• তৃণমূলের কোন্দলে ভেস্তে গেল নির্বাচন
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, কোচবিহার: বইমেলার পর এবার জেলা ক্রীড়া সংস্থার ত্রি- বার্ষিক সাধারণ সভাতেও তৃণমূল কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের ছায়া। দুই গোষ্ঠীর কোন্দলে ভেস্তে গেল নির্বাচন প্রক্রিয়া। নির্বাচনকে ঘিরে রবিবার কোচবিহার শহরের সাগরদিঘির পাড়ে ছিল টানটান উত্তেজনা ও কড়া পুলিশি নিরাপত্তা। উৎসব অডিটোরিয়ামে এজিএম চলাকালীন একদল গোপন ব্যালটে ভোট চাইলেও অন্যদল হাত তুলে নির্বাচনের দাবি জানায়। আর এতেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সামাল দিতে উপস্থিত হন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) সৌমেন দত্ত। নির্বাচন প্রক্রিয়া শুরুও হয়। কিন্তু তারমধ্যেই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে নির্বাচন স্থগিত করে দেন এডিএম। 

    চলতি মাসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলা সফরে এসে দলে ঐক্যের বার্তা দিয়ে যান। বলে গিয়েছিলেন, ‘যুদ্ধের সময় কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়তে হয়।’ কিন্তু জেলা তৃণমূল যেখানে দাঁড়িয়ে ছিল ঠিক সেখানেই আছে। রবীন্দ্রনাথ ঘোষ গোষ্ঠী বনাম অভিজিৎ দে ভৌমিক গোষ্ঠীর কেউ কাউকে একইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। ১৮ ডেসেম্বর বইমেলার মঞ্চেও তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রকট হয়েছিল। এভার ডিএসএ’র নির্বাচনেও কার্যত তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর টানাপোড়েনে এমনটা হল বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। 

    এডিএম বলেন, কীভাবে ভোট হবে তা নিয়ে সদস্যরা ঠিক করতে পারেননি। তাই এদিন নির্বাচন প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়। অন্যদিকে, জেলা ক্রীড়া সংস্থার বিদায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক রবি অনুগামী বলে পরিচিত সুব্রত দত্ত বলেন, নির্দিষ্ট সময়েই প্রায় পাঁচশো সদস্য নিয়ে এজিএম শুরু হয়। প্রতিবেদন পাঠ, আলোচনা, হিসেব পেশ শেষ হওয়ার পর ২০২৫-’২৮ বর্ষের নতুন কার্যকরী কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া আসে। তখন দু’টি প্যানেল জমা হয়। বিদায়ী কমিটি প্যানেল ‘এ’ ও অন্যটি প্যানেল ‘বি’ জমা দিলে ভোটের প্রসঙ্গ আসে। 

    অল্প সংখ্যক সদস্য বলেন হাত তুলে ও বেশিরভাগ সদস্য বলেন ব্যালটে ভোট হোক। তখন ব্যালটের মাধ্যমে ভোট শুরু হয়, দু’জন ভোটও দেন। এরপর কিছু সদস্য বৈঠক বানচাল করে ভোটদান বন্ধের দাবি জানান। তাঁদের দাবি, হাত তুলে ভোট করতে হবে। এরপরেই অতিরিক্ত জেলাশাসক জানান, এরকম বিশৃঙ্খলা হলে ভোট প্রক্রিয়া চালানো যাবে না। ভোটদান বন্ধ রাখেন। মিটিং স্থগিত করে বেরিয়ে যান উনি। আমাদের সংবিধানে বলা আছে যতক্ষণ না নতুন কমিটি হবে ততক্ষণ পুরনো কমিটি কাজ চালিয়ে যাবে। 

    কোচবিহার পুরসভার চেয়ারম্যান তথা জেলা ক্রীড়া সংস্থার ভাইস প্রেসিডেন্ট রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, প্যানেল জমা পড়ার পর অধিকাংশ সদস্যই ভোটের কথা বলেছিলেন। কিছু সদস্য হাত তুলে ভোটের কথা বলেন। মঞ্চে উঠে বিশৃঙ্খলা শুরু করেন। এরপরেই অতিরিক্ত জেলাশাসক নির্বাচন প্রক্রিয়া স্থগিত করে দেন। এই বিশৃঙ্খলা কাম্য নয়। অন্যদিকে, ডিএসএ’র বিদায়ী কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য তথা জেলা তৃণমূলের সভাপতি অভিজিৎ দে   ভৌমিকের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত সমীর ঘোষের বক্তব্য, সংগঠনের সংবিধানে হাত তুলে ভোট করার কথাই লেখা আছে। এদিন ব্যালটে ভোট প্রক্রিয়া শুরু হতেই আপত্তি তোলা হয়। এরপর তা বাতিল করেন এডিএম।
  • Link to this news (বর্তমান)