• 'আমরা হিন্দু তো! ভীষণ আতঙ্কে রয়েছি', ফুলবাড়ি সীমান্ত দিয়ে ফেরার পথে আতঙ্কিত বাংলাদেশি নাগরিক
    ২৪ ঘন্টা | ২০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নারায়ণ সিংহরায়: বাংলাদেশে ভারত বিরোধী ছাত্রনেতা শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যু ও শেষযাত্রকে ঘিরে তীব্র উত্তেজনা এখন বাংলাদেশে। সেই উত্তেজনা বিভিন্ন জেলাতেও ছড়িয়েছে। নিজেদের রাজনৈতিক ডামাডোল এখন ভারত বিরোধিতা দিয়ে বেরিয়ে আসছে। এর মধ্যেই ভারত থেকে বাংলাদেশে যেসব বাংলাদেশি ফিরছেন তাদের চিন্তার অন্ত নেই। বিশেষকরে বাংলাদেশে যারা সংখ্যালঘু, তারা আরও বিপন্ন বোধ করেছেন। সেই ছবি দেখা গেল শিলিগুড়ির ভারত-বাংলাদেশ ফুলবাড়ি সীমান্তে।

    বাংলাদেশে টানা তিন দিন ধরে গন্ডগোলের আবহে দেশের বিভিন্ন জেলার সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে বিএসএফ। সীমান্তজুড়ে কড়া নজরদারি চললেও শিলিগুড়ি লাগোয়া ফুলবাড়ি ইন্দো-বাংলা সীমান্তে দেখা গেল সম্পূর্ণ ভিন্ন চিত্র। প্রতিদিনের মতোই এই সীমান্তে নজরদারি স্বাভাবিক রয়েছে এবং এপার-ওপারের মধ্যে পণ্যবাহী গাড়ির চলাচলও নির্বিঘ্নে চলছে। এখনো পর্যন্ত এই এলাকায় কোনও অশান্তির খবর পাওয়া যায়নি।

    এদিকে, সীমান্তে যাতায়াতকারী সাধারণ মানুষের মধ্যে স্পষ্ট আতঙ্কের ছাপ। ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরার পথে এক বাংলাদেশি নাগরিক পরিতোষ সরকার জানান, “ভীষণ আতঙ্কে রয়েছি আমরা। আমরা হিন্দু—নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে। চিকিৎসার জন্য পরিবার নিয়ে চেন্নাই গিয়েছিলাম, এখন দেশে ফিরছি। রাস্তায় রাস্তায় আগুন, বিক্ষোভ চলছে। এভাবে কি ওখানে থাকা যাবে। সরকার কী ব্যবস্থা নেয়, সেটার দিকেই তাকিয়ে আছি।”

    একইভাবে ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য নিয়ে যাওয়া এক ভারতীয় ট্রাকচালক জানান, ওপারে পরিস্থিতি নিয়ে নানা খবর শুনে আতঙ্কে রয়েছেন। তবু কাজের তাগিদে যেতে হচ্ছে বলে জানান তিনি। যদিও প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, সীমান্তে সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং নজরদারি আরও বাড়ানো হয়েছে। পরিস্থিতির উপর কড়া নজর রাখছে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলি।

    ইনকিলাব মঞ্চ-এর মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুর খবর দেশ পৌঁছাতেই গোটা দেশে ভংয়কর গন্ডগোলের সৃষ্টি হয়ে যায়। চারদিকে বিক্ষোভ, আগুন। ছাত্র ও সাধারণ মানুষ রাস্তায় নেমে পড়ে বিক্ষোভ করতে। ভারতীয় হাই-কমিশনে জঙ্গি হামলা করা হয়। ভারতের বিরুদ্ধে স্লোগান।

    গত ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পল্টন এলাকায় অটো রিকশায় যাওয়ার সময় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীরা তাঁকে মাথায় গুলি করে। গুলি বাঁদিকের কানের নীচে দিয়েঢুকে ডান দিক দিয়ে বের হয়ে যায়। গুরুতর অবস্থায় প্রথমে তাঁকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে পরে এভারকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হয়। এর পরে তাঁকে সিঙ্গাপুরে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৮ ডিসেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। আজ তার দাফন সম্পন্ন হল। 

  • Link to this news (২৪ ঘন্টা)