জাতীয় সড়কে জখমদের উদ্ধারকারীরা পাবে ২৫ হাজার টাকা, সিদ্ধান্ত কেন্দ্রের
বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনায় মৃত্যু এড়াতে এবার উদ্ধারকারীদের পুরস্কার দেবে কেন্দ্র। দেওয়া হবে ২৫ হাজার টাকা। একইসঙ্গে আহত ব্যক্তি পাবে সাতদিনের ফ্রি চিকিৎসা। তার জন্য হাসপাতালকে দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেওয়া হবে। দুর্ঘটনায় উদ্ধারকারীদের যাতে পুলিশ অহেতুক কোনও হেনস্তা না করে, তার জন্যও রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো হবে। প্রবল কুয়াশার কারণ তো বটেই, রাস্তার হাল খারাপ, প্রবল গতিতে গাড়ি চালানোর ফলে জাতীয় সড়কে দুর্ঘটনা বাড়ে বলেই কেন্দ্রের মত। তাই দুর্ঘটনা প্রবণ এলাকা চিহ্নিতকরণেই জোর দিচ্ছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই সাত হাজার এ ধরনের ‘ব্ল্যাকস্পট’ চিহ্নিত হয়েছে।
সড়ক পরিবণ মন্ত্রকের রিপোর্ট মোতাবেক, ২০২৩ সালে (এটিই সাম্প্রতিক) গোটা দেশে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে ৪ লক্ষ ৮০হাজার ৫৮৩। দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৭২ হাজার ৮৯০। এর মধ্যে ২৫-৩৫ বয়সি তাজা প্রাণ চলে যায় ২৫.৭ শতাংশ। নিহতদের সাড়ে ২১ শতাংশ ৩৫-৪৫ বছর বয়সি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুর্ঘটনার পর হাতে সময় থাকতে আহতদের হাসপাতালে না নিয়ে যাওয়ার কারণেই অকালে প্রাণ হারান সাধারণ নাগরিকরা। ঘটনাচক্রে দুর্ঘটনা দেখেও পুলিশি ‘ঝামেলা’ এড়াতে সিংহভাগ নাগরিক উদ্ধার কাজে আগ্রহ দেখায় না।
তাই পথ দুর্ঘটনা এড়াতে সচেতনতা বাড়ানোর পাশাপাশি আহতের সময়ের মধ্যে হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে নতুন উদ্যোগ নিয়েছে কেন্দ্র। সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নীতিন গাদকারি জানিয়েছেন, একটু উদ্যোগ নিলেও অনায়াসে বছরে ৫০ হাজার মানুষের মৃত্যু আটকানো যায়। আসলে উদ্ধারকারীরা পুলিশ কেসে পড়ার ভয় পান। তাই দুর্ঘটনা দেখেও এড়িয়ে যান। তাই এবার থেকে উদ্ধারকারীদের উৎসাহ বাড়াতে দেওয়া হবে সাম্মানিক। ২৫ হাজার টাকা। যে ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গ দুর্ঘটনাগ্রস্তদের হাসপাতালে পৌঁছে দিয়ে অমূল্য জীবন বাঁচাবেন, আর্থিক পুরস্কারের পাশাপাশি তাদের সাহসী পদক্ষেপের বিবরণ প্রকাশ করা হবে। অন্যদিকে, হাসপাতালও যাতে চিকিৎসা খরচ পাওয়ার চিন্তা না করে, তার জন্য সরকার দেড় লক্ষ টাকা পর্যন্ত দেবে। পুলিশ তদন্ত করুক, কিন্তু প্রকৃত উদ্ধারকারীর বিরুদ্ধে যাতে অহেতুক হেনস্তার অভিযোগ না ওঠে। তাই রাজ্যগুলির সঙ্গে সমন্বয় বাড়ানো হবে। সচেতনতা বাড়াতে জনপ্রতিনিধি সাংসদেরও যুক্ত করতে চাইছে কেন্দ্র। এ ব্যাপারে লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাও সাংসদের নিয়ে প্রয়োজনে বিশেষ কর্মশালার পরিকল্পনা করেছেন বলেই জানা গিয়েছে। লক্ষ্য একটাই, সড়ক দুর্ঘটনা কমানো।