• আরাবল্লি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে সরব পরিবেশকর্মীরা
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • জয়পুর: আরাবল্লি পর্বতমালার সংজ্ঞা নির্ধারণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে ক্ষুব্ধ পরিবেশ কর্মীরা। এনিয়ে ব্যাপক প্রতিবাদ শুরু হয়েছে রাজস্থান, দিল্লি, গুজরাত ও হরিয়ানায়। বিতর্কের মূলে আরাবল্লি পর্বতমালা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় পরিবেশ মন্ত্রকের ব্যাখ্যা। শীর্ষ আদালত ওই ব্যাখ্যা মেনে নিয়ে জানিয়েছে, নির্দিষ্ট উচ্চতা ও ভূ-প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যযুক্ত অঞ্চলকেই আরাবল্লির অংশ হিসেবে ধরা হবে। সংশোধিত সংজ্ঞা অনুযায়ী, রাজস্থানের আরাবল্লি পর্বতমালার প্রায় ৯০ শতাংশই আর সংরক্ষিত বলে চিহ্নিত হবে না। কারণ, ওই অংশের পাহাড়ের উচ্চতা ১০০ মিটারের কম। নয়া ব্যাখ্যা অনুযায়ী, ১০০ মিটারের বেশি উচ্চতা থাকলে তবেই সংরক্ষিত হিসেবে ধরা হবে।  

    এই সংজ্ঞার ফলে রাজস্থান ও হরিয়ানার পাহাড়ি এলাকা আইনি সুরক্ষা হারাতে পারে বলে আশঙ্কা পরিবেশবিদ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের। সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর জয়পুর, আলওয়ার, উদয়পুর-সহ একাধিক জেলায় পরিবেশকর্মী, ছাত্র, আইনজীবী ও গ্রামবাসীরা রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ শুরু করেন। তাঁদের দাবি, নতুন সংজ্ঞা কার্যকর হলে খনন, নির্মাণ ও শিল্প প্রকল্পের জন্য আরাবল্লির বড় অংশ খুলে যাবে, যা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এতে আরাবল্লির মৃত্যুঘণ্টা বেজে যাবে। আগামীতে এর ফলে বড় বিপদ হতে পারে। আন্দোলনকারীরা জানান,  আরাবল্লি পর্বতমালা উত্তর ভারতের প্রাকৃতিক ঢাল হিসেবে কাজ করে। ভূগর্ভস্থ জলস্তর ধরে রাখে। দিল্লি-এনসিআর অঞ্চলের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। এই পাহাড়ের সুরক্ষা দুর্বল হলে জলসংকট ও বায়ুদূষণ আরও বাড়তে পারে। আন্দোলনকারীরা রায় পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। 

    সেইসঙ্গে আরাবল্লিকে সম্পূর্ণভাবে সংরক্ষিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করার দাবি কেন্দ্রের কাছে জানিয়েছেন তাঁরা। তাঁদের অভিযোগ, উন্নয়ন ও বাণিজ্যিক স্বার্থে পরিবেশকে নষ্ট করা হচ্ছে। তবে প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, আদালতের নির্দেশ মেনেই পদক্ষেপ করা হচ্ছে। পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়টি সরকার গুরুত্বের সঙ্গেই দেখছে। তবু এই রায় ঘিরে যে ক্ষোভ ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে, তা রাজস্থানে একটি বড় পরিবেশ আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে বলে মনে করছেন ওয়াকিবহাল মহল।
  • Link to this news (বর্তমান)