সোহম কর, কলকাতা: বিধানসভা-লোকসভায় সিপিএম শূন্য। তবে সম্প্রতি গ্রামবাংলার একাধিক সমবায় নির্বাচনে লাল আবির উড়েছে। এই অবস্থায় সিপিএমের সাম্প্রতিক পার্টি চিঠিতে সমবায় আন্দোলন ও সমবায় ব্যাংকগুলি বাঁচাতে লড়াই-সংগ্রাম নিয়ে একগুচ্ছ নির্দেশ উঠে এল। আর তাতেই প্রশ্ন উঠছে, বিধানসভা নির্বাচনের আগে কি আলিমুদ্দিন তাদের পুরোনো শক্ত ঘাঁটিগুলি ফের চাঙ্গা করার চেষ্টায় নেমেছে? পার্টি চিঠিতে বাম আমলে তৈরি স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে ‘যোগাযোগের অভাব’ বা ‘বিচ্ছিনতা’র কথা কবুল করেছে সিপিএম নেতৃত্ব। সেই সঙ্গে দল সাফ জানিয়ে দিয়েছে, সমবায় নির্বাচনগুলিতে ‘নীতি বহির্ভূত’ কোনও জোট বরদাস্ত করা হবে না।
সমবায় আন্দোলন নিয়ে কী করণীয়? সেকথা বলতে গিয়ে পার্টি চিঠিতে লেখা হয়েছে, রাজ্যে ১১ লক্ষ ৯ হাজার ৮০৯টি স্বনির্ভর গোষ্ঠী রয়েছে। তার মধ্যে রয়েছেন ১ কোটি ১০ লক্ষ ৩২ হাজার ৬৪৬ মহিলা। এর বেশিরভাগই বামফ্রন্ট আমলে তৈরি। কিন্তু যোগাযোগের অভাব ও বিচ্ছিন্নতার কারণে শাসক দলগুলি নির্বাচন সহ নানাভাবে এঁদের ব্যবহার করছে। তাই এই গোষ্ঠীগুলোর বর্তমান অবস্থা ও কার্যকলাপ নিয়ে তথ্য সংগ্রহ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নিয়মিত যোগাযোগ রেখে আলোচনা চালিয়ে যেতে হবে। বলা হয়েছে, সমবায় নির্বাচনে ‘নীতি বহির্ভূত’ জোট গঠন করা যাবে না। সমবায়ের মধ্যে কর্মরত বামমনস্কদের তালিকা তৈরি করার নির্দেশিও দিয়েছে পার্টি। সিপিএমের রাজ্যের এক নেতার কথায়, ‘সমবায় নিয়ে আমরা এর আগেও বিভিন্ন নির্দেশ দিয়েছি। এটা সেই প্রক্রিয়ারই অংশ।’
সম্প্রতি হুগলির পাণ্ডুয়াতে বেশ কয়েক বছর বাদে সমবায় দখল করেছে সিপিএম সমর্থিত প্যানেল। তারপরেই এমন ‘পার্টি চিঠি’ তাত্পর্যপূর্ণ বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। কারণ, অনেক সমবায় নির্বাচনের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছে, বামেরা বিজেপি বা তৃণমূলের একাংশের সঙ্গে জোট করে ভোটে লড়ছে। এই ধরনের প্রবণতা ঠেকাতেই ‘নীতি বহির্ভূত’ জোট না করার বার্তা দেওয়া হয়েছে।