• নিউটাউন অগ্নিকাণ্ডে ২৫০ ঝুপড়ি ভস্মীভূত, গৃহহীনদের জন্য ক্যাম্প
    বর্তমান | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: নিউটাউনের ঘুণিতে বিধ্বংসী আগুনে ভস্মীভূত প্রায় আড়াইশো ঝুপড়ি। রাতারাতি আশ্রয়হীন বহু পরিবার। অসহায় মানুষগুলির জন্য অস্থায়ী ক্যাম্পের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশিরভাগ পরিবার সেখানেই আশ্রয় নিয়েছেন। কেউ প্রতিবেশি বা আত্মীয়দের বাড়ি চলে গিয়েছেন। 

    বুধবার আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকলের ২৫টি ইঞ্জিন কাজ করেছিল। তবে বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ঘটনাস্থলের একাধিক স্থানে অঙ্গার ও ধোঁয়া বের হতে দেখা যায়। আগুন সম্পূর্ণরূপে নির্বাপিত হয়নি। ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানতে তদন্তে আসে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের দল। ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করে দলটি। বুধবার সন্ধ্যায় নিউটাউনে ইকোপার্কের পিছন দিকে ঘুণিতে ঝুপড়িতে আচমকা আগুন লাগে। সেখানে কাগজ কুড়ুনিদের বসবাস। ফলে প্রচুর দাহ্য পদার্থ ছিল। এই কারণে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। পরপর গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে আগুন বৃদ্ধি পায়। সারা রাত চলে আগুন নেভানোর কাজ। রাত পর্যন্ত ক্ষতির প্রকৃত হিসেব করা সম্ভব হয়নি। বৃহস্পতিবার সকালে উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক সহ প্রশাসনিক আধিকারিকরা ঘটনাস্থলে যান। বাসিন্দাদের জন্য ঘুণি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অস্থায়ী ক্যাম্প করা হয়েছে। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সেখানে প্রায় ১৩০টি পরিবার আশ্রয় 

    নিয়েছে। বাদবাকিরা প্রতিবেশি ও আত্মীয়দের বাড়ি গিয়েছেন। আগুন ও ধোঁয়ায় কয়েকটি শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ে। তাদের কলকাতার বিসি রায় শিশু হাসপাতালে পাঠানো হয়। অস্থায়ী ক্যাম্পে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।

    দুর্গতদের দাবি, আগুনে সর্বস্ব পুড়ে গিয়েছে তাঁদের। আধার, ভোটার কার্ডের মতো গুরুত্বপূর্ণ নথিও 

    গিয়েছে নষ্ট হয়ে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় দমকল থানায় অভিযোগ জানাবে। এদিন ঘটনাস্থলে জেলাশাসক শশাঙ্ক শেট্টি বলেন, ‘সবরকমভাবে সাহায্য করা হচ্ছে। সম্পূর্ণ ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যায়নি। তবে দু’শো থেকে আড়াইশো ঝুপড়ি পুড়ে গিয়েছে।’ বুধবার রাত থেকে বৃহস্পতিবার দিনভর এলাকায় ছিলেন রাজারহাট-নিউটাউনের বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘আমরা দুর্গতদের পাশে আছি।’ 

    অন্যদিকে অগ্নিকাণ্ড নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর। বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য এক্স হ্যান্ডেলে আগুনের ভিডিও পোস্ট করে ঘটনাটিকে পরিকল্পিত বলে উল্লেখ করেন। তাঁর দাবি, ওই বস্তিতে অনেক বাংলাদেশের নাগরিক ছিলেন। এসআইআর শুরুর দিকে অনেকেই তালা ঝুলিয়ে সীমান্তে চলে যাচ্ছিলেন। খসড়া তালিকায় অনেকের নাম বাদও পড়েছে। আগুনে ভোটার ও আধার কার্ড পুড়ে গিয়েছে বলে কৌশলে তাঁদের নামে নতুন কার্ড করা হবে। আগুন নিয়ে খেলছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিধায়ক তাপস চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘বিজেপিই আগুন নিয়ে রাজনীতি করছে। এখন অসহায়দের পাশে থাকা উচিত। কে বাংলাদেশের, কে ভারতীয় পরে ওরা এ নিয়ে সিবিআই তদন্ত করুক।’
  • Link to this news (বর্তমান)