নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: বুধবার সন্ধ্যায় ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড নিউটাউনের ঘুণি এলাকায়। বিধ্বংসী আগুনে পুড়ে ছাই অসংখ্য ঝুপড়ি। এদিন রাত পর্যন্ত পাওয়া হিসেবে এবং স্থানীয়দের দাবি অনুযায়ী, প্রায় শতাধিক ঝুপড়ি বাড়ি ভস্মীভূত। তবে হতাহতের কোনও খবর নেই। এই শীতের রাতে আগুনের কারণে আশ্রয়হীন হয়ে পড়েন বহু গরিব মানুষ। আগুনের খবর পেয়ে দু’দফায় দমদমের ১২টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। ঘণ্টা তিনেকের চেষ্টার পর আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসে। পুলিশ ও দমকল সূত্রে জানা গিয়েছে, ঝুপড়ি অঞ্চলে প্রচুর দাহ্য পদার্থ মজুত ছিল। ছিল একাধিক গ্যাস সিলিন্ডার। সেগুলিতে বিস্ফোরণ হয়। ফলে দ্রুত আগুন ছড়িয়ে পড়ে।
নিউটাউনের ইকোপার্কের পিছন দিকের এলাকা হল ঘুণি। এলাকায় জ্যাংড়া-হাতিয়াড়া-দু’নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত একটি মাঠ আছে। পাশেই হিডকো এলাকা। জবরদখল করে ঝুপড়ি বাড়িগুলি গড়ে তোলা হয়েছিল। মূলত যাঁরা কাগজ কুড়োন তাঁরা থাকেন। স্থানীয় বাসিন্দাদের বক্তব্য, শিশু, প্রবীণ সহ দু’শোরও বেশি মানুষ বসবাস করেন এখানে। এদিন সন্ধ্যা ছ’টা ৪৫ মিনিট নাগাদ আচমকা আগুন লাগে। কাগজ সহ বিভিন্ন ধরনের দাহ্য বস্তু ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা ছিল। ফলে মূহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে আগুন। তা তীব্র আকার নেয়। বহু দূর থেকে দেখা গিয়েছে আগুনের শিখা। প্রাণে বাঁচতে বস্তির বাসিন্দারা তড়িঘড়ি বেড়িয়ে আসেন। নিজেরাই বালতি, ড্রাম নিয়ে নেভানোর চেষ্টা করেন। আশপাশের মানুষ এসেও হাত লাগান।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, একটি ঝুপড়িতে আগুন লেগেছিল। তারপর গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন ছড়িয়ে পড়ে। তারপর আরও কয়েকটি সিলিন্ডার বিস্ফোরণের আওয়াজ পাওয়া যায়। সবমিলিয়ে আগুন দ্রুত ছড়ায়। তার তীব্রতা এত বেশি ছিল যে বিশ্ববাংলা সরণি থেকে দেখা গিয়েছে আগুনের শিখা। নিউটাউনের দমকল কেন্দ্র থেকে প্রথমে পাঁচটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে যায়। ওই এলাকার রাস্তা সংকীর্ণ। ফলে দমকলের গাড়ি ভিতরে ঢুকতে বেগ পায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, যান্ত্রিক ত্রুটির জেরে দু’টি ইঞ্জিন কাজ করেনি। এরপর আরও সাতটি ইঞ্জিন যায়। মোট ১২টি ইঞ্জিন একযোগে কাজ করে আগুন নিয়ন্ত্রণে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান রাজ্যের দমকল মন্ত্রী সুজিত বসু এবং রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। আগুন কীভাবে লেগেছে সে কারণ এখনও স্পষ্ট হয়। দুর্ঘটনা না অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় কোনও ষড়যন্ত্র আছে তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ ও দমকল। সঠিক কারণ খুঁজতে হবে ফরেনসিক পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র