• চোখের সামনে থেকে ভ্যানিশ তাজমহল! দূষণ পরিস্থিতি ‘ভয়ানক’ রাজধানী দিল্লিতেও
    বর্তমান | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: মাঝে ২৫ বছরের ব্যবধান। ফের যেন একই ঘটনার ‘পুনরাবৃত্তি’ হল! ২০০০ সালের নভেম্বর মাসে খ্যাতনামা জাদুকর পিসি সরকার জুনিয়র ‘অদৃশ্য’ করেছিলেন তাজমহল। দীর্ঘ দু’দশক পরে শনিবার হাজার হাজার পর্যটকের সামনে থেকে একইভাবে ‘গায়েব’ হয়ে গেল বিশ্বের সপ্তম আশ্চর্য। তবে এবার কোনও জাদুকরের হাতযশ নয়। শনিবার তাজমহল গায়েবের সৌজন্যে রয়েছে ঘন কুয়াশা এবং মাত্রাছাড়া দূষণ পরিস্থিতি। ২৫ বছর আগে জাদুকর সরকার জুনিয়র তাজমহল ‘অদৃশ্য’ করেছিলেন আগ্রার কাচপুরা থেকে। সেখান থেকে তাজমহলের দূরত্ব ছিল মেরেকেটে কয়েকশো মিটার। কিন্তু এদিন আগ্রায় তাজ ভিউ পয়েন্ট থেকেই সাধারণ মানুষের চোখের সামনে থেকে ‘হারিয়ে’ গেল এটি। তীব্র হতাশা এবং অসন্তোষে পর্যটকদের কটাক্ষ, এটি কি তাজমহল? নাকি ফগমহল? 

    শীতের মরশুমে ইতিমধ্যে দিল্লি, এনসিআর সহ তাবৎ উত্তর ভারতেই শুরু হয়েছে কুয়াশার দাপট। বিশেষত সকালে এক হাত দূরের জিনিসও স্পষ্ট দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। দিনে এবং রাতে লক্ষ্যণীয়ভাবে কমে যাচ্ছে দৃশ্যমানতা। সমস্যায় পড়ছেন বাইক এবং গাড়িচালকরা। কুয়াশার দাপটে মূলত উত্তর ভারতে রীতিমতো বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রেল এবং বিমান পরিষেবা। একের পর এক ট্রেন এবং বিমান বাতিল হচ্ছে। অথবা মাত্রাছাড়া দেরিতে চলছে। এই পরিস্থিতিতেই কার্যত গোদের উপর বিষফোঁড়ার মতো যোগ হয়েছে মাত্রাতিরিক্ত দূষণ। প্রধানত দিল্লি এবং সংলগ্ন এনসিআরের শহরগুলিই এর শিকার। অবশ্য ভয়াবহ দূষণ পরিস্থিতি থাবা বসাচ্ছে সারা দেশেই। 

    সরকারি সূত্রেই জানা যাচ্ছে, চলতি মাসে এখনও পর্যন্ত দিল্লি-এনসিআরের বাতাসে গড় একিউআই রয়েছে ‘গুরুতর’ সীমায়। অর্থাৎ, গড়ে দিল্লির বাতাসে এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স (একিউআই) প্রতিদিন পেরিয়েছে ৪০০য়ের গণ্ডি। স্বাভাবিকভাবেই এমন পরিসংখ্যানকে অত্যন্ত উদ্বেগজনক বলেই মনে করছে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ মহল। দিল্লি, এনসিআরে এই মুহূর্তে রোদের দেখা পাওয়া ভার। কারণ প্রতিদিনই শহর ঢেকে থাকছে পুরু ধোঁয়াশার চাদরে। শনিবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। এদিন রাত যত বেড়েছে, দূষণ পরিস্থিতি তত খারাপ হয়েছে। দৃশ্যমানতা কম থাকায়  দিল্লি বিমানবন্দর থেকে ১২৯টি উড়ান বাতিল করা হয়।

    কেন্দ্রীয় দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের (সিপিসিবি) তথ্য বলছে, শনিবার রাত ৮টায় আনন্দবিহার এলাকায় একিউআই সাড়ে ৪০০ পেরিয়ে গিয়েছে। মান দাঁড়িয়েছে ৪৬০। আইটিও এলাকায় একিউআই ৪২১। চাঁদনি চকের একিউআই ৪৬৭। পটপরগঞ্জে ৪২১। প্রতিটি ক্ষেত্রেই এই দূষণ সীমা ‘সিভিয়ার’। অর্থাৎ, গুরুতর কিংবা অত্যন্ত বিপজ্জনক।
  • Link to this news (বর্তমান)