নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: ‘পানীয় জলের তীব্র সমস্যা। সমাধান করুন,’ এই দাবি জানিয়ে সম্প্রতি কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিমকে চিঠি লিখেছিলেন হালতু এলাকার এক বাসিন্দা। তিনি দেশের নামকরা এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম শীর্ষ পদে কর্মরত ছিলেন। পানীয় জল শুধু নয় এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই অঞ্চলে জমা জলের সমস্যাও প্রবল। তা নিয়ে সবার অসন্তোষ রয়েছে। কিন্তু তারপরও সেটি ‘পশ্চিমবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ’ ওয়ার্ড! এই বিজ্ঞাপন পড়েছে ওয়ার্ডে। তবে তা প্রকাশ্যে আসার পর শুরু হয়েছে হাসাহাসি। এলাকার বাসিন্দাদেরই প্রশ্ন, এরকম দাবির ভিত্তি কি? কেন এমন ‘কৌতুক’ করা হয়েছে। কিসের ভিত্তিতে দেওয়া হয়েছে এই পোস্টার?
সম্প্রতি হালতু এলাকার বিভিন্ন জায়গায় এই পোস্টার নজরে পড়ছে। নীল-সাদা ব্যানার। তাতে লেখা, ‘পশ্চিমবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ জনপ্রিয় ওয়ার্ড ১০৫’। কে বা কারা এই পোস্টার সাঁটালেন তা লেখা নেই। কিন্তু এমন ‘আজব’ দাবি কিসের ভিত্তিতে? কে দিল, কোথা থেকে এল এই ‘সর্বশ্রেষ্ঠ’ সার্টিফিকেট? এ ধরনের প্রশ্ন ঘুরছে ১০৫ নম্বর ওয়ার্ডের নাগরিকের মধ্যে।
তাঁদের বক্তব্য, যেখানে পানীয় জলের সমস্যা প্রবল। বর্ষায় পথে জল জমে। রাস্তাঘাট অনেক জায়গায় খারাপ। সেরকম একটি ওয়ার্ডে এই দাবি কতটা যুক্তিযুক্ত? পোস্টার নিয়ে শুরু হয়েছে হাসাহাসি, রীতিমতো কৌতুক চলছে এলাকায়। স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, এখনও এই অঞ্চলে বহু জায়গায় ভূগর্ভস্থ পানীয় জলের উপর আমরা নির্ভরশীল। পুরসভার পরিশুদ্ধ জল পাই না। তাহলে কীভাবে শ্রেষ্ঠ ওয়ার্ড হলাম? সঞ্চিতা মুখোপাধ্যায় (নাম অপরিবর্তিত) নামে অন্য এক বাসিন্দা বলেন, কতটা অমার্জিত হলে কেউ এমন পোস্টার লাগাতে পারেন? পশ্চিমবঙ্গের শ্রেষ্ঠ ওয়ার্ড! শহরের বেশ কয়েকটি ওয়ার্ডের অবস্থা আমাদের তুলনায় ভালো। যেদিন এখানে নিকাশি সমস্যা একদম মিটে যাবে, ঘরে ঘরে পরিশ্রুত পানীয় জল আসবে, সেদিন এসব বলা যাবে।
পাড়ার একটি চায়ের দোকানে কয়েকজন গল্প করছিলেন। তাঁরা বলেন, পশ্চিমবঙ্গের সর্বশ্রেষ্ঠ! এই পুরস্কার কে দিল? এমন অদ্ভুত পোস্টার যিনি লাগিয়েছেন বা যাঁর কথায় লাগানো হয়েছে তিনি বা তাঁরা ঠিক কাজ করেননি। স্থানীয় বাসিন্দারা মনে করছেন কাউন্সিলার বা তাঁর অনুগামী কিংবা পুরসভার শাসক শিবির ছাড়া এই কাজ আর কেউ করতে পারেন না। তৃণমূল কংগ্রেসের ওয়ার্ড প্রেসিডেন্ট তরুণ মণ্ডল বলেন, ‘আমরা নিজেরাই তো হাসাহাসি করছি। এক ব্যক্তি নিজের উদ্যোগে এসব পোস্টার লাগান। ওঁকে অনেকবার নিষেধ করা হয়েছে। কিন্তু
শোনেননি। আমি নিজেও বেশ কয়েকবার এমন পোস্টার সরিয়েছি।’