• নাম-পদবির ভুলে ২৫ লক্ষ সন্দেহজনক ভোটার, সংশোধনের দায়িত্ব বিএলওদেরই
    বর্তমান | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কলকাতা: গত ১৬ ডিসেম্বর প্রকাশিত হয়েছে খসড়া ভোটার তালিকা। সেই তালিকা অনুযায়ী, রাজ্যজুড়ে মোট ১ কোটি ৬৬ লক্ষ ‘সন্দেহভাজন’কে শুনানির সম্মুখীন হতে হবে। মাত্র এক-দেড়মাসে এত বিপুল সংখ্যক ‘সন্দেহজনক’ ভোটারের শুনানি কীভাবে হওয়া সম্ভব? এনিয়ে রীতিমতো জল্পনা তৈরি হয়েছিল বিভিন্ন মহলে। আর এ কারণেই শুনানির সংখ্যা কমাতে শনিবার পদক্ষেপ করল নির্বাচন কমিশন। খসড়া তালিকায় যে সমস্ত ভোটার বা তাঁদের আত্মীয় পরিজনের নাম-পদবি ভুল রয়েছে, তা এবার সংশোধন করতে হবে বুথ লেভেল অফিসারদের (বিএলও)। এধরনের ভোটাররা যদি বিএলওদের কাছে উপযুক্ত নথি দেন, তাঁদের আর কোনওরকম শুনানির সম্মুখীন হতে হবে না। 

    খসড়া তালিকা প্রকাশের পর দেখা যায়, প্রায় ২৫ লক্ষ ভোটারের নাম-পদবি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে কমিশনের। এই সমস্ত ভোটারদের বুথ ভিত্তিক তথ্য অ্যাপের মাধ্যমে ইতিমধ্যেই বিএলওদের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। এদিন বিএলও অ্যাপে জুড়েছে নতুন একটি ট্যাবও। সেটির সাহায্যে এধরনের ভোটারদের বিস্তারিত তথ্য পাঠানো হয়েছে। এবার তাঁদের কাছ থেকে উপযুক্ত নথি সংগ্রহ করে সেই ভুল সংশোধন করতে হবে বিএলওদের। সেই নথি আপলোডও করতে হবে অ্যাপের মাধ্যমে। এছাড়া সংশ্লিষ্ট ভোটারকে দিয়ে একটি ঘোষণাপত্র বা ডিক্লারেশন ফর্মে সই করিয়ে নিতে হবে। তাতে লেখা থাকবে, ‘জমা দেওয়া ওই নথি যথার্থ এবং সঠিক।’ জানা যাচ্ছে, এই সমস্ত ভোটারদের থেকে প্রাপ্ত নথি আপলোড করার পর তা খতিয়ে দেখবেন সংশ্লিষ্ট ইআরও। নথি গ্রহণযোগ্য মনে হলে সংশ্লিষ্ট ভোটারকে আর শুনানির সম্মুখীন হতে হবে না। 

    এমন নাম-পদবি সংশোধনের দায়িত্ব দেওয়ার পাশাপাশি ৩০ লক্ষ ‘আনম্যাপড’ ভোটারের (যাঁদের নিজেদের বা আত্মীয় কারও নামই ২০০২ সালের তালিকায় ছিল না) নথিও বিএলওদের সংগ্রহ করতে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। এমন ক্ষেত্রে কমিশন নির্ধারিত ১৩টি নথির মধ্যে একটি পেশ করা বাধ্যতামূলক। ইতিমধ্যেই এই ‘আনম্যাপড’ ভোটারদের নথিও সংগ্রহ করে অ্যাপের মাধ্যমে তা আপলোড করেছেন বিএলওরা। কমিশনের এক কর্তার কথায়, আনম্যাপড ভোটার বা যেসব ভোটারদের নাম-পদবি ভুল রয়েছে, তাঁদের কাছ থেকে প্রাপ্ত নথি সঠিক হলে আর শুনানির সম্মুখীন হতে হবে না। ফলে শুনানির সংখ্যা যেমন কমবে, তেমনি ভোটারদের হয়রানিও অনেক কম হবে। যে কারণে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। 

    শুনানি পর্যায়ে নজরদারির জন্য মাইক্রো অবজার্ভার নিয়োগ নিয়ে এদিন একাধিক কেন্দ্রীয় সরকারি সংস্থা ও ব্যাঙ্কের বিভাগীয় প্রধানদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিল কমিশন। কীভাবে অবজার্ভার নিয়োগ করা হবে এবং তাঁদের কী ধরনের কাজ করতে হবে, তা নিয়ে সেখানে বিশদ আলোচনা হয়েছে বলে খবর।
  • Link to this news (বর্তমান)