• সাইকেলে বিশ্বভ্রমণে নেপালের যুবক
    আজকাল | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: সাইকেল চালিয়ে বিশ্বভ্রমণের স্বপ্নে বেরিয়ে পড়েছেন নেপালের এক যুবক। গতকাল বুধবার হুগলি জেলা দিয়ে অতিক্রম করছিলেন ২১ বছরের ড্যানিয়েল নেপালি। তিনি জানান, নেপালের সুরখেত জেলার লেক বেসি পুরসভা এলাকার বাসিন্দা তিনি। গত ৫৯ দিন আগে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যাত্রা শুরু করেছেন। 

    ড্যানিয়েল জানিয়েছেন, তাঁর এই সফরের উদ্দেশ্য মানুষকে নেপাল ভ্রমণে আমন্ত্রণ জানানো এবং পবিত্র পশুপতিনাথ মন্দির দর্শনের বার্তা পৌঁছে দেওয়া। তিনি বলেন, মায়ানমার হয়ে থাইল্যান্ড যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু মায়ানমারের বিভিন্ন অঞ্চলে চলমান অশান্তির কারণে তিনি বিমানযোগে থাইল্যান্ড যাবেন। সেখান থেকে আবার সাইকেলে করে আরও প্রায় ১৫টি দেশ ভ্রমণের লক্ষ্য রয়েছে।

    ৫৯ দিনের এই যাত্রায় তিনি ইতিমধ্যেই বাংলাদেশ এবং ভারতের ১৭টি রাজ্য ঘুরে ফেলেছেন। ভারতের মানুষের আতিথেয়তা ও সম্মান পেয়ে তিনি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। ড্যানিয়েলের কথায়, 'ভারতের মানুষ আমাকে সম্পূর্ণ সম্মান দিয়েছেন, আমি তাঁদের স্যালুট জানাই।' 

    প্রসঙ্গত, চলতি বছরে ফেব্রুয়ারি মাসে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। 'প্যাডেল ফর গ্রিন'। সাইকেলে পরিবেশ রক্ষার বার্তা নিয়ে বিশ্বভ্রমণ। সাইকেলে শ্রীলঙ্কা যাওয়ার পথে হুগলি পান্ডুয়ায় দেখা হয়েছিল সেই সাইক্লিস্টের সঙ্গে। বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন মু্র্শিদাবাদ জেলার লালগোলার বাসিন্দা প্রসেনজিৎ দাস। তাঁর ডাক নাম জোজো। ইতিমধ্যেই কুড়িটি রাজ্য, ছয়টা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সাইকেল চালিয়ে ঘুরে ফেলেছেন প্রসেনজিৎ। দেশ ভ্রমণ তো হয়েছে আগেই। বিশ্বভ্রমণের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়েছিলেন তিনি। 

    গত ৪ জানুয়ারি বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন তিনি। গন্তব্য ছিল শ্রীলঙ্কা। এরপর এশিয়ার বারোটা দেশ প্রথম পর্যায়ে। সময় লাগবে আড়াই বছর। তারপর ধাপে ধাপে গোটা বিশ্বভ্রমণ। সময় লাগবে ১৬ থেকে ১৭ বছর। তাঁর স্লোগান 'প্যাডেল ফর গ্রিন'-এর পাশাপাশি 'রাইট ফর হেলথ' এবং 'প্ল্যান্ট ফর পিস, ডোনেট ব্লাড'। এই বার্তা নিয়ে বিশ্বভ্রমণে বেরিয়েছিলেন বছর ছাব্বিশের জোজো।

    তাঁর কথায়, গোটা পৃথিবীর সমস্যা বিশ্ব উষ্ণায়ন। বিশ্বের ১৯৫ টা দেশে ঘুরে সেই বার্তাই তিনি দিতে চান। যাতে মানুষ বৃক্ষরোপণে আগ্রহী হয়। গোটা বিশ্বের কাছে এই সচেতনতার বার্তা পৌঁছে দিতে তাঁর সময় লাগবে ১৭ বছর। তিনি নিজেও তাঁর এই সাইকেল যাত্রা নিয়ে ভ্লগ করেন। তা থেকে যা আয় হয় এবং এনজিও থেকে সাহায্য নিয়ে দেশ-বিদেশ ঘোরার খরচ চলে যায়। ইচ্ছে আছে শ্রীলঙ্কায় দিন পঁচিশ থেকে আবার ভারতে ফিরবেন।

    তারপর নেপাল, ভূটান, বাংলাদেশ, মায়ানমার, লাওস, ভিয়েতনাম, কম্বোডিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া, সিঙ্গাপুর পর্যন্ত দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ঘুরবেন। প্রসেনজিৎ বলেছেন, আগে সাইকেল নিয়ে তিনি খুবই ঘুরে বেরাতেন। কিন্তু সেই ঘোরাফেরায় কোনও বার্তা ছিল না। এরপর তিনি ভারত ভ্রমণে বেরোন সামাজিক বার্তা নিয়ে। অনেক মানুষের সাড়া পান। শুভেচ্ছা, সহযোগিতা পান। নানা ধরনের সংস্কৃতির মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ হয়।

    পরিবেশ নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে সাইকেল নিয়ে ঘোরাই তাঁর কাজ। এই কাজই করে যেতে চান প্রসেনজিৎ। ইতিমধ্যেই পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার প্রায় ১৭০০ কিলোমিটার রাস্তা সে ঘুরে ফেলেছেন। কলকাতায় বেশ কয়েকদিন ছিলেন। সেখানে সরকারি দপ্তরগুলোতেও গিয়েছেন। পড়াশোনা শিখেছেন। তবে চাকরির রেসে থাকতে চান না। সাইকেল নিয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করতে বিশ্বভ্রমণ করাই প্রধান লক্ষ্য।
  • Link to this news (আজকাল)