জি রাম জি বিলে সই রাষ্ট্রপতির, কার্যকর করা নিয়ে চাপে কেন্দ্র
বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, নয়াদিল্লি: সংসদে বিশ পাশ হওয়ার পর ৭২ ঘণ্টার মধ্যে অর্থাৎ রবিবারই তাতে সই করে দিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু। ফলে আইনে পরিণত হল ‘বিকশিত ভারত-জি রাম জি বিল ২০২৫।’ যদিও তা কার্যকর করা নিয়ে চাপে মোদি সরকার। কারণ, ঘটা করে নতুন আইনে কাজের দিন সংখ্যা পরিবার পিছু ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ দিন করা হয়েছে ঠিকই। কিন্তু খোদ গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের রিপোর্টই বলছে, গড়ে গোটা দেশে কোনও পরিবারই ১০০ দিনই কাজ পায় না। ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষেও যেখানে গোটা দেশে গড়ে কাজ পেয়েছিল ৫২ দিন, ২০২৫-২৬ সালে তা হয়েছে ৩৬। তার উপর নতুন আইন বলে কৃষি মরশুমে ৬০ দিন কোনও কাজ হবে না। ফলে ১২৫ দিনের প্রচার কতটা কাজে দেবে, প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
তার উপর একদিকে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০০ দিনের কাজের আইনে মহাত্মার নাম বাদের প্রতিবাদে পশ্চিমবঙ্গে ‘মহাত্মাশ্রী’ প্রকল্পের কথা ঘোষণা করেছেন। আগামী ২৭ ডিসেম্বর দিল্লিতে বসছে কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক। সেখানে এই আইনের বিরুদ্ধে মোদি সরকার বিরোধী স্ট্র্যাটেজি তৈরি হবে। কোনওভাবে যদি মমতার পথে কর্ণাটক, হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খণ্ড, তামিলনাড়ু বা জম্মু-কাশ্মীরের মতো ইন্ডিয়া জোটের শাসনে চলা রাজ্যে ভিন্ন প্রকল্প চালু করে, তাহলে তা কেন্দ্রের উপর পরোক্ষে রাজনৈতিক চাপই বাড়াবে। তাই নতুন আইনের সপক্ষে স্বয়ং গ্রামোন্নয়নমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান বাড়াচ্ছেন প্রচার। জানিয়েছেন, এই বিল কার্যকর হলে প্রকল্পের জন্য ১ লক্ষ ৫১ হাজার ২৮২ কোটি টাকা খরচ করা হবে। তার মধ্যে কেন্দ্র দেবে ৯৫ হাজার ৬৯২ কোটি ৩১ লক্ষ টাকা। বাকিটা রাজ্যের। পশ্চিমবঙ্গ সহ রাজ্যগুলিকে জি রাম জি বিলের জন্য মোট ৫৫ হাজার ৫৮৯ কোটি ৬৯ লক্ষ টাকা খরচ করতে হবে। একইসঙ্গে মন্ত্রী বলেছেন, প্রশাসনিক কাজের জন্য মোট বরাদ্দের ৯ শতাংশ অর্থ খরচ হবে। এখন যা রয়েছে ৬ শতাংশ। ফলে যারা কাজ করাবেন, তাঁদের জন্য খরচ হবে ১৩ হাজার কোটি টাকা। সঠিক সময়ে মিলবে প্রশাসনিক কাজে যুক্তদের বেতন।
অন্যদিকে, মন্ত্রকের এক বিশেষ সূত্র জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ ‘মহাত্মা-শ্রী’ নামে পৃথক রাজ্য-প্রকল্প চালাতেই পারে। তবে তা কোনওভাবে কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সঙ্গে মেশানো যাবে না। কেন্দ্রীয় প্রকল্পের নাম বদল করলে মিলবে না অর্থ। ফলে গ্রামীণ রোজগারে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে পশ্চিমবঙ্গে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত কি জারিই থাকবে? ওয়াকিবহাল মহলে উঠছে এই প্রশ্ন।