কাকদ্বীপে কমিশনের খসড়ায় নতুন ৭ ‘ছেলে’র সন্ধান পেলেন পাঁচ সন্তানের মৃত বাবা ভগীরথ
বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, কাকদ্বীপ : আজব কাণ্ড কাকদ্বীপে। এসআইআর পর্বশুরু হতেই জেলায় জেলায় নানাবিধ তথ্য উঠে আসতে থাকে। একই এপিক নম্বর ব্যবহার করে একাধিক নাম ভোটার তালিকায় তোলায় অভিযোগ উঠেছে। এবার শেষ পর্বে এসে আজব তথ্য সামনে এল কাকদ্বীপের পঞ্চায়েতে। মৃত্যুর পরও এক ব্যক্তির সন্তান সংখ্যা বেড়েই চলেছে। একটি দু’টি নয় অতিরিক্ত সাতটি সন্তানের বাবা হয়েছেন ‘মৃত’ ভগীরথ দাস। খসড়া ভোটার তালিকা সেটাই বলছে। খসড়া তালিকা অনুযায়ী মোট ১২ সন্তানের বাবা ভগীরথ। অথচ তাঁর পাঁচ সন্তান। অতিরিক্ত সাত সন্তান নিয়ে শুরু হয়েছে জলঘোলা। প্রায় ১৬ বছর আগে মারা গিয়েছেন কাকদ্বীপের শ্রীশ্রী রামকৃষ্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১০ নম্বর বুথের বাসিন্দা ভগীরথ দাস। পরিবারে রয়েছে স্ত্রী, দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। কিন্তু খাতায়-কলমে এখন তিনি ১২ জন সন্তানের বাবা। ভগীরথবাবুর এপিক নম্বর ব্যবহার করে আরও সাতটি ভোটার কার্ড তৈরি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। তাঁর মৃত্যুর পরই এই কাণ্ড ঘটেছে। খবর জানাজানি হতেই ওই পঞ্চায়েত জুড়ে শোরগোল পড়ে গিয়েছে। জানা গিয়েছে, ভগীরথবাবুর তিন মেয়ের বিয়ে হয়ে গিয়েছে। বর্তমান তাঁর স্ত্রী ও দুই ছেলে বাড়িতে থাকেন। এসআইআরের কাজ শুরু হতেই পরিবারের সবাই ইনিউমারেশন ফর্ম পূরণ করে বিএলও-র কাছে জমা দিয়েছেন। আর সব ফর্ম জমা হওয়ার পরই বিষয়টি সামনে আসে।
ভগীরথবাবুর স্ত্রী কুন্তী দাস বলেন, ‘বিএলও-র মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পেরেছি। স্বামীর এপিক নম্বর আরও ৭টি ভোটার কার্ডে ব্যবহার করা হয়েছে। সেখানে বাবা ও ছেলের সম্পর্ক দেখানো হয়েছে। কিন্তু আমার দুই ছেলে ও তিন মেয়ে। আর কোনও সন্তান নেই। বিষয়টি বিএলও-কে একটি ঘোষণা পত্র দিয়ে জানিয়েছি।’
১১০ নম্বর বুথের বিএলও বিশ্বজিৎ মাইতি বলেন, ‘ভগীরথ দাস ও কুন্তী দাসকে বাবা ও মা দেখিয়ে ন’টি ইনিউমারেশন ফর্ম জমা করা হয়েছিল। সব ফর্মে একই এপিক নম্বর ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে বয়সের গরমিল ছিল। এরপরই বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হয়।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ভগীরথ দাসের তিন মেয়ে ও দুই ছেলে রয়েছে। কিন্তু বাকি সাতজন তাঁদের সন্তান নয়। এই তদন্ত রিপোর্ট কমিশনের কাছে জমা করা হয়েছে।’ কাকদ্বীপের মহকুমা শাসক প্রীতম সাহা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুযায়ী ওই সাতজনকে হেয়ারিংয়ে ডাকা হবে। সেখানে সব নথিপত্র দেখার পর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।’