মনরেগায় বাংলাকে ৩ হাজার কোটি দেবে কেন্দ্র, জানালেন শিবরাজ সিং
বর্তমান | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মনরেগায় রাজ্যকে তিন হাজার কোটি টাকার বেশি দেব না। বকেয়া মেটাব পুঙ্খানুপুঙ্খ হিসেব করে। বৃহস্পতিবার লোকসভায় গ্রামীণ রোজগারে নতুন বিল পাশ করানোর পর ‘বর্তমানে’র এক প্রশ্নের জবাবে এমনটাই জানালেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগে ২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকে পশ্চিমবঙ্গে কাজ বন্ধ রেখেছে মোদি সরকার। এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি লেখার পাশাপাশি সাক্ষাৎ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু কোনও ফল হয়নি। আর সেই কারণে গত তিন বছর লাগাতার মনরেগার বকেয়া আদায়ে সড়ক থেকে সংসদ—প্রতিবাদ জারি রেখেছে তৃণমূল। বৃহস্পতিবার নারেগা বাতিলের প্রতিবাদে সংসদ চত্বরে বিক্ষোভও দেখান বিরোধীরা।
সংসদে তৃণমূলের দাবি, ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে রাজ্যের পাওনা ৫২ হাজার কোটি টাকা। যদিও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক লিখিত জবাবে জানিয়েছে, ২০২২ সালের মোতাবেক বাংলায় বকেয়া ৩ হাজার ৮২ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা। এর মধ্যে শ্রমিকদের পাওনা ১ হাজার ৪৫৭ কোটি ২২ লক্ষ টাকা। কাজের মালমশলার (মেটিরিয়াল) জন্য রাজ্য পাবে ১ হাজার ৬০৭ কোটি ৬৮ লক্ষ টাকা। আর প্রশাসনিক কাজের জন্য ১৭ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। তাই তৃণমূল যে অঙ্কই দাবি করুক না কেন, কেন্দ্র নিজের হিসেবই অটল। এদিন লোকসভায় ‘বিকশিত ভারত-জি রাম জি’ বিল পাশ করানোর পরেই সহকর্মীরা শিবরাজকে শুভেচ্ছা দেন। আপ্লুত শিবরাজ সভা থেকে বেরতেই তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, তৃণমূল সাংসদদের অভিযোগ, আপনি তাঁদের সাক্ষাতের সময়ই দিচ্ছেন না। মেটাচ্ছেন না বকেয়াও। জবাবে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী বলেন, ‘আমার কাছে সাক্ষাতের জন্য কোনও চিঠি আসেনি। আমার দরজা তো সবসময় খোলা। আদালতের নির্দেশ পালনে বাংলায় তো ১০০ দিনের কাজ শুরু করতে বলেছি। আর বকেয়া? যা হিসেব হবে, তাই পাবে। কেন্দ্রের হিসেব মোতাবেক যা তিন হাজার কোটির কিছু বেশি।’
এদিকে বকেয়া না মেটানো তো বটেই, যেভাবে বিরোধীদের বুলডোজ করে বিল পাশ হল, তার প্রতিবাদে লোকসভা মুলতুবি হতেই সংসদ চত্বরে প্রেরণাস্থলে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে ধরনা প্রদর্শন করলেন তৃণমূলের লোকসভার সাংসদরা। রাজ্যসভাতেও এদিন রাতবিরেতে বিলে পাশের উদ্যোগের প্রবল সমালোচনা করে ডেরেক ও’ব্রায়েন বলেন, সংসদকে উপহাসে পরিণত করেছে মোদি-শাহ। খুন করা হচ্ছে মহাত্মা এবং মনরেগাকে। গান্ধী মূর্তির সামনে তৃণমূলের প্রতিবাদে স্লোগান ওঠে, ‘১০০ দিনের কাজে লড়ছি, লড়ব।’ বিক্ষোভ প্রদর্শন শেষে তৃণমূলের লোকসভার মুখ্য সচেতক কাকলি ঘোষদস্তিদার বলেন, বাংলার বকেয়া আমরা আদায় করেই ছাড়ব। মোদি-শাহরা আরও একবার গান্ধীজিকে হত্যা করল। মহাত্মাকে মেরেছিল আরএসএসের সঙ্গে যুক্ত নাথুরাম গডসে। আর এখন গরিবের প্রকল্প থেকে নাম কেটে ফের একবার হত্যা হল। এরপর কি ভারতীয় টাকা থেকে গান্ধীজির ছবি মোছাই টার্গেট মোদি সরকারের? প্রশ্ন কাকলির। নিজস্ব চিত্র