নিজস্ব প্রতিনিধি, বহরমপুর: মুর্শিদাবাদ জেলায় ১ লক্ষ ২১ হাজার ৫৯৬ জন ভোটারের ম্যাপিং হয়নি। তাঁদের প্রত্যেককে হেয়ারিংয়ে ডাকা হবে। কমিশনের তরফে তাঁদের বাড়ি নোটিশ পাঠানো শুরু হচ্ছে। সদ্য প্রকাশিত খসড়া তালিকায় কমিশন তাঁদের চিহ্নিত করেছে। তাঁরা বৈধ ভোটার কি না, তা পুরোপুরি নিশ্চিত হতে পারছে না কমিশন। এই ভোটারদের তথ্যে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। তাই তাঁদের কমিশনের শুনানিতে ডেকে পাঠানো হবে। সেখানে ১৩টির মধ্যে একটি নথি দেখাতে হবে। প্রশাসনের আধিকারিকরা যাবতীয় তথ্য যাচাই করবেন। তাঁদের নথি ও শুনানিতে সন্তুষ্ট না হলে নাম বাদ যেতে পারে। স্বাভাবিকভাবেই ম্যাপিং না হওয়া ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। অতিরিক্ত জেলাশাসক(সাধারণ) দিননারায়ণ ঘোষ বলেন, প্রাথমিকভাবে ১ লক্ষ ২১ হাজার ৫৯৬ ভোটারের নো-ম্যাপিং থাকায় আমরা তাঁদের হেয়ারিংয়ে ডাকব। তাঁদের বাড়িতে নোটিশ যাবে।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ফরাক্কা বিধানসভায় ৫৬২২ জন ভোটারের ম্যাপিং হয়নি। সামশেরগঞ্জ বিধানসভায় ২৪৯৭ জনের ম্যাপিং হয়নি। সূতি বিধানসভায় ১৬০৬ জনের ম্যাপিং হয়নি। জঙ্গিপুর মহকুমায় ৪৬৩৫ জনের ম্যাপিং হয়নি। রঘুনাথগঞ্জ বিধানসভায় ২০৮৫ ভোটারের ম্যাপিং হয়নি। সাগরদিঘি বিধানসভায় ২৭৪০ ভোটার, লালগোলা বিধানসভায় ২৮৭৮ জন ভোটার ও ভগবানগোলা বিধানসভায় ৭৮২৭ ভোটারের ম্যাপিং হয়নি। রানিনগর বিধানসভায় ২৫১৭ জনের ম্যাপিং হয়নি। মুর্শিদাবাদ বিধানসভা কেন্দ্রে সব থেকে বেশি ১৪ হাজার ৬৮৪ জন ব্যক্তির ম্যাপিং হয়নি। নবগ্রাম বিধানসভায় ৫৫৯৪ জন, খড়গ্রামে ৫০৫০ জন, বড়ঞায় ৩৮৭২ জনের ম্যাপিং হয়নি। তবে, মুর্শিদাবাদ জেলার মধ্যে সবথেকে বেশি কান্দি বিধানসভায় ২২ হাজার ৬৬৪ জনের ম্যাপিং হয়নি বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। ভরতপুর বিধানসভায় ৬৭১৯ জন, রেজিনগর বিধানসভায় ৩৭৮৩ জন, বেলডাঙায় ৩৪৬৭ জন এবং বহরমপুরে ১৩ হাজার ২৪০ জনের ম্যাপিং হয়নি। জেলা সদরে এত ভোটারের ম্যাপিং না হওয়ায় চিন্তিত রয়েছেন অনেকেই। হরিহরপাড়া বিধানসভায় ১৬১০ জন, নওদা বিধানসভায় ২৪৩০ জন, ডোমকল বিধানসভায় ১০১৯২ জন এবং সীমান্তবর্তী জলঙ্গি বিধানসভায় ৬৮৯৪ জনের ম্যাপিং হয়নি।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেন, মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট ৫৭ লক্ষ ৬৪ হাজার ভোটার ছিলেন। তাঁদের মধ্যে ২০ লক্ষ ৩৫ হাজার ভোটার নিজেরাই ম্যাপিং করেছেন। ৩৩ লক্ষ ২৮ হাজার ভোটারের পরিবারের সদস্যরা ম্যাপিং করিয়েছেন। বাকি ১ লক্ষ ২১ হাজার ৫৯৬ জন ভোটারের ম্যাপিং হয়নি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অনেক ভোটারই অনলাইনে ম্যাপিং করেছেন। তাঁদের খসড়া তালিকায় নাম উঠে গিয়েছে দেখে নিশ্চিন্ত হওয়ার জো নেই। তালিকা থেকে নাম বাদ পড়ার সম্ভাবনা এখনও রয়েছে। বলা ভালো, এখন থেকেই কমিশনের আসল ঝাড়াইবাছাই পর্ব শুরু হচ্ছে। কারণ, যাঁরা ইনিউমারেশন ফর্ম পূরণ করেছেন, তাঁদের প্রায় সকলেরই নাম তুলে দেওয়া হয়েছে খসড়া তালিকায়। অনেকের ম্যাপিং হয়ে গেলেও ডকুমেন্টসে কিছুটা গরমিল আছে। ফলে, জেলার আরও কয়েক লক্ষ ভোটারের ভবিষ্যৎ নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে।