ব্যবসায়ীরাই বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড, নেতাজি ইন্ডোরে বার্তা মমতার
দৈনিক স্টেটসম্যান | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
তা সত্ত্বেও বিরোধীরা রাজ্যে শিল্প ও কর্মসংস্থান নিয়ে নানা প্রশ্ন তোলে। বুধবার নেতাজি ইন্ডোরে ব্যবসায়ী সম্মেলনে যেন বিরোধীদের সেই কুৎসারই পালটা জবাব দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর সরকারের কাজের হিসাব দিয়েই এর জবাব দেন। ব্যবসায়ীদের তিনি বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড বলে উল্লেখ করেন। সবসময় তাঁদের পাশে থাকার আশ্বাস দেন।
তাঁর বক্তব্যের শুরুতেই তিনি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কথা তুলে ধরেন। জানান, বাংলায় ৬৬০টির বেশি ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প রয়েছে। এইসব ক্ষেত্রে যুক্ত ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ। মহিলাদের অংশগ্রহণও উল্লেখযোগ্য। এর ফলে লক্ষ লক্ষ কাজের সুযোগ তৈরি হয়েছে। তিনি আরও বলেন, যোগান ব্যবস্থাকে শিল্পের মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। কলকাতা ও শিলিগুড়িতে রপ্তানি কেন্দ্র চালু হয়েছে। এর ফলে রাজ্যের আয় বাড়বে।
তাঁর কথায়, ‘অসংগঠিত ক্ষেত্রে ৬৫ লক্ষ ব্যবসায়ী রয়েছেন। রাজ্যে খুচরো ব্যবসায়ীরাই বাংলার অর্থনীতির মেরুদণ্ড।’ গত কয়েক বছরে রাজ্যের উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মমতা। তিনি বলেন, ‘আগে বেকারত্বের হার ছিল ৪০ শতাংশ। আমরা কমিয়েছি। ৬টি ইকোনমিক করিডর বানাচ্ছি। তার চারপাশে শিল্প, দোকান তৈরি হবে। খুচরো বিক্রেতারা লাভবান হবেন। লজিস্টিককে আমরা শিল্পের মর্যাদা দিয়েছি। কলকাতা, শিলিগুড়ি এক্সপোর্ট সেন্টার খোলা হয়েছে।’
মমতা বলেন, বাংলা ব্যবসার জন্য উপযুক্ত রাজ্য। ইন্টারনেটের মাধ্যমে কেনাবেচা বাড়লেও খুচরো ব্যবসায়ীদের গুরুত্ব কমেনি। তাঁর মতে, অসংগঠিত ক্ষেত্রে পঁয়ষট্টি লক্ষ ব্যবসায়ী রয়েছেন। খুচরো ব্যবসায়ীরাই রাজ্যের অর্থনীতিকে ধরে রেখেছেন। মমতা বলেন, ‘বাংলায় ৬৬০টির বেশি এমএসএমই ক্লাস্টার রয়েছে। ১ কোটি ৩০ লক্ষ মানুষ ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে যুক্ত। মহিলারাও এগিয়ে রয়েছেন। কয়েক লক্ষ কর্মসংস্থান হয়েছে।’
এদিন দেশের ব্যবসার সর্বনাশ করতে কেন্দ্রের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তের সমালোচনাও করেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি গত কয়েক বছরে রাজ্যের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরেন। তিনি জানান, বেকারত্বের হার অনেকটাই কমানো হয়েছে। তৈরি হচ্ছে ছ’টি অর্থনৈতিক করিডোর। সেই এলাকাগুলিতে শিল্প ও দোকান গড়ে উঠবে। লাভবান হবেন ব্যবসায়ীরা।
ব্যবসায়ীদের স্বার্থে এদিন একটি পোর্টাল চালু করা হয়। সরকারি কাজ শেষ করার পরে যাতে টাকা পেতে দেরি না হয়, সেই লক্ষ্যেই এই ব্যবস্থা। কাজ শেষ হলে সেখানে তথ্য জমা দিতে হবে। এই পোর্টালের সঙ্গে যুক্ত ৭২টি ব্যাঙ্ক এবং অন্যান্য আর্থিক সংস্থা ব্যবসায়ীকে দ্রুত টাকা দিয়ে দেবেন। এই ব্যবস্থার মাধ্যমে অভিযোগ জানানোও যাবে। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। আগামী দিনে রাজ্যের অর্থনীতি আরও শক্তিশালী হবে বলেই আশাবাদ প্রকাশ করেন তিনি।