• কয়েকটি ডিভিশনে টাকা উদ্ধারের হার কম, কারণ খুঁজতে বলল লালবাজার
    বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সুজিত ভৌমিক, কলকাতা: মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে পুলিশ কমিশনার বারবার সরব হলেও কলকাতায় এখনও সাইবার জালিয়াতিতে খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারের হার তেমন আশাপ্রদ নয়। চলতি মাসের গোড়ায় লালবাজারে সাইবার জালিয়াতি সংক্রান্ত এক বৈঠকে এই অভিযোগ করেন কলকাতা পুলিশের অ্যাডিশনাল সিপি-২ প্রণব কুমার। তাঁর সাফ কথা, এখন থেকে সাইবার জালিয়াতির অভিযোগকে ‘ইমার্জেন্সি’ হিসেবে গণ্য করতে হবে। 

    উল্লেখ্য, একটা সময় ছিল যখন, কলকাতা পুলিশ এলাকায় সাইবার জালিয়াতিতে খোয়া যাওয়া টাকা উদ্ধারের হার ছিল মেরেকেটে ১০ শতাংশ। এ নিয়ে মাসিক ক্রাইম কনফারেন্সে বারে বারে সরব হন সিপি মনোজ ভার্মা। চলতি মাসের প্রথম ১০ দিনের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ওই গড় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২০ শতাংশের মতো।

    নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কলকাতা পুলিশের এক অফিসার বলেছেন, ‘এখনও কলকাতা পুলিশের কয়েকটি ডিভিশনে সাইবার জালিয়াতির টাকা উদ্ধারের হার তুলনামূলকভাবে অনেক কম। কেন কম, অসুবিধা কোথায়, তা খুঁজে বের করতে হবে। ক্ষতিগ্রস্তদের সমস্যার যতটা সম্ভব সুরাহা করতে হবে। টাকা উদ্ধারে গতি আনা, দ্রুত কোর্ট অর্ডার বের করার পাশাপাশি তা কার্যকর করতে হবে।’

    কলকাতা পুলিশের এই বৈঠকে অ্যাডিশনাল সিপি-২ ছাড়াও ডিসি (সাইবার) অভিষেক মোদি, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (সাইবার) কুণাল জৈন সহ কলকাতা পুলিশের সব ডিভিশনের সাইবার সেলের ওসি এবং সাইবার ফ্রড রিকভারি সেলের ওসি সহ সব ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার (নোডাল) উপস্থিত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। বৈঠকে কলকাতার সাউথ ওয়েস্ট ডিভিশনের সাইবার সেলের পক্ষ থেকে প্রাইভেট স্মল ফিনান্স ব্যাংকের বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের অভিযোগ, এই ব্যাংকগুলি ন্যাশনাল সাইবার ক্রাইম পোর্টালে তথ্য নথিভুক্ত করতে ৫-৬ দিন সময় নিচ্ছে। ফলে বিপাকে পড়ছেন তদন্তকারীরা। এদিকে, সাইবার জালিয়াতিতে টাকা খোয়ানো ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ‘টাকা ফেরানোর ক্ষেত্রে বেশ কিছু ব্যাংকের ম্যানেজার আদালতের নির্দেশকে অগ্রাহ্য করছেন। জালিয়াতদের ভাড়া করা অ্যাকাউন্টে পর্যাপ্ত টাকা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের অসহযোগিতার ফলে টাকা ফেরত পাচ্ছেন না ক্ষতিগ্রস্তরা।’ আদালতের নির্দেশ অমান্যকারী ব্যাংক অফিসারদের একাংশের বিরুদ্ধে কড়া আইনি পদক্ষেপ করার কথা লালবাজারের ভাবনাচিন্তা করা উচিত বলে মনে করছে পুলিশেরই একটি মহল। লালবাজারের শীর্ষকর্তারা কলকাতা পুলিশের সাইবার সেলের সঙ্গে যুক্ত অফিসারদের এক নির্দেশে বলেছেন, ‘সাইবার জালিয়াতিতে ক্ষতিগ্রস্তরা অভিযোগ জানাতে এলে, তাঁদের অযথা ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না বা হয়রানি করা যাবে না।’
  • Link to this news (বর্তমান)