• ভাজাভুজি থেকে পাঁঠার মাংসে বন্দে ভারতের 'বং কানেকশন'
    এই সময় | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • বিশ্বদেব ভট্টাচার্য, আসানসোল

    বাঙালির পছন্দের পদে সাজছে বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের মেনু। এ বার লাঞ্চ বা ডিনারে মিলবে আলু-পটল ভাজা, আলু-ফুলকপির তরকারি। নন-ভেজে মুরগির মাংসের পাতলা ঝোল, পাঁঠার কষা মাংসও থাকছে। সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার এই মর্মে একটি নোটিস জারি করেছে রেল বোর্ড।

    ১ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে পারে এই পরিষেবা। আইআরসিটিসি-র (ইন্ডিয়ান রেলওয়ে ক্যাটারিং অ্যান্ড ট্যুরিজম কর্পোরেশন লিমিটেড) উপদেষ্টা এবং ভারতীয় রেলের জনসংযোগ দপ্তরের অবসরপ্রাপ্ত ডেপুটি ডিরেক্টর প্রসেনজিৎ পট্টনায়ক জানান, শুধু বাংলা নয়, বিহার ও ওডিশাবাসীদের কথা ভেবে সে সব রাজ্য থেকে ছাড়া বন্দে ভারতের খাবারের মেনুতেও বৈচিত্র আনছে রেল। তিনি বলেন, 'দূরপাল্লার ট্রেনে আঞ্চলিক খাবার সরবরাহের বিষয়টি নিয়ে গুরুত্ব দিয়েছেন রেলমন্ত্রী তাশিনী বৈম্ভর।

    তবে এই নতুন পরিষেবা ঠিক কবে থেকে চালু হবে তার নির্দিষ্ট অর্ডার আইআরসিটিসি-র হাতে শুক্রবার পর্যন্ত আসেনি। নতুন বছরের প্রথমেই এই পরিষেবার সুবিধা পেতে পারেন বাংলা, বিহার ও ওডিশার রেলযাত্রীরা।' রেলের এই মেনু 'লোকালাইজেশন' অনেকটা 'যস্মিন দেশে যদাচার'-এর মতো। জানা গিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গে হাওড়া থেকে নিউ জলপাইগুড়ি রুটে যে বন্দে ভারত চলে তাতে আলু-পটল ভাজা, মুরগির মাংসের পাতলা ঝোলের সঙ্গে অন্য খাবার থাকছে। বিকল্প হিসেবে থাকছে পাঁঠার কষা মাংস। আবার হাওড়া-পুরী রুটের বন্দে ভারতের ক্ষেত্রে আলু-পটল ভাজার সঙ্গে আলু-ফুলকপির তরকারি থাকছে।

    হাওড়া-রাউলকেল্লা 'বন্দে ভারত'-এ এ সবের সঙ্গে মেনুতে যোগ হচ্ছে পনির। বিহার থেকে যে 'বন্দে ভারত' হাওড়ায় আসে সেখানে পাতে পড়বে বিহার-স্পেশাল চম্পারণ চিকেন। অতএব, বাংলার সঙ্গে যে রাজ্যগুলি সরাসরি যুক্ত, সেখানে বসবাসকারী বাঙালিরা যেমন নিজেদের রাজ্যে বসেই প্রিয় খাবার পাবেন, তেমনই ওডিশা বা বিহার থেকে বাংলায় যাতায়াতের সময়েও ট্রেনে মিলবে বাঙালির পছন্দের মেনু। এ প্রসঙ্গে রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় ও বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায় দু'জনেই মত প্রকাশ করে বলেন, 'বাংলায় সামনে ভোট। সেই বিষয়টিকে মাথায় রেখেই হয়তো বাঙালি খাবারের উপর বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে কেন্দ্রের রেল।' তবে পূর্ব রেলের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, বিষয়টি শুধুমাত্র বাংলাকেন্দ্রিক নয়।

    রেলমন্ত্রী ইতিমধ্যেই ঘোষণা করেছেন, প্রতিটি রাজ্যের নিজস্ব খাবারের মেনু ধাপে ধাপে সংশ্লিষ্ট রাজ্যে চলা বন্দে ভারত ও অন্য এক্সপ্রেস ট্রেনে চালু করা হবে। আইআরসিটিসি-র এক আধিকারিকও জানান, এর সঙ্গে বাংলার ভোটের কোনও সম্পর্ক নেই। যাত্রীদের চাহিদা ও নিজেদের অঞ্চলের খাবারের প্রতি আগ্রহ বিবেচনা করেই রেলমন্ত্রক এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে তাঁর দাবি। 'বন্দে ভারত'-এ নিয়মিত যাতায়াতকারী ভারতীয় বায়ুসেনার অবসরপ্রাপ্ত কর্মী দুর্গাশঙ্কর চট্টোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, 'এখন যে চিকেন কারি দেওয়া হয়, তাতে ভাত মেখে খাওয়ার মতো ঝোল থাকে না। তাই চিকেনের পাতলা ঝোল হলেই ভালো হয়।' তাঁর কথায়, 'আলু বা পটলের মতো কোনও ভাজা বা তরকারি থাকলে বাঙালিদের কাছে তা আরও প্রিয় হবে।'

  • Link to this news (এই সময়)