• দক্ষিণ-পশ্চিম রেলে বছরে গড়ে ৩০০০ সিগন্যালিংয়ের গোলযোগ, অবিলম্বে পদক্ষেপের সুপারিশ ক্যাগ-এর
    বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • দিব্যেন্দু বিশ্বাস, নয়াদিল্লি: প্রতি বছর গড়ে প্রায় তিন হাজার সিগন্যাল গোলযোগের ঘটনা। দক্ষিণ-পশ্চিম রেল নিয়ে রীতিমতো উদ্বেগজনক রিপোর্ট পেশ করল দেশের শীর্ষ অডিট সংস্থা ক্যাগ। শুধুমাত্র গোলযোগই নয়, ‘সিগন্যাল পাসড অ্যাট ডেঞ্জারে’র (এসপিএডি) মতো ঘটনাও ঘটছে ওই জোনে। অর্থাৎ, অনেক সময় সিগন্যাল মানছেন না ট্রেনচালকরা। সংসদে রিপোর্ট পেশ করে এব্যাপারে দক্ষিণ পশ্চিম রেলকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার সুপারিশ করেছে ক্যাগ। বিষয়টি নিয়ে সাধারণ রেলযাত্রীদের মধ্যে যথেষ্টই আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে। কলকাতাগামী একাধিক ট্রেনের পরিচালনভার রয়েছে দক্ষিণ-পশ্চিম রেলের হাতে। এই জোনের আওতায় রয়েছে বেঙ্গালুরু, হুবলি এবং মাইসোর রেলওয়ে শাখা। বেঙ্গালুরু এবং মাইসোর থেকে নিয়মিতভাবে একাধিক ট্রেন হাওড়া ও শালিমারের উদ্দেশে ছাড়ে। এইসব ট্রেনের তালিকায় রয়েছে দুরন্ত এক্সপ্রেসও। ফলে এই জোনে প্রতি বছর হাজার হাজার সিগন্যাল বিভ্রাটের ঘটনায় সঙ্গত কারণেই সিঁদুরে মেঘ দেখতে পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল। 

    সংশ্লিষ্ট রিপোর্টে ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ থেকে ২০২২-২৩ আর্থিক বছর পর্যন্ত সময়সীমার কথা উল্লেখ করেছে ক্যাগ। তারা জানিয়েছে, এই পাঁচ আর্থিক বছরে দক্ষিণ-পশ্চিম রেলে সবমিলিয়ে ১৪ হাজার ৮০৮টি সিগন্যাল ফেলিওর কিংবা বিভ্রাটের ঘটনা ঘটেছে। অর্থাৎ প্রতি বছর গড়ে অন্তত ২ হাজার ৯৬১টি সিগন্যালিং ব্যবস্থায় গলদের ঘটনা সামনে এসেছে। ক্যাগ জানিয়েছে, এর মধ্যে ৮ হাজার ৫৪৭টি ক্ষেত্রেই সরাসরি দায় রয়েছে রেলের সিগন্যালিং এবং টেলিকম বিভাগের। বাকি ৬ হাজার ২৬১টি ক্ষেত্রে জড়িয়ে রয়েছে রেলের ইঞ্জিনিয়ারিং, অপারেটিং, ইলেক্ট্রিক্যালের মতো একাধিক দপ্তর। 

    এও দেখা যাচ্ছে, উল্লিখিত পাঁচ আর্থিক বছরের মধ্যে সবথেকে বেশি সিগন্যাল বিভ্রাট ঘটেছে ২০১৯-২০ অর্থবর্ষে, ৩ হাজার ৯৪১টি। ২০২০-২১ থেকে ২০২১-২২ অর্থবর্ষে এই গোলযোগের সংখ্যা এক লাফে অনেকটাই বৃদ্ধি পেয়েছে। ২ হাজার ৫৩৭টি থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে ২ হাজার ৮৩৪টি। ক্যাগ তার সুপারিশে স্পষ্টই বলেছে, যে পদ্ধতিতে সিগন্যালিং ব্যবস্থার রক্ষণাবেক্ষণ হচ্ছে, সেই প্রক্রিয়া আরও জোরদার করা প্রয়োজন। এমনিতেই শীতের মরশুমে ঘন কুয়াশায় প্রাণ হাতে নিয়েই চলাফেরা করতে হয় রেলযাত্রীদের। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ‘ফগ ডিভাইস’ কেনা হলেও, তা সেভাবে কার্যকরই হয় না। এই পরিস্থিতিতে সিগন্যাল বিভ্রাট গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে উঠতে পারে। বিশেষজ্ঞ মহলের প্রশ্ন, একটি জোনেই যদি এই অবস্থা হয়, তাহলে বাকিগুলিতে কী পরিস্থিতি?
  • Link to this news (বর্তমান)