নিজস্ব প্রতিনিধি, বরানগর: সোদপুর ফ্লাইওভার সংস্কারের কাজ চলছিল। বলা হয়েছিল, আগামী দুই মাস ধরে এই কাজ চলবে। ব্রিজের স্বাস্থ্যের জন্য তা অত্যন্ত জরুরি। এই সংস্কারের জন্য যাত্রীরা তীব্র দুর্ভোগের মধ্যে পড়লেও মেনে নিচ্ছিলেন। কিন্তু রাতারাতি সেই কাজ স্থগিত রেখে ব্রিজ থেকে যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়া হচ্ছে। সৌজন্যে পানিহাটি উৎসব। জানা গিয়েছে, আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত ব্রিজ সংস্কারের কাজ বন্ধ রাখা হবে। বেসরকারি মেলার জন্য এভাবে ব্রিজের সংস্কার থমকে যাওয়ায় পানিহাটি জুড়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।
জুন মাসের শেষে সোদপুর ফ্লাইওভারে সংস্কার শুরু করা হয়েছিল। প্রত্যেক সপ্তাহের শুক্রবার রাত থেকে শুরু করে রবিবার ভোর পর্যন্ত ফ্লাইওভার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখা হয়। এজন্য প্রায় তিন মাস তীব্র দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছিল শহরবাসীকে। ফ্লাইওভারের মোট ২৮টি গার্ডারের মোট ৫৬টি বিয়ারিং পরিবর্তন করা হয়েছিল। ফের গত ২৫ নভেম্বর থেকে ফ্লাইওভারের উপরের অংশে ‘এক্সপানশন জয়েন্টের’ কাজ শুরু হয়েছিল। সেকারণে ফ্লাইওভার দিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছিল। ফ্লাইওভার দিয়ে মধ্যমগ্রামের দিক থেকে সোদপুর বিটি রোডে আসা যাচ্ছিল। কিন্তু বিটি রোডের সোদপুর মোড় থেকে ফ্লাইওভার দিয়ে মধ্যমগ্রামের দিকে যাতায়াত বন্ধ রাখা হয়েছিল।
বিকল্প পথ হিসেবে সোদপুর গির্জা মোড় থেকে ৮ নম্বর রেলগেট হয়ে রাসমণি মোড়, কেয়া মোড়, অমরাবতী মোড় হয়ে গাড়িগুলি মধ্যমগ্রামগামী রাস্তায় যাচ্ছিল। প্রায় ২ মাস ধরে এই কাজ হওয়ার কথা ছিল। পূর্তদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, ব্রিজের একদিকের লেনের কাজ প্রায় সম্পূর্ণ। অন্যদিকের কাজ শুরু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পানিহাটি পুরসভা পুলিশ সহ প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে চিঠি দিয়েছে। চিঠির বক্তব্য, পানিহাটি উৎসবের সময় ব্রিজের কাজ বন্ধ রেখে গাড়ি চলাচলের নিয়ন্ত্রণ তুলে নিতে হবে। সেইমতো সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগামী ২০ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্রিজের কাজ বন্ধ রাখা হবে।
এনিয়ে ঠিকাদার সংস্থা, পূর্তদপ্তর ও ট্রাফিক পুলিশমহলে উষ্মা তৈরি হয়েছে। স্থানীয়রাও বলছেন, শহরের যে কোনও অনুষ্ঠান ও বেসরকারি মেলা হলে তাহলে কি একইভাবে ব্রিজের কাজ বন্ধ রাখা হবে? নাকি স্রেফ শাসকদল পরিচালিত মেলা বলেই ছাড় দেওয়া হচ্ছে। পানিহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান সোমনাথ দে বলেন, পানিহাটি উৎসবে প্রচুর মানুষ আসেন। সেই সময় ফ্লাইওভারে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হলে বাকি সমস্ত রাস্তায় যানজট ও মানুষের দুর্ভোগ বাড়ত। তাই বিধায়কের পরামর্শে ওই সময় ব্রিজের কাজ বন্ধ রেখে যান নিয়ন্ত্রণ তুলে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়ে পুলিশ সহ প্রশাসনের সর্বস্তরে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়েছে, ২০ তারিখ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত ব্রিজের কাজ বন্ধ থাকবে। তখন ওই ব্রিজ দিয়ে আগের মতোই যান চলাচল করবে। নিজস্ব চিত্র