নিজের হাতে জমা দিয়েছেন এনুমারেশন ফর্ম, রয়েছে কপিও, আলিপুরদুয়ারে বাদ ‘বৈধ’ ভোটারের নাম
প্রতিদিন | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
রাজ কুমার, আলিপুরদুয়ার: নিয়ম মেনে জমা দিয়েছেন এনুমারেশন ফর্ম। পেয়েছেন বিএলও-র রিসিভ করা কপিও। কিন্তু খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ হতেই অবাক কাণ্ড! পরিবারের সকল সদস্যের নাম তালিকায় থাকলেও, নাম নেই প্রৌঢ়ের। খোঁজাখুঁজি করতেই দেখা গেল বাদের খাতায় তিনি। তাঁকে খুঁজে পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে কমিশন। ভোটারের দাবি, তিনি বৈধ ভোটার। দীর্ঘদিন এলাকায় রয়েছেন। নাম বাদ যাওয়ায় আকঙ্কে ভুগছেন। ঘটনাটি ঘটেছে আলিপুরদুয়ার শহরে।
আলিপুরদুয়ার শহরের ১২/১৭৮ নম্বর বুথের ভোটার নিতাই সরকার। তাঁর বাবা-মা ও পরিবারের অন্যান্যদের নাম খসড়া তালিকায় উঠলেও নাম ওঠেনি নিতাইবাবুর। ১৭৮ নম্বরের অরবিন্দনগর জুনিয়র হাইস্কুলের বুথের নাম বাদ যাওয়ার তালিকায় ৩৪ নম্বরে রয়েছে নিতাইবাবুর নাম। সেখানে নাম বাদ দেওয়ার কারণ হিসেবে লেখা হয়েছে খুঁজে পাওয়া যায়নি/ অনুপস্থিত। কিন্তু নিতাইবাবু এনুমারেশন ফর্ম জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন। দাবি তাঁর কাছে রয়েছে, বিএলওর সই করা রিসিভ কপিও।
নিতাইবাবু কথায়, “আমি নিজে এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে জমা দিয়েছি। বিএলও সই করে রিসিভও কপিও দিয়েছেন। তারপরও আমার নামটা বাদ দিয়ে দেওয়া হল। পরিবারের বাকি সদস্যদের নাম আছে কিন্তু আমার নামটাই নেই। কারণ হিসেবে বলা হচ্ছে অনুপস্থিত / খুঁজে পাওয়া যায়নি। আমি আতঙ্কিত।” ১৭৮ নম্বর পার্টের বিএলও শুভ ভট্টাচার্য বলেন, “ওঁর নাম কেন খসড়া তালিকায় উঠল না সেটা পরিষ্কার নয়। নিতাইবাবু এনুমারেশন ফর্ম পূরণ করে আমার কাছেই জমা দিয়েছেন। আমি সই করে রিসিভ কপিও দিয়েছিলাম। এটা ঠিক। কিন্তু ওঁর বয়স ৪৫ বছরের বেশি হওয়ার পরেও ২০০২ সালের তালিকায় নাম ছিল না। সেই কারণে অসঙ্গতির তালিকায় নাম ছিল। সেটা ভেরিফিকেশনের অপশন একটা সময় নির্বাচন কমিশন বন্ধও করে দিয়েছিল। এখন ওঁর ক্ষেত্রে ঠিক কী হয়েছে বলা যাচ্ছে না। তবে চিন্তার কোনও কারণ নেই। ৬ নম্বর ফর্ম পূরণ করে জমা দেওয়া হয়েছে। নাম উঠে যাবে।”
নিতাই সরকারের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, বাইরে কাজ করার কারণে ১৮ বছর বয়সে নাম তুলতে পারেননি নিতাই। পরে ২২ বছর বয়সে ২০০৩ সালে ভোটার তালিকায় তাঁর নাম ওঠে। তবে ২০০২ তালিকায় তাঁর, বাবা-মা সকলের নামই রয়েছে। তাঁরা প্রশ্ন তুলছেন, তর্কের খাতিরে ধরে নেওয়া যাক তাঁদের ছেলে সন্দেহজনক ভোটার। সেক্ষেত্রেও তো তাঁর নাম তালিকায় উঠবে। প্রয়োজন পড়লে কমিশন তাঁকে হিয়ারিংয়ে ডাকত। কিন্তু তা না হয়ে এনুমারেশন ফর্ম জমা দেওয়ার পরও তাঁকে বাদের তালিকায় ফেলে দেওয়া হল কেন? ঘটনায় আতঙ্কিত পরিবার।