• জাভার গণ্ডার সুন্দরবনে! প্রাচীন চোয়াল  দেখে বিস্মিত জার্মানির গবেষক দম্পতি
    বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সৌম্যজিৎ সাহা, দক্ষিণ ২৪ পরগনা: জাভান গণ্ডার। একসময় সুন্দরবনে দেখা যেত। শতাধিক বছর আগে এখান থেকে এই বিশেষ প্রজাতির প্রাণীটি বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছে। গবেষকদের দাবি, এরা এখন শুধুমাত্র ইন্দোনেশিয়ার জাভা অঞ্চলেই কিছু আছে। কিন্তু সুন্দরবনের সেই বিলুপ্তপ্রায় গণ্ডারের চোয়ালের উপরের অংশ (আপার জ) সংরক্ষিত রয়েছে জুলজিক্যাল সার্ভে অব ইন্ডিয়ার ক্যানিং আঞ্চলিক অফিসে। সেই খবর পেয়ে বুধবার সুদূর জার্মানি থেকে এলেন গারট্রুড ডেনজাউ ও হেলমুট ডেনজাউ নামে এক স্বাধীন গবেষক দম্পতি। সুন্দরবনে যে একসময় এই জাভান গণ্ডার থাকত, সেই তথ্য জেনে তাঁরা বিস্মিত। সেই প্রাণীর অবশিষ্টাংশ সংরক্ষিত আছে খবর পেয়ে সেটা দেখতেই এসেছেন তাঁরা। সুন্দরবন নিয়ে কাজ করার অভিজ্ঞতা আছে তাঁদের। তাঁদের কিছু বিখ্যাত গবেষণাপত্রের মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশের সুন্দরবনে বাঘ-মানুষের সংঘাত, আফ্রিকার জংলি গাধাদের সংরক্ষণ প্রভৃতি।এছাড়াও দু’জনের বিভিন্ন গবেষণাপত্র প্রকাশিত হয়েছে একাধিক নামী জার্নালে। গণ্ডারের চোয়ালের ওই অংশের বয়স প্রায় ১৫০ বছর। তথ্য বলছে, এটি ১৮৭৫ সালে সুন্দরবনের মাথাভাঙা এলাকা থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। ভারতীয় জাদুঘর সেটা প্রথম সংরক্ষণ করে। পরে প্রদর্শন করার জন্য দেওয়া হয় জেডএসআইয়ের কলকাতার সদর দপ্তরে। কয়েকবছর আগে তাদের সংস্থার ক্যানিং মিউজিয়ামে সেটি আনা হয়। ওই গবেষক দম্পতি ক্যানিং এসে এই বিরল ও দুষ্প্রাপ্য নিদর্শন চাক্ষুষ করে বেশ উচ্ছ্বসিত। জেডএসআইয়ের ক্যানিং আঞ্চলিক অফিসের গবেষকদের সঙ্গে এই বিষয়ে ডেনজাউ দম্পতি কথা বলেন। তবে শুধুই সেটা দেখার জন্য আসা, নাকি অন্যকোনও গবেষণা করারও ইচ্ছে তাঁদের রয়েছে, সেটা অবশ্য খোলসা করেননি এই দম্পতি। জাভান গণ্ডার তো বটেই, ওই মিউজিয়ামে রাখা একটি বুনো মোষের বিশালাকার সিং-সহ মাথার খুলি দেখেও অবাক হন তাঁরা। সেই প্রাণীও যে সুন্দরবনে পাওয়া যেত একসময়! এই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যও জানানো হয় বিদেশি গবেষকদের। জেডএসআইয়ের ক্যানিং আঞ্চলিক অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক ওয়াই এস যোগেশ কুমার বলেন, ‘দু’জন জার্মান গবেষক এসেছিলেন। তাঁরা কোথাও শুনেছিলেন যে এখানে ওই গণ্ডারের একটি অংশ সংরক্ষিত রয়েছে। সেটা দেখে অনেক ছবি তুলেছেন তাঁরা। পুরো মিউজিয়ামই তাঁরা ঘুরে দেখেছেন। চলে গিয়েছেন তারপর।’-নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)