নিজস্ব প্রতিনিধি, রানাঘাট: বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্ন অধরা। সামনেই বিধানসভা নির্বাচন। তার আগে চলছে এসআইআর প্রক্রিয়া। এই পরিস্থিতিতে আজ, শনিবার নদীয়ায় আসছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তাহেরপুর পুরসভা সংলগ্ন নেতাজি হাইস্কুলের মাঠে সকালে তিনি জনসভা করবেন। তার আগে একটি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। তবে নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলায় তাঁর এই জনসভা অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ এসআইআরে মতুয়া অধ্যুষিত এই এলাকার প্রচুর ভোটারের নাম বাদ গিয়েছে। ‘বেনাগরিক’ হওয়ার আশঙ্কা তাঁদের তাড়া করে বেড়াচ্ছে। তাঁদের আশ্বস্ত করতে নাগরিকত্ব নিয়ে প্রধানমন্ত্রী কী বার্তা দেন, সে দিকেই তাকিয়ে মতুয়া সমাজ।
বিধানসভা নির্বাচনের আগে স্বচ্ছ ভোটার তালিকা তৈরি করতে এসআইআর প্রক্রিয়া চলছে। বিভিন্ন সময় ধর্মীয় কারণে বাংলাদেশের ভিটেমাটি ছেড়ে চলে আসা মতুয়া-নমঃশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে এই রিভিশন এবং নাগরিকত্ব ইস্যুই মূল আলোচ্য বিষয়। স্বাভাবিকভাবেই মতুয়া অধ্যুষিত নদীয়া দক্ষিণে প্রধানমন্ত্রীর আসা ঘিরে প্রত্যাশার পারদ তুঙ্গে।
মতুয়া সমাজের একটা বড় অংশ চাইছে, জটিল নয়, নাগরিকত্ব প্রদানের শর্ত সরল করা হোক। কারণ, শুনানি পর্বের পর জেলায় বিরাট সংখ্যক মানুষের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতুয়ারাই। তাঁরাই নদীয়া দক্ষিণের ভোট নির্ণায়ক। তবে মতুয়া ছাড়াও তাহেরপুর রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটিই কার্যত রাজ্যে বামেদের শেষ দুর্গ। প্রধানমন্ত্রী নিজেও রানাঘাটে সভা করার জন্য মুখিয়ে রয়েছেন। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, ‘সকাল ১১টা ১৫ নাগাদ রানাঘাটে একটি সভায় অংশ নেব। সেখানে প্রায় ৩২০০ কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন বা শিলান্যাস করব। ’
প্রধানমন্ত্রী সকাল সাড়ে ১০টা নাগাদ তাহেরপুর থানা সংলগ্ন অস্থায়ী হেলিপ্যাড গ্রাউন্ডে এসে পৌঁছবেন। সেখান থেকে মূল সভামঞ্চের পাশেই তিনি প্রশাসনিক বৈঠক করবেন। তারপর মূল জনসভা। দুপুর ১টা নাগাদ সভা শেষ করে তাঁর রওনা হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী সভা ঘিরে তাহেরপুরজুড়ে আঁটোসাঁটো নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
নদীয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির মুখপাত্র সোমনাথ কর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সভায় লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে। রাজ্য তৃণমূলের অপশাসনের পতন ঘটাতে, তাহেরপুরের মাটি থেকেই মানুষ বুঝিয়ে দেবে, তারা বিজেপির সঙ্গে রয়েছে। তৃণমূলের পাল্টা দাবি, ওই সভা ফ্লপ হবে। রানাঘাট সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের সভাপতি দেবাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, ভোট আসছে। তাই ফের ভাঁওতার ঝুড়ি নিয়ে আসছেন মোদি। অনেক আশ্বাস দেবেন। কিন্তু মতুয়া-নমঃশূদ্ররা আর বিভ্রান্ত হবেন না।