• উত্তরবঙ্গ মেডিকেলে ব্লাড সেন্টারে দালালরাজ
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, শিলিগুড়ি: এক ইউনিট রক্তের দাম ২৫০০ টাকা। একসঙ্গে দুই ইউনিট নিলে ৫০০ টাকা ছাড় দিয়ে ৪৫০০ টাকা। এভাবেই রক্ত বিক্রি হচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। ব্লাড সেন্টারে রক্তের সংকট। সেখান থেকে খালি হাতে ফেরার সময় দালালরা ধরছে। ব্লাড সেন্টারের সামনেই তারা দাঁড়িয়ে থাকে। রক্ত দেওয়ার জন্য তারা ওই দর হাঁকছে। নিরুপায় হয়ে অনেকেই কিনতে বাধ্য হচ্ছেন। এই রক্ত বিক্রির কাজে দালালদের সঙ্গ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ব্লাড সেন্টারের এক নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে।  

    গত শনিবার লিখিতভাবে এই অভিযোগ জানান উত্তর দিনাজপুর জেলার বাসিন্দা কুতুবউদ্দিন আহমেদ। তিনি নিজের পরিচয় দেন, কলকাতার লালবাজারে অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইন্সপেক্টর। তিনি হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপারের অফিসে গিয়ে ব্লাড সেন্টারে দালালদের এই দৌরাত্ম্য নিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। যে নিরাপত্তা কর্মী দালাল চক্রের সঙ্গে যোগসাজশ করে তাঁকে রক্ত বিক্রির ফাঁদে ফেলতে চেয়েছিল, সেই নিরাপত্তা কর্মীকেও তিনি চিনিয়ে দেন।  

    কুতুবদ্দিন আহমেদের আত্মীয় জাহানারা খাতুন ১৮ ডিসেম্বর উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফিমেল মেডিসিন-১ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন। অ্যানিমিয়া রয়েছে। ভর্তির পরদিনই চিকিৎসক রক্ত জোগাড় করতে বলে রিকুইজিশন ধরিয়ে দেন। তারপর থেকেই রক্তের জন্য ঘুরে বেড়াচ্ছেন ব্লাড সেন্টারের সামনে। তখনই ব্লাড সেন্টারের সামনে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু ব্যক্তি তাঁকে টাকার বিনিময়ে রক্ত দেওয়ার প্রস্তাব দেন। 

    তিনি বলেন, নিরাপত্তা কর্মী প্রথমে জানায় রক্ত নেই। তারপর সামনে থাকা কিছু ব্যক্তিকে দেখিয়ে কথা বলতে বলে। তারা এক ইউনিটের জন্য ২৫০০ টাকা চায়। দুই ইউনিট নিলে ৫০০ টাকা কম লাগবে বলে। ভেবে দেখছি বলায় ওই নিরাপত্তা কর্মী রিকুইজিশন স্লিপের একদিকে কলম দিয়ে কেটে বলে, ব্লাড সেন্টার থেকে আর রক্ত পাবেন না। তাদের কাছ থেকেই রক্ত নিতে হবে। তাতে সন্দেহ হয়। তারপর আমি হাসপাতালে অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অফিসে গিয়ে লিখিত অভিযোগ দায়ের করি। 

    অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার অভিষেক ঘোষ এই অভিযোগ প্রাপ্তির কথা স্বীকার করেছেন। তিনি যোগাযোগ করে বিনামূল্যে হাসপাতালের ব্লাড সেন্টার থেকে রক্তের ব্যবস্থা করে দেন। অভিষেক ঘোষ বলেন, কুতবুদ্দিন আহমেদ নামে এক ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ করেছেন ব্লাড সেন্টারের সামনে দালালদের অত্যাচার নিয়ে। ব্লাড সেন্টারে কর্মরত এক নিরাপত্তা কর্মী তাঁকে দালালদের কাছ থেকে রক্ত কেনার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছে। এই অভিযোগ পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট নিরাপত্তা এজেন্সির কর্ণধারকে ওই নিরাপত্তা কর্মীর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ব্লাড সেন্টারে দালালদের দৌরাত্ম্য বন্ধ করার ব্যাপারে স্থায়ী পদক্ষেপ করতে বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছি।
  • Link to this news (বর্তমান)