লক্ষাধিক গ্রাহকের বিল বকেয়া, চাইতে গেলে বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের মারধর, গাড়ি ভাঙচুর, ঝাড়গ্রামে পুলিশের বিরুদ্ধে নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, ঝাড়গ্ৰাম: ঝাড়গ্রাম জেলার ১ লাখ ৩০ হাজার বাসিন্দার বিদ্যুতের বিল বাকি। একাধিক ব্যবসায়িক সংস্থা ও ব্যবসায়ীদের লক্ষ লক্ষ টাকার বিল বাকি। জেলা বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের ৯৩টি দল জেলাজুড়ে অভিযান চালাচ্ছে। ১৩ হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। যার জেরে বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের কর্মীদের গাড়ি ঘেরাও, ভাঙচুর চলছে। মারধরে জখম একাধিক কর্মী। থানায় অভিযোগ করা হয়েছে।
ঝাড়গ্রাম জেলা বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের রিজিওনাল ম্যানেজার বলেন, জেলাজুড়ে বিপুল সংখ্যক গ্ৰাহকের বিদ্যুতের বিল বাকি। গ্ৰামে গ্ৰামে গ্ৰাহকদের বকেয়া বিদ্যুত বিল মেটানোর জন্য বলা হচ্ছে। কিন্তু দপ্তরের কর্মীরা আক্রান্ত হচ্ছেন। থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্তু পুলিশকে এখনও পর্যন্ত পদক্ষেপ করতে দেখা যায়নি।
বিল অনাদায়ী থাকায় ঝাড়গ্রাম জেলার বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়ার মুখে। পাঁচ হাজার টাকার উপরে বিদ্যুতের বিল বাকি সত্তর হাজার বাসিন্দার। বড় ব্যবসায়ীরা সংস্থা নানা কৌশলে বিদ্যুতের বিল মেটাচ্ছেন না। জেলার বিভিন্ন প্রান্তে বিদ্যুতের বিল মেটানোর জন্য প্রচার করা হচ্ছে। বিপুল অঙ্কের বিদ্যুতের বিল না মেটায় বন্টন দপ্তরের মুখ থুবড়ে পড়ার জোগাড় হয়েছে। নিরুপায় হয়ে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিন্ন করতে হচ্ছে। যার জেরে কর্মীদের ক্ষোভের মুখে পড়তে হচ্ছে। বিভিন্ন গ্ৰামীণ এলাকায় বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ বাড়ছে। গাড়ি ভাঙচুর করা হচ্ছে। গাড়ি সহ কর্মীদের পুড়িয়ে মারার হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিনপুর-১ ব্লকে ১৮ নভেম্বর বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের গাড়ি ভাঙচুর হয়। বেলপাহাড়ী এলাকায় দুষ্কৃতীদের মারে দপ্তরের ৫ কর্মী গুরতর জখম হন। নয়াগ্ৰাম ব্লকে দুষ্কৃতীরা বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মী সহ গাড়ি পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরে তরফে জেলার একাধিক থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। অথচ দুষ্কৃতীরা প্রকাশ্যে বুক ফুলিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে। দপ্তরের অভিযোগ, গ্ৰামবাসীদের বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীদের বিরুদ্ধে লাগাতার উসকানি দেওয়া হচ্ছে। জেলা বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের আধিকারিকরা পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। জেলার ১৬ হাজার বাসিন্দা খুশির আলো প্রকল্পের সুযোগ পাচ্ছেন। দীর্ঘদিন যাদের বিদ্যুৎ বিল বাকি আছে, তাদের কিস্তিতে টাকা মিটিয়ে দিতে বলা হচ্ছে। দপ্তরের তরফে একজন গ্ৰাহককে ২৪টা কিস্তিতে টাকা শোধ করার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে। জেলার আর্থিক ভাবে দুর্বল পরিবারের সদস্যদের জন্য বিদ্যুতের বিল মকুব করার বন্দোবস্ত রয়েছে। বেশিরভাগ গ্ৰাহক বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু কিছু দুষ্কৃতী বিদ্যুৎ দপ্তরের গাড়ি ভাঙচুর করছে, কর্মীদের মারধর করছে। বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরের কর্তাদের বক্তব্য, বিদ্যুৎ বন্টন দপ্তরকেও বিদ্যুৎ কিনতে হয়। গ্ৰাহকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিলের টাকা না পেলে বিদ্যুৎ কেনার টাকা শোধ করাই যাবে না। বাজার থেকে তখন ঋণ করা ছাড়া পথ থাকবে না। চক্রাকারে এমন চলতে থাকলে সরকারি বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। গ্ৰাহকরাই তাতে সবচেয়ে সমস্যার মুখে পড়বেন। বেলপাহড়ী থানার পক্ষ থেকে বলা হয়, থানায় অভিযোগ হয়েছে। নিয়ম মেনে পদক্ষেপ করা হবে।