সঙ্গীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তীকে হেনস্থার ঘটনায় অভিযুক্ত স্কুলমালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ। এই ঘটনায় পূর্ব মেদিনীপুরের ভগবানপুর থানার ওসি শাহেনশাহ হকের বিরুদ্ধেও বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেলার ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মিতুনকুমার দে। তিনি জানান, এসডিপিও স্তরের কোনও আধিকারিক এই ঘটনার তদন্ত করছেন।
ভগবানপুর থানা এলাকার সাউথ পয়েন্ট পাবলিক স্কুলে একটি অনুষ্ঠানে গান গাইতে গিয়েছিলেন লগ্নজিতা। অভিযোগ, অনুষ্ঠান চলাকালীন তাঁকে হেনস্থার শিকার হতে হয়। গায়িকার অভিযোগ, ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির ‘জাগো মা’ গানটি গেয়েছিলেন তিনি। তার কিছু ক্ষণ পরেই দর্শকাসন থেকে এক ব্যক্তি উঠে আসেন মঞ্চে। তাঁকে মারধর করতে উদ্যত হন। তবে পরিস্থিতি অবনতি হওয়ার আগেই ওই ব্যক্তিকে সরিয়ে নিয়ে যান অন্যেরা। তার পরে লগ্নজিতা আর গান গাননি।
লগ্নজিতার অভিযোগ, স্কুলমালিক মেহবুব মল্লিক তাঁর সঙ্গে অভব্য ব্যবহার করেন। তাঁকে কটূক্তি করা হয় বলেও অভিযোগ। ঘটনার ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে মূল অভিযুক্ত মেহবুবকে গ্রেফতার করল পুলিশ। ধৃত ভগবানপুর এলাকার বেলুদিয়া গ্রামের বাসিন্দা। শুধু তা-ই নয়, এই ঘটনায় ভগবানপুর থানার ওসির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করেছে জেলা পুলিশ।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল শুরু হয়। বিজেপির অভিযোগ, লগ্নজিতাকে দীর্ঘ ক্ষণ ভগবানপুর থানায় বসিয়ে রাখা হয়েছিল। তাঁর অভিযোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি অভিযুক্তকে আড়াল করার চেষ্টাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ। পূর্ব মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত এসপি জানিয়েছেন, এই ঘটনায় কাউকে রেয়াত করা হবে না। তাঁর বক্তব্য, শনিবারের অনুষ্ঠানের পুলিশের অনুমতি ছিল কি না, যদি অনুমতি থাকে তবে অনুষ্ঠানের সময় স্কুলে পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে।
শনিবারের ঘটনা নিয়ে রাতেই লগ্নজিতা ভগবানপুর থানায় যান। সবিস্তার ঘটনার কথা জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে। গায়িকা জানান, ওঁরা তাঁকে একটি জেনারেল ডায়েরি করতে বলেন। তিনি সেটি করেন। তবে প্রশ্ন উঠছে, এমন ঘটনার পর কেন এফআইআর দায়ের করল না পুলিশ? এসপি জানিয়েছেন, সব অভিযোগই পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে যাচাই করে দেখা হবে। এসপির কথায়, ‘‘এই ধরণের ঘটনা যাতে পুনরায় না ঘটে তা-ও আমরা নিশ্চিত করতে চাই।’’
লগ্নজিতা পুলিশকে জানান, শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ অনুষ্ঠান শুরু হয়। তবে শুরুর দিকে কোনও গোলযোগ ছিল না। তাঁর কথায়, ‘‘প্রথম তিনটে গানের পর সুষ্ঠু ভাবে আমার সংবর্ধনাও দেওয়া হয়। ৭টা ৪৫ মিনিটে আমার গানের তালিকার সপ্তম গান গাওয়া শেষ হয়। অষ্টম গানে যাওয়ার আগে দর্শকদের সঙ্গে কথা বলছিলাম। তখনই ঘটনাটি ঘটে।” গায়িকার অভিযোগ, ‘দেবী চৌধুরাণী’ ছবির ‘জাগো মা’ গানটি গাওয়ার কিছু ক্ষণ পরই দর্শকাসন থেকে উঠে আসেন মেহবুব। তাঁকে মারধর করতে উদ্যত হন।