• এসআইআরের অত্যাচারে বাংলাকে দমানো যাবে না, ব্যবসায়ী সম্মেলন মঞ্চ থেকে তোপ মমতার
    বর্তমান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: এসআইআর শুরু হয়েছে ৪ নভেম্বর। তারপর থেকে সিংহভাগ রাজ্যবাসী এনিয়ে বিচলিত। নির্বাচন কমিশনের তাড়াহুড়ো, বিএলওদের ক্ষোভ, রাজনৈতিক দলগুলির অভিযোগ-পালটা অভিযোগ, সর্বোপরি গেরুয়া শিবিরের নেতানেত্রীদের ‘বাংলাদেশে পাঠিয়ে দেওয়ার’ হুমকি—সব মিলিয়ে একটা ডামাডোল পরিস্থিতি। সঠিকভাবে ফর্ম পূরণ, নথি জোগাড় সহ এসআইআর সংক্রান্ত কাজেই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে মানুষকে। মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই এসআইআরের বিরোধিতায় আগেই সরব হয়েছেন। এবার তাঁর দৃপ্ত ঘোষণা, ‘এসআইআরের অত্যাচারেও দমানো যাবে না বাংলাকে!’ বুধবার ‘কনফেডারেশন অব ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রেড অ্যাসোসিয়েশনস’ আয়োজিত ব্যবসায়ী সম্মেলনে উপস্থিত হয়ে তিনি বলেন, ‘বাংলায় এসআইআরের অত্যাচার চলবে। সেই সঙ্গে জেলায় জেলায় মেলা, বড়দিন ও ইংরেজি নতুন বছরের উদযাপনও চলবে। তারপর রয়েছে গঙ্গাসাগর মেলা, দোল, রমজান মাস। এরপর এসে যাবে বিধানসভা নির্বাচন। সাধারণ মানুষ একজোট হয়ে থাকলেই সব চক্রান্ত ধ্বংস হবে।’ 

    এদিন বণিক মহলের অনুষ্ঠান থেকে মোদি সরকারের নোটবন্দি থেকে বাংলার প্রতি ধারাবাহিক বঞ্চনা নিয়ে সোচ্চার হন মমতা। কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে বলেন, ‘নোটবন্দি করলেই নাকি দেশে নগদের সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। কিছুই তো হয়নি। ভারত নগদবিহীন অর্থনীতির দেশ নয়। মানুষের হাতে টাকা থাকলে অর্থনীতির চাকা সচল হয়। আমরা ৯৫টি সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্প চালু করে সেই কাজই করতে চেয়েছি। কেন্দ্রের নীতি আয়োগ বলছে, বাংলায় বেকারত্ব ৪০ শতাংশ কমেছে।’ কেন্দ্রীয় বঞ্চনা নিয়ে বলেন, ‘বাংলার পাওনা ১ লক্ষ ৫৭ হাজার কোটি টাকা। অনেক গঞ্জনা, লাঞ্ছনা সহ্য করেও বাংলা অনেকটাই করতে পেরেছে। রাজ্যের খরচেই এগিয়ে গিয়েছে একাধিক প্রকল্প। অনেকে বলেন, রাজ্য সরকার দেনার বোঝা বাড়িয়েই চলেছে। কিন্তু আমরা যে নিয়ম ও আর্থিক শৃঙ্খলা মেনেই ঋণ নিই, সেটা কেউ বলে না। আসলে যারা দুষ্টুমি করে, তাদের দুষ্টু-মিষ্টি ওষুধও দিয়ে দিই আমরা।’ 

    বণিক মহলের মন পেতে একাধিক ঘোষণাও করেন মমতা। বলেন, ‘একটি পর্ষদ গঠন করা হবে, যার নাম পশ্চিমবঙ্গ ট্রেডার্স ওয়েলফেয়ার বোর্ড। এই বোর্ডে সরকারের প্রতিনিধিত্ব যেমন থাকবে, তেমনই ব্যবসায়ী সংগঠনগুলি যোগ দেবে।’ জেলাস্তরের চেম্বার অব কমার্সগুলিকেও ওই পর্ষদের অন্তর্ভুক্ত করার কথা বলেন তিনি। সেখানে জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপাররা থাকবেন। একটি সিঙ্গল উইন্ডো ইন্টারফেসে ব্যবসায়ীদের সমস্যার সমাধান করা হবে।’ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে বোর্ড সদস্যদের নাম চূড়ান্ত করতে বলেছেন তিনি। পরবর্তী সাত দিনের মধ্যে পর্ষদ গঠিত হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও জানিয়েছেন, কলকাতা এবং শিলিগুড়িতে ব্যবসা ও রপ্তানি সংক্রান্ত দু’টি সুবিধাকেন্দ্র গড়া হবে। তৈরি হবে ‘বিজনেস টু বিজনেস হাব’। ১০টি জেলায় শপিং মল তৈরির টেন্ডার চূড়ান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন মমতা। বাদবাকি ১৩টি জেলার জন্য বণিক মহলকে এগিয়ে আসার আবেদন করেছেন তিনি। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)