• বাড়ির উঠোন পাঁচ বছরের শিশুকে টেনে হিঁচড়ে নিয়ে গেল হিংস্র চিতাবাঘ! রক্তাক্ত অবস্থায়...
    ২৪ ঘন্টা | ১৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • প্রদ্যুৎ দাস: বাড়ির উঠোন থেকে পাঁচ বছরের শিশুকে কন্যাকে তুলে নিয়ে গেল চিতাবাঘ। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে শিশুটি চিকিৎসাধীন। ঘটনাটি জলপাইগুড়ি জেলার বানাররহাট থানার অন্তর্গত কলাবাড়ি বান্দ লাইন এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি দুটো চিতা বাঘ এসেছিল। বাড়ির উঠোন থেকে শিশুটাকে চিতাবাঘ তুলে নিয়ে চলে যায় বলে অভিযোগ। পাঁচ বছরের মেয়েদের নাম প্রতিকা ওরাও, বাবা রোমান ওরাও। পরিবারের লোকজন শিশুটির আওয়াজ শুনতে পেয়ে আশেপাশের বেশ কয়েকজন ব্যক্তি নদীতে মাছ ধরছিল সেই সময় চিৎকার চেঁচামিচিতেই শিশুটিকে ছেড়ে পালিয়ে যায় চিতাবাঘ।

    বাসিন্দারা তড়িঘড়ি উদ্ধার করে পাঁচ বছরের ওই শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। বুধবার সন্ধ্যা রাতের এই ঘটনায় কলাবাড়ি এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়ায়। খবর পাওয়া মাত্রই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় ডায়না এবং বিন্নাগুরি রেঞ্জের বনকর্মীরা। বারংবার লোকালয়ে চিতাবাঘ এবং হাতির হানায় আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন এলাকার বাসিন্দারা বলে অভিযোগ। নাথুয়া এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা ডায়না এবং গয়েরকাটা ফরেস্ট থেকে প্রায়শই হাতি এবং চিতাবাঘ লোকাল এর প্রবেশ করায় বনদফতরের দিকে আঙুল তুলছেন স্থানীয়রা। লাগাতার বনদফতরের টহলদারির দাবি জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তবে বনদফতর সূত্রে জানা যায়, এলাকায় ইতিমধ্যে খাঁচা পাতা আছে আরও খাঁচা পাতার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী শিশুটির চিকিৎসার পাশাপাশি সাহায্য করা হবে।

    ঘটনার পর এলাকায় তীব্র আতঙ্ক। শুরু হয়েছে বনদফতরের তরফ থেকে মাইকিং সচেতনতা। বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই জলপাইগুড়ি বানারহাট থানার অন্তর্গত কলাবাড়ি বান্ধ লাইন এবং সংলগ্ন এলাকায় ডাইনা রেঞ্জের বনকর্মীরা সচেতনতায় মাইকিং শুরু করেছেন। এলাকায় খাঁচা পাতার পাশাপাশি বনদফতরের টহলদারি অব্যাহত রয়েছে। তবে বারংবার চিতাবাঘ, হাতি লোকালয়ে চলে আসায় আতঙ্কে বাসিন্দারা।

    উল্লেখ্য, অন্যদিকে মাল ব্লকের ওদলাবাড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের তুড়িবাড়ি এলাকায় একটি চিতাবাঘের মৃতদেহ উদ্ধার হওয়ায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে এলাকায়। তুড়িবাড়ির গেট লাইনের ঝোপঝাড়ের মধ্যে চিতাবাঘটির মৃতদেহ দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। সঙ্গে সঙ্গে বন দপ্তরকে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে তারঘেরা রেঞ্জের বনকর্মীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃত চিতাবাঘটিকে উদ্ধার করেন এবং তারঘেরা বন দপ্তরের অফিসে নিয়ে যান।

    স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তুড়িবাড়ির সামনেই মানাবাড়ি চা বাগান রয়েছে এবং গেট লাইনের চারপাশে ঘন ঝোপঝাড় থাকায় বন্যপ্রাণীর চলাচল প্রায়ই দেখা যায়। তাঁদের অনুমান, রাতে চা বাগান এলাকা থেকে চিতাবাঘটি এখানে এসে থাকতে পারে এবং কোনও এক কারণে তার মৃত্যু হয়। ওদলাবাড়ি পরিবেশ প্রেমী সংগঠন হিমালয়ান ইকোলজি কঞ্জার্ভেশন ফাউন্ডেশন এর সেক্রেটারি সৌগত বনিক বলেন, বনদফতর সুত্রে জানতে পেরেছি দুটি চিতাবাঘ এর লড়াইয়ে এই চিতাবাঘের মৃত্যু হয়েছে। পাশাপাশি যে চিতাবাঘ এর সাথে লড়াই হয়েছে, সেই চিতাবাঘও সম্ভবত আহত হতে পারে। সে ক্ষেত্রে বন দপ্তরেরকে দেখা উচিত।

    এ বিষয়ে তারঘেরা বন দফতরের, প্রাথমিকভাবে অনুমান করছে দুটি চিতাবাঘের মধ্যে লড়াইয়ের জেরেই এই চিতাবাঘটির মৃত্যু হয়েছে। কারণ মৃত চিতাবাঘটির মুখে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে, যা অন্য চিতাবাঘের আক্রমণের ফল হতে পারে। ময়নাতদন্তের পরই মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে বলে জানা গিয়েছে।

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)