নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: ‘এত অল্প সময়ের জন্য কেন সংসদের অধিবেশন করলেন? আমাদের এত ভয়?’ শুক্রবার লোকসভার স্পিকারের ডাকা চা-চক্রে প্রধানমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে হাসতে হাসতে খোঁচা দিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। নরেন্দ্র মোদিও চুপ থাকলেন না। পালটা হাসিতে মজার মন্তব্য, ‘প্রতিবাদী স্লোগানে আপনাদের গলায় যাতে কম চাপ পড়ে, তাই।’ উঠল হাসির রোল। যদিও চা চক্রের এই আসরেই জোর করে বিল পাশ, কমদিনের অধিবেশন ইত্যাদি ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা জারি রাখল বিরোধীরা।
উঠল ভাষা শিক্ষার প্রসঙ্গ। প্রধানমন্ত্রীকে সামনে পেয়ে কেরলের ওয়েনাড়ের সাংসদ প্রিয়াঙ্কা গল্পোচ্ছলে তুললেন তাঁর নির্বাচনী এলাকার প্রসঙ্গ। মালায়ালম ভাষা কত সুন্দর। যা সমর্থন করলেন কেরলের আরএসপি সাংসদ এন কে প্রেমচন্দ্রন। প্রধানমন্ত্রী বললেন, আমিও মালায়ালাম ভাষা শিখতে চাই। সাংসদ হিসেবে প্রেমচন্দ্রনের প্রশংসা করলেন মোদি। বললেন, সব বিলে বলা, সংসদের রুল বুক সম্পর্কে জ্ঞান খুব। শেখার মতো। বিনয়ী প্রেমচন্দ্রন দিলেন ধন্যবাদ। প্রিয়াঙ্কা বললেন, আমি এখনও ভালোভাবে মালায়ালম শিখতে পারিনি।
সংগঠনের পর সংসদ। কংগ্রেসে গুরুত্ব বাড়ছে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর। দাদা রাহুল গান্ধী লোকসভার বিরোধী দলনেতা। তবুও সংসদ চলাকালীন পাড়ি দিয়েছেন বিদেশ। তাই সংসদ সামলাচ্ছেন প্রিয়াঙ্কা। উপনির্বাচনে জিতে আসার পর সংসদের চারটি অধিবেশনে ৮২ দিনের মধ্যে প্রিয়াঙ্কা এসেছেন ৬৯ দিন। অর্থাৎ সংসদে হাজিরা ৮৪ শতাংশ। সরকারের সমালোচনাতেও নেই পিছিয়ে। তাই সংসদেও বাড়ছে প্রিয়াঙ্কার গুরুত্ব।
শুক্রবার শীতকালীন অধিবেশনের শেষে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লার ডাকা সর্বদলীয় সৌজন্য চা-চক্রের আসরেও প্রিয়াঙ্কা গান্ধীই ছিলেন একপ্রকার মধ্যমণি। রাজনাথ সিংয়ের একেবারে পাশে সোফায় বসতে দেওয়া হয়েছিল তাঁকে। দু’ হাত দূরে সামনেই অন্য সোফায় স্পিকার এবং প্রধানমন্ত্রী। দেওয়া হল লাল চা। কংগ্রেসের মানিক্কম টেগর, কুমারী সেলজার মতো সাংসদরাও ছিলেন সেখানে। এনসিপি তথা শারদ পাওয়ারের কন্যা সুপ্রিয়া সুলে, সমাজবাদী পার্টির ধর্মেন্দ্র যাদবও উপস্থিত। দেখা গেল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রহ্লাদ যোশি, রাজীবরঞ্জন সিং লালন, অর্জুনরাম মেঘওয়াল, রামমোহন নাইডু, চিরাগ পাসোয়ানকেও। তবে তাঁদের বসার জায়গা মিলল প্রধানমন্ত্রীর চেয়ে দূরে। সংসদের অধিবেশন শেষে হয় সৌজন্য চা-চক্র। এটাই প্রথা। তবে এদিন তা বয়কট করল তৃণমূল। কারণ, জোর করে সরকারের বিল পাশ।