রায় ৯ লক্ষ। অন্যদিকে, লিঙ্গ বিষয়ক বিবাদের জেরে শুনানিতে যেতে হবে ৭১ হাজার ১৩৪ জনকে। বয়সে গোলমাল থাকায় হাজিরা দিতে হবে প্রায় ১ লক্ষ ২৩ হাজার ভোটারকে। সব মিলিয়ে এসআইআর নিয়ে বিবাদের শেষ নেই। উলটে বিতর্ক আরও চওড়া হওয়ার ‌঩ইঙ্গিত দিচ্ছে। 
  • Link to this news (বর্তমান)