অবৈধভাবে বালি তোলার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতেই ভূমিদপ্তরে বিক্ষোভ ব্যবসায়ীদের, দক্ষিণ দিনাজপুরের নদীঘাটগুলি লিজ দেওয়ার দাবি
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, বালুরঘাট: বালি চুরির বিরুদ্ধে দক্ষিণ দিনাজপুরের অতিরিক্ত জেলাশাসকের অভিযানে ঘুম উড়েছে ব্যবসায়ীদের। বিপুল পরিমাণ টাকা জরিমানার প্রতিবাদে সরব বালুরঘাটের ট্রাক্টর মালিক ও বালি ব্যবসায়ীরা। শুক্রবার সকাল থেকে বিএলওআর অফিস ও জেলাশাসকের দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখালেন তাঁরা। বালি ব্যবসায়ী ও ট্রাক্টর মালিকদের দাবি, প্রশাসন বিনা কারণে জরিমানা করছে। তিনবছর আগেই নদীঘাটগুলির লিজের মেয়াদ শেষ হয়েছে। এরপরও আর লিজ দেওয়া হয়নি। ফলে বৈধভাবে বালি তোলা যাচ্ছে না।
ঘাট লিজ দেওয়ার দাবি তুলে অনির্দিষ্টকালের জন্য ট্রাক্টর চলাচল বন্ধ করে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। এদিন বালি ব্যবসায়ীদের একটি প্রতিনিধি দল জেলাশাসক বালা সুব্রহ্মণ্যম টির সঙ্গে দেখা করে। কিন্তু ডিএমের সঙ্গে দেখা করেও কোনও সুরাহা হয়নি। জেলা প্রশাসন অবৈধভাবে বালি তোলা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, দক্ষিণ দিনাজপুরের ৪১ টি নদীঘাট লিজ দেওয়ার জন্য নবান্নে চিঠি পাঠানো হয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক (ভূমি ও রাজস্ব) ইজাম আহমেদ বলেন, আত্রেয়ী নদীর একেবারে ব্রিজের কাছ থেকে বালি তোলা হচ্ছে। ব্রিজের ক্ষতি হলে তার দায় কে নেবে? বালি পাচারের বিরুদ্ধে লাগাতার অভিযান চলবে। জরিমানাও করা হয়েছে। আগামীতে বালি তোলা বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার বালুরঘাটের পাগলিগঞ্জ এলাকায় জেলা, মহকুমা ও ব্লক ভূমিদপ্তরের টিমকে নিয়ে হানা দেয় প্রশাসন। অভিযানে দশটি বালিবোঝাই নৌকা বাজেয়াপ্ত করে ভূমিদপ্তর। সেই সঙ্গে দুটি ট্রাক্টর আটক করে প্রশাসন। তবে জরিমানা করার সময় কেউ ওই নৌকাগুলির মালিক বলে পরিচয় দেননি। অতিরিক্ত জেলাশাসক বুলডোজার দিয়ে নৌকাগুলি ভেঙে ফেলার নির্দেশ দেওয়ার পরই বেরিয়ে আসেন নৌকার মালিকরা। সঙ্গে সঙ্গে বিপুল অঙ্কের জরিমানা করা হয়েছে নৌকা ও টাক্টরগুলির বিরুদ্ধে। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, সবমিলিয়ে মোট জরিমানা প্রায় ন’লক্ষ টাকা। জেলা প্রশাসন কড়া পদক্ষেপ নিতেই শুক্রবার সকাল থেকে বালুরঘাটের আটইর এলাকায় জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখান বালি ব্যবসায়ীরা। পরে বালুরঘাট বিএলআরও অফিস এবং পরে জেলা প্রশাসনিক ভবনের সামনে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা। অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে বালুরঘাট থানার আইসি সুমন্ত বিশ্বাসের নেতৃত্বে বিশাল পুলিশ বাহিনী মোতায়েন ছিল সেখানে। বালির প্রাক্তন লিজ হোল্ডার পরিমল সরকার, প্রসেনজিৎ মণ্ডলরা বলেন, বহুবছর বালির ঘাট লিজ দেয়নি প্রশাসন। জেলাজুড়ে এত নির্মাণকাজ হচ্ছে। আমরা কীভাবে বালি জোগান দেব? তাই বাধ্য হয়ে বালি তুলছি। প্রশাসন আমাদের লক্ষ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে। আমরা কোথায় যাব? প্রশাসন আমাদের ঘাট লিজ দিক, আমরা বৈধভাবে বালি তুলতে চাই।