• বড় খবর! উচ্চ প্রাথমিকে অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় বিরাট রায়...কী হবে চাকরিপ্রার্থীদের ভবিষ্যত্‍?
    ২৪ ঘন্টা | ১৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • অর্ণবাংশু নিয়োগী: প্রাথমিকে আইনি জট কিছুটা কাটলেও উচ্চ প্রাথমিকে (Upper Primary) অস্বস্তি বাড়ল রাজ্য সরকারের। উচ্চ প্রাথমিকে কর্মশিক্ষা ও শারীরশিক্ষা বিভাগে নিয়োগের জন্য তৈরি করা ১৬০০টি 'সুপারনিউমেরিক' বা অতিরিক্ত শূন্যপদ বাতিল করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। উচ্চ প্রাথমিকে অতিরিক্ত শূন্যপদ মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ। সিঙ্গেল বেঞ্চের নির্দেশ চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে চাকরি প্রার্থীরা। মামলা দায়ের বিচারপতি তপোব্রত চক্রবর্তীর ডিভিশন বেঞ্চে। রাজ্যের তৈরি অতিরিক্ত ১৬০০ শূন্যপদ বাতিল করে কলকাতা হাইকোর্ট। ২০২২ সালে তৈরি করা অতিরিক্ত শূন্যপদ বাতিল করে আদালত। কর্মশিক্ষা এবং শারীরশিক্ষার অতিরিক্ত ১৬০০ শূন্যপদ বাতিল করেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। আগামী সপ্তাহে শুনানির সম্ভবনা।

    আদালতের কড়া পর্যবেক্ষণ ও পদ বাতিল

    শুক্রবার বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু ২০২২ সালে রাজ্যের তৈরি করা এই অতিরিক্ত শূন্যপদগুলো বাতিলের নির্দেশ দেন। এর মধ্যে কর্মশিক্ষার ৭৫০টি এবং শারীরশিক্ষার ৮৫০টি পদ ছিল। এই পদে আপাতত কোনো নিয়োগ করা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে আদালত।

    আদালতের পর্যবেক্ষণে উঠে আসে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য:

    মেয়াদ উত্তীর্ণ প্যানেল: ২০১৯ সালেই সংশ্লিষ্ট প্যানেলের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছিল। বিচারপতি মন্তব্য করেন, “এ যেন মৃত প্যানেলকে ইনজেকশন দিয়ে বাঁচাবার চেষ্টা করা হয়েছে।”

    নির্বাহী ক্ষমতার অপব্যবহার: আদালত জানায়, রাজ্য তার 'এজিকিউটিভ পাওয়ার' বা নির্বাহী ক্ষমতা ইচ্ছেমতো ব্যবহার করে কারও অধিকার খর্ব করতে পারে না। নতুন নিয়োগ করতে হলে নতুন করে শূন্যপদ ঘোষণা করে স্বচ্ছ প্রক্রিয়ায় করতে হয়, পুরনো প্যানেল টেনে বাড়িয়ে নয়।

    এই রায়ের পর আইনজীবী ফিরদৌস শামিম বলেন, “যেহেতু পুরো ক্যাবিনেট মিলে এই বেআইনি সিদ্ধান্তের ভাগীদার ছিল, তাই নৈতিকভাবে সরকারের পদত্যাগ করা উচিত।”

    চাকরিহারা যোগ্য প্রার্থীদের জন্য আশার আলো

    অন্যদিকে, স্কুল সার্ভিস কমিশন (SSC)-এর নিয়োগ দুর্নীতির জেরে যারা চাকরি হারিয়েছিলেন, তাদের মধ্যে যোগ্য প্রার্থীদের জন্য মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছে আদালত। নবম-দশম শ্রেণিতে ২৬ হাজার শিক্ষকের চাকরি বাতিলের পর, এক যোগ্য প্রার্থী উচ্চ প্রাথমিকে নিয়োগের সুযোগ পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন। বৃহস্পতিবার সেই বাতিল হওয়া যোগ্য শিক্ষকদের ৩১আগস্ট পর্যন্ত চাকরিতে বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কোর্ট।

    এই মামলার শুনানিতে বিচারপতি সৌগত ভট্টাচার্যের প্রশ্নের মুখে পড়ে কমিশন। বিচারপতির প্রশ্ন ছিল, “কার ভুলে নিয়োগ বাতিল হলো? যোগ্য শিক্ষকদের কেন বাড়ি ফিরতে হলো?” জবাবে কমিশনের আইনজীবী দাবি করেন, এতে কমিশনের ভুল ছিল না। তিনি বর্তমান কমিশনকে 'নিউ কমিশন' হিসেবে পরিচয় দিয়ে জানান যে এখনকার অফিসাররা সম্পূর্ণ আলাদা।

    আদালতের নির্দেশ: বিচারপতি নির্দেশ দিয়েছেন যে, যদি শূন্যপদ থাকে তবে সংশ্লিষ্ট মামলাকারীকে কাজে যোগ দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। আর যদি এখন পদ না থাকে, তবে ভবিষ্যতে নিয়োগের সময় তাকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। পুরো বিষয়টি কমিশনকে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে বলা হয়েছে।

    ১. ১৬০০ পদ বাতিল: বেআইনিভাবে তৈরি ১৬০০ অতিরিক্ত শূন্যপদ বাতিল করেছেন বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু।

    ২. নিয়োগে স্থগিতাদেশ: ওই পদগুলোতে আপাতত কোনও নতুন নিয়োগ হবে না।

    ৩. যোগ্যদের সুযোগ: ভুলবশত চাকরি হারানো যোগ্য প্রার্থীদের উচ্চ প্রাথমিকে ফেরানোর পথ প্রশস্ত করল আদালত।

     

     

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)