কমিশনের নির্দেশে অবিলম্বে আপলোড, ৩০ লক্ষ আনম্যাপড, শুনানির আগেই নথি সংগ্রহ বিএলওদের
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: খসড়া তালিকা প্রকাশের পর শুক্রবার শুনানির নোটিশ পাঠাতে শুরু করল কমিশন। ঘোষণা মতো, ২৩ ডিসেম্বর থেকে জেলায় জেলায় শুনানি শুরু হওয়ার কথা। যদিও কমিশন সূত্রে খবর, বড়দিনের পরেই তা শুরু হবে। আর ঠিক তার আগে শুনানির জন্য ডাক পাচ্ছেন এমন ভোটারদের জন্য কিছুটা হলেও স্বস্তির খবর। কারণ, এখনই যদি বুথ লেভেল অফিসার মারফত কমিশন নির্ধারিত ১৩টি নথির একটি জমা দেওয়া যায়, তাহলে ছাড় মিলবে শুনানি থেকে। ইতিমধ্যে প্রক্রিয়া শুরুও হয়ে গিয়েছে।
খসড়া তালিকা অনুযায়ী রাজ্যে প্রায় ৩০ লক্ষ আনম্যাপড ভোটার রয়েছেন। তাঁদের নিজের বা আত্মীয়ের, কারও নামই ২০০২ সালের তালিকায় নেই। এইসব ভোটারের শুনানির সম্মুখীন হয়ে নথি পেশ করার কথা। কিন্তু তাঁদের যাতে শুনানির মুখে পড়তে না হয়, সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ করল কমিশন। শুক্রবার বুথ ধরে ধরে এই আনম্যাপড ভোটারদের তালিকা বিএলওদের পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এবং নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, তালিকা অনুযায়ী আনম্যাপড ভোটারদের থেকে ১৩টি গ্রহণযোগ্য নথির একটি সংগ্রহ করে অ্যাপের মাধ্যমে তা আপলোড করতে হবে। ওই নথি খতিয়ে দেখবেন ইআরও। যদি নথি গ্রহণযোগ্য হয়, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আন্যমাপড ভোটারকে আর শুনানির সম্মুখীন হতে হবে না। কমিশনের এক আধিকারিকের কথায়, ‘শুনানিতে যে নথি পেশ করতে হবে, তা যদি আগেই তাঁরা বিএলও মারফত দিয়ে থাকেন, সেক্ষেত্রে ভোটারদের হয়রানি কম হবে। সেই কারণেই এমন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে।’
শুক্রবারই বিএলওদের কাছে আনম্যাপড ভোটারদের তালিকার একটি এক্সেল শিট এসেছে। এরপরই কাজ শুরু করে দিয়েছেন তাঁরা। ভোটারদের ফোন করে নথি জমা দিতে বলছেন। কেউ আবার একেবারে ক্যাম্প করে নথি নিয়ে আসার অনুরোধ করছেন। আর ভোটাররাও নিজের নামটি তালিকায় দেখার জন্য সেসব নিয়ে হাজির হচ্ছেন। এক বিএলওর কথায়, ‘আমাদের এখন এক্সেল শিট পূরণ করে জমা দিতে হবে। অনেকেই নথি নিয়ে এসে জিজ্ঞেস করছেন, তাহলে কি এটাই শুনানি হয়ে গেল? আর হিয়ারিংয়ে যেতে হবে না?’ বিএলওরা বোঝাচ্ছেন, পরবর্তী ধাপ তাঁদের জানানো হবে। যদিও অনেক ভোটারের বক্তব্য, তাঁরা ফোনে শুনানির বার্তা পেয়েছেন। এদিকে আরও জানা যাচ্ছে, শুনানি পর্বের তদারকি করবেন কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকরাই। এদিন সকালে সেই সংক্রান্ত নির্দেশিকা পাঠিয়েছে কমিশন। কেন্দ্রীয় সরকারি আধিকারিকদের বিভিন্ন শুনানি কেন্দ্রে মাইক্রো অবজার্ভার হিসেবে নিয়োগ করা হবে। দায়িত্ব পাবেন মূলত কেন্দ্রের গ্রুপ বি বা ঊর্ধ্বতন আধিকারিকরা। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের আধিকারিকদেরও যনিয়োগ করা হতে পারে। শুনানি পর্বে ইআরও-এইআরওদের কাজে নজরদারি করবেন মাইক্রো অবজার্ভাররা। ত্রুটিমুক্ত ভোটার তালিকা তৈরি এবং সংশোধনে তাঁরা সহযোগিতা করবেন। তাঁদের প্রশিক্ষণও দেবে সিইও দপ্তর। ইনিউমারেশন ফর্ম, ভোটারদের জন্ম ও মৃত্যুর শংসাপত্র এবং শুনানিতে আসা ভোটাদের নথি যাচাই করবেন মাইক্রো অবজার্ভাররাই। পাশাপাশি ভোটার তালিকার অসংগতি চিহ্নিত করার দায়িত্বও থাকবে তাঁদের উপর। গত ১২ ডিসেম্বর মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগ করতে চেয়ে কমিশনকে চিঠি দিয়েছিল রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিকের দপ্তর। এদিন সেই চিঠির জবাব দিয়েছে কমিশন। শুনানি পর্বে নজরদারির জন্য মাইক্রো অবজার্ভাররা ৩০ হাজার টাকা সাম্মানিক পাবেন।