• আট বছরেই মেয়ের মা! তালিকায় ভূত কাকদ্বীপে
    এই সময় | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • এই সময়, কাকদ্বীপ: আট বছরে মা আর সতেরো বছরে বাবা! ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন বা সার-এর জন্য এনিউমারেশন ফর্ম জমা পড়ার পর এমনই তথ্য দেখে হতবাক বিএলও-রা। তবে মা এবং মেয়ের বয়সের পার্থক্য দেখে সন্দেহ হওয়ায় আনম্যাপিং করার মেয়ের নাম নেই খসড়া তালিকায়। অন্যদিকে বাবা এবং ছেলের নাম রয়েছে খসড়া তালিকায়। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১১০ নম্বর বুথের ভোটার ভগীরথ দাস। পরিবারে স্ত্রী, দুই ছেলে এবং তিন মেয়ে।

    বছর ১৫ আগে মৃত্যু হয়েছে ভগীরথের। অথচ তাঁর পরিবারের এনিউমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার পর বিএলও-র চক্ষু চড়কগাছ। খাতায় কলমে মৃত ভগীরথ দাস ১২ জন সন্তানের বাবা! তালিকায় বাড়ির সকলের নাম উঠলেও অতিরিক্ত আরও সাতজন সন্তান এল কোথা থেকে? ভগীরথের স্ত্রী কুন্তী বলেন, 'আমার স্বামীকে বাবা সাজিয়ে এপিক নম্বর জমা দিয়ে ওই সাতজন বাংলাদেশি এই কাণ্ড ঘটিয়েছে। আমি বিএলও-র কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছি। শুধু ভোটার তালিকা থেকে তাদের নাম কেটে দিলে হবে না, ওদেরকে খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে।'

    কাকদ্বীপ ব্লক প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, 'মৃত ভগীরথ দাসের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে বাকি সাতজনকে হিয়ারিংয়ে ডাকা হবে। নথি দেখাতে না পারলে তাদের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।' ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, তবে এই সমস্ত সন্দেহজনক ভোটারদের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে এইআরও-র কাছে। তাদের হিয়ারিংয়ে ডেকে সমস্ত নথি যাচাই করা হবে বলে ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে। খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার কাকদ্বীপ ব্লকের একের পর এক পঞ্চায়েতে এমন তথ্য প্রকাশ্যে এসে পড়ায় শুরু হয়েছে শাসক-বিরোধী রাজনৈতিক চাপানউতোর।

    বিজেপি নেতা সঞ্জয় দাস বলেন, 'ভোট পাওয়ার আশায় বেআইনি ভাবে খসড়া তালিকায় নাম তুলেছে তৃণমূলের নেতারা। কাকদ্বীপ বিধানসভার প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতে আরও ভালো করে যাচাই করা হোক। এইরকম কীর্তি আরও প্রকাশ্যে আসবে।' তৃণমূল নেতৃত্ব সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে। কাকদ্বীপের সূর্যনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের ৩০ নম্বর বুথের বাসিন্দা সুজাতা রানি ঘোষ। এনিউমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার পর জানা যায় সুজাতা এবং তাঁ মা পরমা ঘোষের বয়সের পার্থক্য মাত্র আট বছর। এটা কী ভাবে সম্ভব? সন্দেহ হওয়ায় সদ্য প্রকাশিত খসড়া তালিকা থেকে সুজাতার নাম বাতিল করে দেওয়া হয়েছে।

    স্বামী বিবেকানন্দ গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৪৩ নম্বর বুথের বাসিন্দা সুজিত হালদার। ভোটার তালিকা অনুযায়ী তাঁর বয়স ৩৯। অথচ তাঁর ছেলে সুদীপ্ত হালদারের বয়স ২২। অর্থাৎ বাবা এবং ছেলের বয়সের পার্থক্য মাত্র ১৭বছর। খসড়া তালিকায় নাম উঠলেও বয়সের পার্থক্যে সন্দেহ দেখা দেওয়ায় হিয়ারিংয়ে ডাকা হতে পারে সুজিত এবং তাঁর পরিবারের সদস্যদের। সুদীপ্ত বলেন, 'আমরা এখানকার বাসিন্দা। খসড়া তালিকায় আমাদের নাম উঠেছে।' ৩০ নম্বর বুথের বিএলও প্রশান্ত জানা বলেন, 'এনিউমারেশন ফর্ম হাতে পাওয়ার পর দেখতে পাই সুজাতা এবং তাঁর মায়ের বয়সের পার্থক্য মাত্র আট বছর। ফলে সেটা ম্যাপিং করা যায়নি।'

  • Link to this news (এই সময়)