পাক-তুরস্কের ইন্ধনে ঢাকায় ভারত বিরোধী শাসক বসানোর প্ল্যান, সীমান্তে হাই অ্যালার্ট, সেনা টহল শুরু
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
সমৃদ্ধ দত্ত, নয়াদিল্লি: নতুন নাম ‘জুলাই যোদ্ধা’। ২০২৪ সালের জুলাই থেকে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার ভারতে পালানো পর্যন্ত যারা বাংলাদেশে চরম অরাজকতা তৈরি করে অসংখ্য প্রাণহানি এবং ধ্বংসলীলা ঘটিয়েছিল, তাদের নাম দেওয়া হয়েছিল ‘বৈষম্য বিরোধী’। দেড় বছর পর ‘জুলাই যোদ্ধা’ নামে তাদের একাংশ আবার বাংলাদেশজুড়ে তাণ্ডব চালাল। যদিও আদতে তারা স্রেফ পুতুল। কোনও নির্বাচন নয়, ঢাকার মসনদে সরাসরি ভারত বিরোধী মৌলবাদী শাসক বসানোর পরিকল্পনারই অঙ্গ বাংলাদেশে বিগত ৪৮ ঘণ্টার তাণ্ডব। ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা জানতে পেরেছে, হেফাজত-এ-ইসলাম বাংলাদেশ নামক এক সংগঠন এহেন নয়া কর্মসূচির প্রধান চক্রান্তকারী। তাদের নেতা মীর ফারহাদ এবং আরও এক ছাত্র নেতা সালাউদ্দিন আম্মারই প্ল্যান করেছে, প্ররোচনার মাধ্যমে ওসমান হাদির উপর গুলিচালনা ও তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে এই বিক্ষোভ কর্মসূচির।
গোয়েন্দারা জানতে পারছেন, তুরস্ক এবং পাকিস্তানের আইএসআই বাংলাদেশে নির্বাচনের বিরোধী। কারণ, নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার এলেই কূটনৈতিক বাধ্যবাধকতায় দিল্লির সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে হবে ঢাকাকে। সেটা একবার শুরু হলে, বাংলাদেশকে পূর্ণাঙ্গ মৌলবাদী সরকারের আওতায় নিয়ে আসা যাবে না। বাইরে থেকে এই প্ররোচনা ও প্ল্যানের পুতুল হিসেবে ‘জুলাই যোদ্ধা’দের কাজে লাগানো হচ্ছে। সেটা মূলত তাদের আবেগ হাতিয়ার করেই। এদিকে এই বিক্ষোভ ক্রমেই ওসমান হাদির প্রতি শোকপালন ছাপিয়ে ভারত বিরোধী আন্দোলনে পরিণত হওয়ায় বাংলাদেশ সীমান্ত লাগোয়া সব রাজ্যে হাই অ্যালার্ট জারি করেছে কেন্দ্র। শুধুই সতর্কতা নয়, সীমান্তে শুরু হয়েছে সেনা টহল। সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে শিলিগুড়ি করিডর তথা ‘চিকেন নেক’এ। হাসিমারায় রাফাল যুদ্ধবিমান ও মিগ ভ্যারিয়েন্টকে তৈরি থাকতে বলা হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র ব্রহ্মস সক্রিয় রাখার প্রস্তুতি নির্দেশও দেওয়া হচ্ছে।
সবমিলিয়ে ইস্টার্ন কমান্ডের পক্ষ থেকে সর্বোচ্চ অ্যালার্ট জারি। শুক্রবার ভারতীয় সেনা, অসম রাইফেলস এবং বিএসএফ যৌথ টহলদারি করছে ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্তে। ইন্দো-বাংলাদেশ সীমান্তের বিলোনিয়া আউটপোস্ট পরিদর্শন করেছেন পূর্বাঞ্চলীয় সেনাপ্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল আর সি তিওয়ারি। বিলোনিয়া আউটপোস্ট ও অন্য ফরওয়ার্ড এরিয়ায় অসম রাইফেলস মোতায়েনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। সেনা কর্তারা পরিদর্শন করেছেন মিজোরাম সীমান্তও। বাংলার কোচবিহার, নদীয়া, উত্তর ২৪ পরগনা, হিলি, মালদহে সীমান্ত এলাকায় বিএসএফ সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে। এই পর্বেই বনগাঁ সীমান্ত অভিযানের ডাক দিয়েছে জামাতের ছাত্র সংগঠন। সেই কারণে চরম সতর্কতা নেওয়া হচ্ছে। বিএসএফকে সিদ্ধান্ত নেওয়ার পূর্ণ অধিকার দেওয়া হয়েছে, সীমান্তে কোনওরকম সন্দেহজনক মুভমেন্ট এবং বিপজ্জনক জমায়েত কিংবা অনুপ্রবেশের চেষ্টা হলে, দেখামাত্র গুলি করার সিদ্ধান্ত নেওয়ার। সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক যোগাযোগ রাখছে বলে জানা যাচ্ছে। উত্তরবঙ্গে সবথেকে উদ্বেগ তৈরি হয়েছে শিলিগুড়ি করিডর নিয়ে। সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করা হয়েছে সেনার ত্রিশক্তি কোর’এ।