• স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু দুঃস্বপ্ন নয়, প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র কটাক্ষ চন্দ্রিমার
    বর্তমান | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: নদীয়ার তাহেরপুরে শনিবার ছিল প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির জনসভা। বিধানসভা নির্বাচনের কয়েক মাস আগে এই সভা থেকেই তিনি ভোট-প্রচারের দামামা বাজিয়ে দেবেন ভেবে উৎসাহে ফুটছিল গেরুয়া শিবির। যদিও শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে পৌঁছোতেই পারেনি। কলকাতা বিমানবন্দর থেকে অডিও-বার্তা দিয়েই ফিরে গিয়েছেন। তবে তার মধ্যেই তিনি বাংলার বর্তমান শাসক তৃণমূল ও প্রাক্তন শাসক বামেদের বিঁধতে ছাড়েননি। কড়া প্রতিক্রিয়া দিতে দেরি করেনি তৃণমূল এবং বাম শিবিরও। শনিবার দিনভর এসব নিয়েই সরগরম ছিল রাজ্যের রাজনৈতিক পরিসর।    

    তৃণমূলের তরফে এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে হাজির ছিলেন মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও রাজ্যসভার তৃণমূল সাংসদ মমতা ঠাকুর। চন্দ্রিমা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর যেখানে যাওয়ার কথা ছিল, সেখানে পৌঁছোতে পারেননি। আসলে বিধি বাম! নানা কারণ তাঁরা দর্শাচ্ছেন বটে, কিন্তু ঘটনা হল, তিনি পৌঁছোতে পারেননি। বাংলা ভাষা এখনও ওঁর রপ্ত হয়নি। বাঙালি শব্দটাই উচ্চারণ করতে পারেননি ঠিকঠাক। হঠাৎ মনে পড়ে গিয়েছে হরিচাঁদ-গুরুচাঁদ ঠাকুরের কথা। তাই বলছি, স্বপ্ন দেখা ভালো, কিন্তু দুঃস্বপ্ন ভালো নয়।’ চন্দ্রিমা আরও বলেন, ‘উনি বলেছেন, বাংলার মানুষকে যন্ত্রণা থেকে নিষ্কৃতি পেতে গেলে ওঁর দলকে ক্ষমতায় আনতে হবে। বাংলার মানুষ তো যন্ত্রণা পাচ্ছেই। কিন্তু সেটা আপনাদের জন্য। নির্বাচন কমিশনকে নিয়ে তো এত খেলা খেললেন। কতজন বাদ গেল? ৫৮ লক্ষ।’ মোদির তাহেরপুরে পৌঁছোতে না পারা নিয়ে তাঁর কটাক্ষ, ‘ভগবানের মার, দুনিয়ার বার। তাই চৈতন্যদেবের মাটি স্পর্শ করতে দিলেন না।’ ব্রাত্যবাবু বলেন, ‘রাজ্যে বিজেপি এলে কী হবে, এদিন সভায় আসার পথে তিন বিজেপি সমর্থকের মৃত্যু সেটাই দেখিয়ে দিল।  মৃত্যুর পরে রাজনীতি থাকে না। তাই দলের নির্দেশে আমাদের মুর্শিদাবাদের নেতারা মৃতদের বাড়িতে গিয়েছেন।’ আর মমতা ঠাকুর বলেন, ‘মতুয়ারা আশা করছিল, প্রধানমন্ত্রী আজ কিছু আশ্বাস দিয়ে যাবেন। খসড়া তালিকা থেকে যাঁদের নাম বাদ গিয়েছে, তাঁরা আশ্বস্ত হবেন। কিন্তু কিছুই বললেন না। বাধ্য হয়ে মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষ মোদিকে গো ব্যাক বলেছে। উনি আসলে মতুয়াগড়ে আগুন লাগানোর কাজ করে গেলেন।’ শান্তনু ঠাকুরের নাম না করে ব্রাত্যর প্রশ্ন, ‘এখনও ঠাকুরবাড়ির ওই ব্যক্তি কীভাবে মন্ত্রী আছেন?’ সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীও চাঁচাছোলা ভাষায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নস্যাৎ করতে চেয়েছেন। ত্রিপুরার উদাহরণ টেনে এদিন মোদি বলেন, ‘লাল ঝান্ডাওয়ালারা ৩০ বছর ধরে ত্রিপুরাকে ধ্বংস করেছিল। আমরা মানুষের স্বপ্ন অনুযায়ী ত্রিপুরাকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি।’ পালটা সুজন বলেন, ‘ওঁর ভাষণেই স্পষ্ট হল, বিজেপি এখন সিপিএমকে ভয় পাচ্ছে। কারণ, বিজেপি-তৃণমূলের বুকে কাঁপন ধরাতে মানুষ প্রস্তুত।’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘উনি আসলে আতঙ্কিত হয়ে আজ তাহেরপুরে গেলেন না। কারণ, যাঁরা গত লোকসভা ভোটে বিজেপির শান্তনু ঠাকুরকে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরা এবার ভোট কেন দিতে পারবেন না, এই প্রশ্নের উত্তর ওঁর কাছে নেই।’  
  • Link to this news (বর্তমান)