অনলাইন লোটো আর সাট্টা থেকে রাজ্যে দৈনিক লুট দেড়শো কোটি! তদন্ত করে বিস্মিত ডিইও
বর্তমান | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: অনলাইন লোটো ও সাট্টার বেআইনি কারবার থেকে প্রতিদিন উঠছে বা লুট হচ্ছে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা। বিপুল পরিমাণ লাভ থাকায় ছোট-মাঝারি ব্যবসায়ীদের অনেকেই বৈধ কারবারের পাশাপাশি অ্যাপ তৈরি করে এই অবৈধ কারবারও খুলে বসেছে। এই ব্যবসা ছড়িয়ে পড়েছে জেলার বিভিন্ন প্রান্তে। নিষিদ্ধ এই কারবারের তদন্তে নেমে এমনই তথ্য পেয়েছেন ডিরেক্টরেট অব ইকনমিক অফেন্সেসের (ডিইও) গোয়েন্দারা।
অনলাইন লটারি ও সাট্টা চালানোর জন্য বেলুড়ের যে ব্যবসায়ী অ্যাপ এবং ওয়েবসাইট তৈরি করত তাকে জেরা করেছেন তদন্তকারীরা। ওই ব্যবসায়ী তাঁদের জানিয়েছে,কলকাতার পাশাপাশি সমস্ত জেলা থেকেই তার কাছে অর্ডার আসত। এমনকি রাজস্থান, উত্তরপ্রদেশসহ বিভিন্ন রাজ্যের অনেকেই তার সঙ্গে যোগাযোগ করত। টাকার বিনিময়ে সে অ্যাপ বা ওয়েবসাইট তৈরি করে দিয়েছে। তার কাছ থেকে নামের তালিকা পেয়েছেন অফিসাররা।
সেসব বিশ্লেষণ করতে গিয়ে ডিইও’র গোয়েন্দারা জেনেছেন, সবচেয়ে বেশি অর্ডার এসেছে জেলাগুলি থেকেই। দুই মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়াসহ বিভিন্ন জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে এই বেআইনি কারবার। ঘণ্টায় ঘণ্টায় এই খেলা চলছে। বিপুল পরিমাণ নগদ অর্থ আসায় ছোট-মাঝারি ব্যবাসায়ীদের একাংশ এই অবৈধ কারবারে নেমেছে বলে ওই তালিকা থেকে জানতে পারছেন তদন্তকারীরা। এর জন্য বিভিন্ন কোম্পানি খোলা হয়েছে। আম জনতা অনলাইনে লোটো বা সাট্টা
খেলার জন্য যে পেমেন্ট করছে তা জমা পড়ছে কোম্পানির নামে খোলা অ্যাকাউন্টে। সেখান থেকে এই সমস্ত ব্যবসায়ীদের ব্যক্তিগত অ্যাকাউন্টে টাকা ট্রান্সফার হচ্ছে।
ডিইও’র অফিসাররা এই ধরনের একাধিক কোম্পানির হদিশ পেয়েছেন। সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অ্যাকাউন্টের লেনদেন বিশ্লেষণ করতে গিয়ে তাঁরা জেনেছেন, প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ টাকা এক একটি কাউন্টার থেকে আসছে। কোথাও এর পরিমাণ ৫ লক্ষ আবার কোথাও দশ লক্ষ। বিভিন্ন কোম্পানিতে জমা পড়া টাকার হিসেব কষে তাঁরা জেনেছেন, লেনদেনের পরিমাণ প্রতিদিন প্রায় দেড়শো কোটি টাকা। এ দেখে বস্তুত তাজ্জব তাঁরা। এই অ্যাকাউন্টগুলি বন্ধ করার জন্য ব্যাংকগুলিকে চিঠি পাঠিয়েছে তদন্তকারী সংস্থা। পাশাপাশি সেখানে জমা টাকা ফ্রিজও করা হচ্ছে। এমনকি অবৈধ কারবারের টাকায় কেনা সম্পত্তি অ্যাটচমেন্টের প্রক্রিয়াও শুরু হচ্ছে।