• শান্তিনিকেতনে মেলার আগেই ঢল পর্যটকের, যানজটে হিমশিম পুলিশ
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • সংবাদদাতা, বোলপুর: আগামী কাল, মঙ্গলবার শান্তিনিকেতনে ঐতিহ্যবাহী পৌষমেলা শুরু হচ্ছে। তার একদিন আগেই পর্যটকের ঢল নেমেছে। শীতের আমেজে মেতেছে হাজার হাজার পর্যটক। উল্লেখ্য, শনি-রবিবার এমনিতেই বহু পর্যটক সমাগম হয়। এবছরের শেষদিকে সেই সংখ্যা আরও বেড়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। ছুটি উপভোগ করতে বিশ্বভারতীর রবীন্দ্রভবন, উপাসনা মন্দির, ছাতিমতলার সামনের রাস্তা সহ আশ্রম চত্বরে পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড় লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এমনকি, সৃজনী শিল্পগ্রাম, ডিয়ার পার্ক, কোপাই নদীর পাড়েও ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। শুধু তাই নয়, পর্যটকরা কঙ্কালীতলা মন্দিরে পুজো দিয়ে সুরুল জমিদারবাড়ি, তালতোড় জমিদারবাড়ি সহ বিভিন্ন জায়গায় ভিড় জমাচ্ছে। 

    সোনাঝুরি খোয়াইয়ের হাটে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করতে পর্যটকরা ভিড় জমাচ্ছেন। খোয়াই হাট সংলগ্ন হোটেলগুলিতে শুক্রবার থেকেই ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। হাটে আসা পর্যটক অমৃতা ঘোষ বলেন, সারা বছর খোয়াই হাট চলে ঠিকই। তবে এখন মেলার সময় হাটে ঘুরতে ভালো লাগছে। এটা আমাদের কাছে বাড়তি পাওনা। 

    হাটের শিল্পী ও বিক্রেতাদের সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানকার সিংহভাগ বিক্রেতা পৌষমেলায় যান না। মেলা চলাকালীন তাঁরা হাটেই বসেন। পর্যটকরা আসায় বিক্রিবাটা ভালো হচ্ছে বলে জানান হাটের ব্যবসায়ীরা। 

    পৌষমেলার মাঠে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন স্থান ঘোরার পাশাপাশি অনেক পর্যটক মেলার মাঠের প্রস্তুতি ঘুরে দেখেছেন। মেলা প্রাঙ্গণের স্টল এখনও চালু হয়নি। কিন্তু, ফুটপাতে বিভিন্ন খাবারের দোকান চলছে রমরমিয়ে। অনেক পর্যটক শালপট্টিতে ভিড় করেছেন। আসানসোল থেকে আসা পর্যটক অঙ্কিতা মণ্ডল বলেন, শান্তিনিকেতনে এই সময়টা একেবারে অন্যরকম। এত বড় মেলার আয়োজন দেখে ভালো লাগছে। কিন্তু, হোটেলের বুকিং না মেলায় ফিরে যেতে হবে। একই আক্ষেপের সুর কলকাতা থেকে আসা পর্যটক সুবিনয় মুখোপাধ্যায়ের গলায়। তিনি বলেন, মেলার কয়েকদিন ট্রেনের টিকিট, হোটেলের বুকিং পাওয়া মুশকিল। সেকারণে শান্তিনিকেতনের টানে আগেই এলাম। ঐতিহ্যবাহী বিভিন্ন জায়গা দেখলাম, এটাই আনন্দের।

    এদিন বোলপুর-শান্তিনিকেতনে স্টেশন, চৌরাস্তা, চিত্রামোড়, লজ মোড় ও পোস্ট অফিস মোড়ে ব্যাপক যানজট হয়। রাস্তা যানজটমুক্ত করতে হিমশিম খায় পুলিশ। বিশেষ কয়েকটি জায়গায় পার্কিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে। আশ্রম চত্বরেও যানজট এড়াতে তৎপর ছিল পুলিশ। শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, টোটোর দৌরাত্ম্য বেড়েছে। টোটোচালকরা রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে দাঁড়িয়ে থাকছে। এমনকি, আশ্রম প্রাঙ্গণের ভিতরেও তারা ঢুকছে। পর্যটকদের বড় গাড়ি ও ছোট গাড়ি যত্রতত্র পার্কিংয়েও সমস্যা হচ্ছে। এবার পৌষমেলার ভিড় গত কয়েক বছরের রেকর্ড ছাপিয়ে যাবে বলে মনে করছেন হোটেল ব্যবসায়ীরা। শহরের হোটেল, হোম-স্টে, ভাড়াবাড়িতে বুকিং করেছেন অনেকে। হোটেল ব্যবসায়ীরা জানান, প্রতি বছর এভাবেই শান্তিপূর্ণ মেলা হোক। এই মেলার সঙ্গে বহু মানুষের জীবন-জীবিকা জড়িয়ে রয়েছে।  পৌষ মেলা পড়তেই শান্তিনিকেতনে পর্যটকের ভিড়। -নিজস্ব চিত্র
  • Link to this news (বর্তমান)