• নাম আছে, শুনানিতে যাব কেন? ভোটারকুলের ধন্দে জেরবার বিএলওরা
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: মঙ্গলবার প্রকাশিত হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। তারপর থেকে শুরু হয়েছে সেই তালিকা থেকে নিজের নাম খুঁজে নেওয়ার জন্য হুটোপুটি। যাঁরা নাম খুঁজে পাচ্ছেন, স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন। যাঁরা পাচ্ছেন না, তাঁদের দুশ্চিন্তা দ্বিগুণ হচ্ছে। কেউ কেউ আবার এলাকার পূর্ণাঙ্গ তালিকা ডাউনলোড করে পাশের বাড়ির লোকজনের নাম আছে কি না, তাও দেখে নিচ্ছেন। এর মধ্যেই কারও কারও মাথার উপর ঝুলছে শুনানির ‘খাঁড়া’। শুনানিতে কী হবে? কী কী জিজ্ঞেস করবে? এসব নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতূহল তুঙ্গে রয়েছে। আর তাঁদের এই কৌতূহল মেটাতে গিয়ে জেরবার হচ্ছেন বিএলওরা। কেউ তাঁদের প্রশ্ন করছে, ‘আচ্ছা, আমার নাম তো খসড়া তালিকায় আছে। তাহলে শুনানিতে কেন যাব?’ কেউ আবার তাঁর এলাকার বিএলও-কে বলছেন, ‘আপনি থাকবেন তো শুনানির সময়? তাহলে একটু সাহস পাই!’ 

    শুনানিতে ডাকা হবে, এমন ভোটারদের নিয়ে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ খুলে ফেলেছেন যাদবপুর বিধানসভার এক বিএলও। শুনানির ডাক এলেই তিনি সেখানে জানিয়ে দেবেন। ওই বিএলওর কথায়, ‘যাঁদের ২০০২ সালে নাম নেই বা কোনও আত্মীয়ের নামও নেই, তাঁদের শুনানিতে ডাকা হবে বলে ধরে নেওয়া হচ্ছে। কোন কোন কাগজপত্র তৈরি রাখতে হবে, তা ইতিমধ্যে বলে দিয়েছি। তবে আতঙ্ক যাতে না ছড়ায়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হচ্ছে। তালিকায় নাম দেখে এক ব্যক্তি ফোন করে জানতে চাইলেন, আমার তো নাম আছে। তাহলে শুনানিতে কেন যেতে হবে? তাঁকে সময় নিয়ে বোঝাতে হল বিষয়টি।’ বুধবার সিংহভাগ বিএলও শুনানির নোটিশ হাতে পাননি। তবে তাঁদের আশা, আজ, বৃহস্পতিবার তাঁরা নোটিশ পেয়ে যাবেন এবং তা সংশ্লিষ্ট ভোটাররের হাতে দিয়ে আসার কাজ শুরু করতে পারবেন। সোনারপুর উত্তর বিধানসভা এলাকার এক বিএলও বলেন, ‘আমার পার্টে এই মুহূর্তে কোনও সমস্যা নেই। যাঁদের ম্যাপিং করা যায়নি, তাঁদের আগেই বলে এসেছিলাম, চিন্তার কারণ নেই। নথিপত্র হাতের কাছে রাখুন।’ ওই বিএলও কথায় কথায় জানালেন, এক জন তাঁকে ফোন করে শুনানির সময় হাজির থাকার অনুরোধ পর্যন্ত করেছেন। এ প্রসঙ্গে যাদবপুরের আরেক বিএলও বলেন, ‘শুনতে পাচ্ছি, শুনানিতে আমরাও থাকব।’ কিন্তু শুনানি কোথায় হবে? অনেক দূরে যেতে হবে, নাকি পাড়ারই কোনও সরকারি অফিসে শুনানি হবে? এসব প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। সব মিলিয়ে খসড়া তালিকা প্রকাশিত হওয়ার পরও বিএলওরা চাপ ও চিন্তামুক্ত হতে পারছেন না। আম জনতার হাজার কৌতূহল, হরেক প্রশ্নের উত্তর দিতে হচ্ছে তাঁদেরই।  ফাইল চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)