নয়া শিক্ষাবর্ষে জলপাইগুড়ির ৪৮টি স্কুলে চালু পঞ্চম শ্রেণি
বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
নিজস্ব প্রতিনিধি, জলপাইগুড়ি: নয়া শিক্ষাবর্ষে জলপাইগুড়ি জেলায় আরও ৪৮টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে চালু হচ্ছে পঞ্চম শ্রেণি। রাজ্য শিক্ষাদপ্তর থেকে ইতিমধ্যেই এ ব্যাপারে অনুমোদন মিলেছে। সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিকে তা জানিয়েও দেওয়া হয়েছে। তবে জেলা শিক্ষা বিভাগের তরফে পঞ্চম শ্রেণি চালুর জন্য সবমিলিয়ে ১১২টি প্রাথমিক স্কুলের নাম পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু উপযুক্ত পরিকাঠামো না থাকায় ৪৮টি স্কুলে পঞ্চম শ্রেণির পঠনপাঠন চালুর অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি স্কুলগুলির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ক্লাসরুম ও পর্যাপ্ত শিক্ষকের ঘাটতি থাকায় যে ক্লাস ফাইভ চালুর অনুমোদন দেওয়া সম্ভব হল না, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের তরফে। বর্তমানে জলপাইগুড়ি জেলায় ১২০৯টি প্রাইমারি স্কুলের মধ্যে ৬৭৮টিতে পঞ্চম শ্রেণি চালু রয়েছে। জানুয়ারিতে নয়া শিক্ষাবর্ষে ৪৮টি বিদ্যালয় যুক্ত হলে ক্লাস ফাইভ পর্যন্ত পঠনপাঠন হওয়া প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা দাঁড়াবে ৭২৬টি।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শক শ্যামলচন্দ্র রায় বলেন, পঞ্চম শ্রেণি চালুর জন্য এবছর আমরা সবমিলিয়ে জেলা থেকে ১১২টি প্রাথমিক স্কুলের নাম পাঠিয়েছিলাম। পরিকাঠামো খতিয়ে দেখে রাজ্য শিক্ষাদপ্তরের পক্ষ থেকে ৪৮টি স্কুলে ক্লাস ফাইভের পঠনপাঠন চালুর অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যেসমস্ত স্কুল পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানোর অনুমোদন পেয়েছে, তাদের ইতিমধ্যেই জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিষয়টি।
জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস সূত্রে খবর, নয়া শিক্ষাবর্ষে জলপাইগুড়ি শহরের নামী স্কুল হিসেবে পরিচিত ফণীন্দ্রদেব ইন্সটিটিউশন (প্রাথমিক) ও সুনীতিবালা সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি সেন্ট্রাল গার্লস এবং শিশু নিকেতন স্কুলে পঞ্চম শ্রেণি চালু হচ্ছে। এরমধ্যে ফণীন্দ্রদেব ইন্সটিটিউশনের প্রাথমিকে ও সুনীতিবালা সদর বালিকা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি নিয়ে সবচেয়ে বেশি চাপ থাকে। হাইস্কুলের ক্যাম্পাসে চলা এই স্কুলগুলির প্রাথমিক বিভাগে পঞ্চম শ্রেণি চালু হয়ে গেলে হাইস্কুলে ক্লাস ফাইভে ভর্তির চাপ কিছুটা হলেও কমবে বলে মনে করছেন শিক্ষা বিভাগের জেলা আধিকারিকরা। শহরের স্কুলের পাশাপাশি জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের বাহাদুর পঞ্চায়েতের অধীন চড়কডাঙিতে একটি সরকারি প্রাইমারি স্কুলে নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে পঞ্চম শ্রেণি চালু হচ্ছে।
যদিও শুধুমাত্র প্রাথমিকে পঞ্চম শ্রেণি চালু করেই সরকারি স্কুলের হাল ফেরানো সম্ভব নয় বলে মনে করছেন অভিভাবকদের একাংশ। তাঁদের বক্তব্য, পড়ুয়ার অভাবে জলপাইগুড়িতে ইতিমধ্যেই বেশকিছু সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আরও কিছু স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা একেবারে তলানিতে ঠেকেছে। বহু স্কুলে ক্লাসরুমের সমস্যা রয়েছে। একটি ঘরেই চারটি ক্লাস চলছে। কোথাও আবার একজন বা দু’জন শিক্ষক স্কুল চালাচ্ছেন। এসব নিয়েও ভাবতে হবে শিক্ষাদপ্তরকে।
জলপাইগুড়ি জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শকের অফিস সূত্রে খবর, পড়ুয়ার অভাবে পাঁচটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তালা ঝুলছে। আরও কয়েকটি স্কুলে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা কুড়ি জনের নীচে নেমে গিয়েছে। যদিও সরকারিভাবে কোনও স্কুল যে পুরোপুরি বন্ধ তা বলতে নারাজ শিক্ষা বিভাগের জেলার আধিকারিকরা।