অভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, কাটোয়া
অগ্রদ্বীপ-নতুনগ্রামের কাঠ শিল্পীদের তৈরি কাঠের পুতুল বা পেঁচার কদর আগে থেকেই ছিল। এ বার চাহিদা বাড়ছে অগ্রদ্বীপের নিজস্ব ঘরানায় তৈরি কাঠের আসবাবেরও। কাঠের পেঁচা বা পুতুলের নকশা খোদাই করে তৈরি এই সব আসবাব মন জয় করছে সৌখিন মানুষদের। দাম দিয়েই সে সব কিনে ঘর সাজাচ্ছেন তাঁরা।
বিশেষত কলকাতা বা শহরতলির মানুষ বেশি পছন্দ করছেন এই আসবাব। পছন্দ মতো আসবাব তৈরির বরাতও আসছে শিল্পীদের কাছে। তার পাশাপাশি হস্তশিল্প মেলাগুলিতে বিক্রির জন্যও শিল্পীরা নিজেদের মতো বানাচ্ছেন এই আসবাব। অগ্রদ্বীপের দারুশিল্পী অক্ষয় ভাস্কর দারুণ সাড়া পেয়েছেন এই আসবাব তৈরি করে।
বলছিলেন, 'কাঠের পুতুল বা পেঁচা আমাদের কাজের মূল ঐতিহ্য। আসবাবপত্র তৈরিতেও আমরা পুতুল ও পেঁচা ব্যবহার করছি। সাধারণ আসবাবের তুলনায় এগুলি একটু ভিন্ন ধরনের হওয়ায় অনেকে পছন্দ করছেন।কলকাতা-সহ বিভিন্ন শহর থেকে এই আসবাব তৈরির বরাত আসছে। মেলাতেও বিক্রি হচ্ছে।'
অগ্রদ্বীপের কাঠ শিল্পী অক্ষয়ের কাজের সুনাম আছে। তাঁর হাতে তৈরি কাঠের দুর্গা, গণেশ, আফ্রিকান ডল বা বিভিন্ন মডেল দেশ তো বটেই, দেশের বাইরেও বিক্রি হয়। আসবাবের কারুকার্যে অগ্রদ্বীপের দারুশিল্পের নিজস্ব সংস্কৃতি ব্যবহার করে অক্ষয় বিশেষ সাফল্য পেয়েছেন। চেয়ার তৈরি হলে তার পায়া বা হাতলে থাকছে পুতুল, পেঁচা ইত্যাদির খোদাই করা নকশা। একই ভাবে ড্রেসিং টেবল, আয়নার ফ্রেম বা সোফাতেও নানা ধরনের পুতুল ও পেঁচা দিয়ে কারুকাজ করা হচ্ছে। ঘর সাজানোর জন্য এই আসবাবগুলি আরও জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।
জানা গিয়েছে, নতুন আঙ্গিকে তৈরি একটি সোফা সেট বিক্রি হচ্ছে প্রায় ২৫-৩০ হাজার টাকায়। ডাইনিং টেবল ১৮ হাজার ও ড্রেসিং টেবল প্রায় ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টি-টেবল কিনতেও প্রায় ৮-১০ হাজার টাকা খরচ করছেন সৌখিন গৃহস্থরা।
অক্ষয় বলছিলেন, 'আমরা যা-ই তৈরি করি না কেন, এই এলাকার কাঠ শিল্পের যে সংস্কৃতি, সেটাও তার সঙ্গে জুড়ে দিতে চাই। আমাদের সেই ঐতিহ্য পেঁচা বা কাঠের পুতুলের কারুকার্য মানুষ পছন্দ করছেন। এতেই আমার উৎসাহী।'
আর এক শিল্পী শ্রীকান্ত ভাস্কর বলেন, 'চিরাচরিত কাজের বাইরে এ সব কাজের কদর তৈরি হচ্ছে। মানুষ পছন্দ করছেন। আমরাও কিছু বেশি টাকা উপার্জন করতে পারছি।'