• বাংলাদেশকে ইস্যু করে রাজ্যে সাম্প্রদায়িক উসকানি! মালব্যের বিরুদ্ধে FIR তৃণমূলের
    প্রতিদিন | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: বাংলাদেশের অশান্তিকে অস্ত্র করে বাংলায় রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা বিজেপি! বাংলাকে অপমানের পাশাপাশি দেশের সার্বভৌমত্ব নষ্ট ও সাম্প্রদায়িক উসকানি ছড়ানোর চেষ্টা বিজেপি নেতা অমিত মালব্যর। এই ঘটনায় বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করলেন তৃণমূল মুখপাত্র তন্ময় ঘোষ।

    শুক্রবার বারুইপুর পুলিশ জেলার অন্তর্গত নরেন্দ্রপুর থানায় এই অভিযোগ দায়ের করেছেন তন্ময়। যেখানে তাঁর অভিযোগ, বিজেপির আইটি সেলের প্রধান বাংলাদেশ হিংসাকে হাতিয়ার করে শুক্রবার এক্স হ্যান্ডেলে যে বিবৃতি ও ভিডিও শেয়ার করেছেন তা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা। একইসঙ্গে দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য বিপজ্জনক। বাংলা, তৃণমূল কংগ্রেস ও বাংলার মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য অপমানজনক। ফলে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী কঠোর থেকে কঠোরতম পদক্ষেপ করা হোক। তৃণমূলের অভিযোগের ভিত্তিতে অমিত মালব্যের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে নরেন্দ্রপুর থানা।

    উল্লেখ্য, ইনকিলাব মঞ্চের নেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর পর নতুন করে আগুন জ্বলছে বাংলাদেশে। ইউনুস প্রশাসনের ‘প্রহরা’য় চরম অরাজকতা চলছে ওপার বাংলায়। আক্রান্ত সংখ্যালঘুরা, আক্রান্ত সংবাদমাধ্যমও। বৃহস্পতিবার রাতে হাদির মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই ঢাকা, চট্টগ্রাম-সহ বিভিন্ন এলাকায় শোক মিছিল বার হয়। বিভিন্ন উচ্চ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেও বেরিয়ে আসেন পড়ুয়ারা শুরু হয় শোক মিছিল। শাহবাগ-সহ বিভিন্ন জায়গায় চলে অবস্থান বিক্ষোভ। রাত যত বাড়তে থাকে বিক্ষোভের নামে ততই ছড়ায় অশান্তি। মৌলবাদী বিক্ষোভকারীরা আক্রমণ করে ‘প্রথম আলো’-র দপ্তরে। ‘ডেইলি স্টার’-এর দপ্তর জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ঢাকার সাংস্কৃতিক কেন্দ্র ছায়ানটেও চালানো হয় ধ্বংসলীলা। এক হিন্দু যুবককে পিটিয়ে খুনের পর গাছে ঝুলিয়ে জ্বালিয়ে দেওয়া হয় দেহ।

    নারকীয় সেইসব ঘটনার ভিডিও সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছিলেন বিজেপি আইটি সেলের প্রধান অমিত মালব্য। একইসঙ্গে দাবি করেন, বাংলাদেশে আজ যে মৌলবাদীদের দাপাদাপি শুরু হয়েছে সেটাই আগামী দিনে বাংলার ভবিতব্য। তিনি দাবি করেন, “বাংলাদেশের এই ঘটনা আমাদের জন্য হুঁশিয়ারির সমান। এটাই হয় যখন মৌলবাদ এবং উগ্রপন্থাকে প্রশ্রয় এবং উৎসাহ দেওয়া হয়। ঠিক এই কারণেই বাংলায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) শাসন উদ্বেগজনক। বহু বছরের রাজনৈতিক আশ্রয়, স্বাধীন সংস্থাগুলির অবক্ষয় এবং ক্ষেত্রবিশেষ নীরবতা বাংলাকে বিপজ্জনক পথে এগিয়ে দিচ্ছে।” মালব্যর দাবি, “২০২৬-এর পরও যদি বাংলায় মমতার শাসন চলে তাহলে বাংলার পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে যাবে।”

    বিজেপির আইটি সেলের প্রধানের এই পোস্টে রীতিমতো প্ররোচনা দেখছে তৃণমূল। দলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের বক্তব্য, “বিজেপির অমিত মালব্য বাংলাদেশের ঘটনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গকে তুলনা করে যে পোস্ট করেছেন, তীব্র নিন্দা করছি। এটা শুধু এই রাজ্যকে অপমান নয়, এটা প্ররোচনা ছড়ানো। পুলিশের উচিত ব্যবস্থা নেওয়া। বাংলাদেশ ইস্যুতে রাজ্যের শাসকদলের অবস্থান স্পষ্ট করে কুণাল জানান, “বাংলাদেশ থেকে উদ্বেগজনক খবর আসছে। কিছু অমানবিক ভিডিও ছড়াচ্ছে। সত্য মিথ্যা বোঝা কঠিন। যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক বিষয়, তাই কেন্দ্রীয় সরকার অবিলম্বে এবিষয়ে পদক্ষেপ নিক, অবস্থান জানাক। বাংলাদেশে থাকা সংখ্যালঘু, ভারতীয় ও সংবাদমাধ্যমের কর্মীদের যথাযথ নিরাপত্তা বাঞ্ছনীয়।”
  • Link to this news (প্রতিদিন)