কীভাবে কাজ করত এই প্রতারক চক্র? তদন্তকারীরা বলছেন, মূলত সুন্দরীদের ‘টোপ’ হিসেবে ব্যবহার করা হত। মৌমিতার মতো সপ্রতিভ চেহারার যুবতীদের কাউকে বেসরকারি ব্যাংকের উচ্চপদস্থ ‘কর্ত্রী’ সাজিয়ে, কাউকে আবার নামী শেয়ার ট্রেডিং সংস্থার ‘মাথা’ বানিয়ে আসরে নামাত এই প্রতারক চক্র। এক্ষেত্রে মৌমিতা নিজেকে বেসরকারি ব্যাংকের কর্ত্রী হিসেবে ‘টার্গেটে’র সামনে উপস্থাপিত করতেন। সেই অনুযায়ী ভিজিটিং কার্ডও ছাপানো হয়েছিল। তদন্তকারীরা বলছেন, কয়েকমাস আগে যাদবপুর এলাকার এক ব্যক্তির মোবাইলে একটি মেসেজ আসে। তাতে বলা হয়েছিল, শেয়ার ট্রেডিংয়ে বিনিয়োগ করলে লোভনীয় রিটার্ন মিলবে। টোপ গেলেন ওই ব্যক্তি। তাঁকে যুক্ত করা হয় একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে। আড়াই কোটি টাকা বিনিয়োগ করেন তিনি। কিন্তু টাকা ফেরত পাননি। প্রতারিত ব্যক্তি যাদবপুর থানায় মাসখানেক আগে অভিযোগ করেন। তদন্তের প্রথম পর্যায়ে খোওয়া যাওয়া অর্থের মধ্যে ২৮ লক্ষ টাকা ব্লক করতে সক্ষম হয় পুলিশ। ওই সূত্রটি জানিয়েছে, হাতানো টাকার উৎস সন্ধানে নেমে তদন্তকারীরা দেখেন, যাদবপুরের ব্যক্তির খোওয়া যাওয়া টাকা ঢুকেছে মৌমিতা ঘোষ নামে এক মহিলার অ্যাকাউন্টে। প্রায় ২০ লক্ষ টাকা! তারপর ওই টাকা চলে গিয়েছে অন্য একটি অ্যাকাউন্টে। এরইমধ্যে তদন্তকারীরা জানতে পারেন, মৌমিতা নিজের মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করার আবেদনপত্র সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জমা করেছেন।
তদন্তকারীরা মৌমিতার বাড়িতে পৌঁছোন। ২০ লক্ষ টাকা কোথা থেকে এসেছিল এবং তা কোথায় বেরিয়ে গেল, তা জানতে চাওয়া হলেও কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি মৌমিতা। উলটে তাঁর দাবি ছিল, সিম ক্লোন করে কেউ এ কাণ্ড ঘটিয়েছে। তদন্তকারীরা পালটা প্রশ্ন করেন, তাহলে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা বেরিয়ে যাওয়ার পর মোবাইল নম্বর পরিবর্তন করতে গেলেন কেন? অ্যাকাউন্টে টাকা এসেছে, এটা জানার পর কেন তিনি ব্যাংককে জানাননি? কেন অ্যাকাউন্ট ব্লক করার আবেদন করেননি? এবারও কোনও উত্তর দিতে পারেননি মৌমিতা। তখনই গ্রেফতার করা হয় তাঁকে। তদন্তকারীরা বলছেন, সাইবার জালিয়াত চক্রের অন্যতম সদস্য এই যুবতী। বাকি কারা ঘুরছে ময়দানে? চলছে তারই খোঁজ।