• কুকুর-বেড়ালের সংঘাতে মর্মান্তিক পরিণতি! ভাড়াটের ‘ধাক্কা’য় সিঁড়ি থেকে পড়ে মৃত বাড়ির মালিক
    প্রতিদিন | ২১ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সৌরভ মাজি, বর্ধমান: পোষ্যদের নিয়ে বাড়ির মালিক-ভাড়াটের সংঘাত থেকে চরম পরিণতি। দু’পক্ষের ঝগড়া থেকে হাতাহাতি, একজনের ধাক্কায় সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়ে মৃত্যু হল অপরজনের! এমনটা যে হতে পারে, কেউ দুঃস্বপ্নেও ভাবেননি। শনিবার রাতে বর্ধমান শহরের এই ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান ও পরিবারের সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে ভাড়াটেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। রবিবার তাঁকে আদালতে পেশ করে জেল হেফাজতে রাখার আবেদন জানিয়েছে পুলিশ।

    ঘটনার সূত্রপাত বেশ কয়েকদিন আগে। বর্ধমান শহরের বিজয়পল্লির পীরপুকুরের কালনা রোড এলাকার বাসিন্দা সন্দীপকুমার দত্ত। তাঁদের শরিকি বাড়িতে অনেকদিন ধরে ভাড়া থাকেন সোমনাথ রায় ও তাঁর পরিবার। সোমনাথের দুটি পোষ্য রটউইলার আছে। আর সন্দীপবাবুর পোষ্য কয়েকটি বিড়াল। এদের সবসময় সংঘাত লেগেই থাকত। সোমনাথবাবুর পরিবার থাকে দোতলায়। একতলায় থাকেন সন্দীপবাবুরা। অভিযোগ, তাঁর পোষ্য বিড়ালদের নিয়ে ছাদে যাওয়া নিয়ে সোমনাথবাবুর কুকুররা সবসময় আক্রমণাত্মক হয়ে উঠত। পোষ্যর মালিক সোমনাথ কুকুরদের নিয়ন্ত্রণ করতেন না বলে অভিযোগ। এই নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি লেগেই থাকত। সেটাই চরমে ওঠে শনিবার রাতে।

    ওইদিন রাতে বেড়ালদের নিয়ে ছাদে যাচ্ছিলেন সন্দীপবাবু। সেসময় যথারীতি রটউইলার দুটি তাদের দেখে চেঁচামেচি শুরু করে। তাতে সন্দীপবাবু প্রতিবাদ করে সোমনাথবাবুকে পোষ্যদের সামলাতে বলেন। এতে দু’জনের মধ্যে তর্কাতর্কি শুরু হয়। তা একসময় চরম আকার নেয়। অভিযোগ, এর মাঝে সন্দীপবাবুকে ধাক্কা দেন সোমনাথ। সিঁড়ি দিয়ে গড়িয়ে পড়েন তিনি। তা দেখে সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের সদস্যরা তাঁকে উদ্ধার করে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। চিকিৎসকরা সন্দীপ দত্তকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

    গোটা ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সন্দীপবাবুর ভ্রাতৃবধূ অঙ্কিতা কোনার। তাঁর বয়ানে সব শুনে সোমনাথ রায়ের বিরুদ্ধে বর্ধমান থানায় অভিযোগ দায়ের করে সন্দীপবাবুর ভাই সুদীপ দত্ত। রাতেই তাঁকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিবার আদালতে পেশ করে পুলিশ হেফাজতের আবেদন জানানো হয়েছে। কিন্তু পোষ্য কুকুর আর বিড়াল নিয়ে ভাড়াটে-মালিকের ঝগড়া প্রাণহানির কারণ হয়ে উঠবে, তা যেন এখনও বিশ্বাস করতে পারছেন না কেউ।
  • Link to this news (প্রতিদিন)