রামপুরহাটে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ডন, এক মাসে আক্রমণে জখম শতাধিক
বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
সংবাদদাতা, রামপুরহাট: রামপুরহাট শহরজুড়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ‘ডন’। প্রায় এক মাস ধরে তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ শহরবাসী। এখনও পর্যন্ত শতাধিক মানুষ তার আক্রমণের শিকার হয়েছেন। কেউ হাসপাতালে এখনও ভর্তি, আবার কাউকে প্রাথমিক চিকিৎসার পর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। রবিবারও এক ব্যক্তির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে সে। এমনভাবে ওই ব্যক্তির মাথায় কামড়ে দিয়েছে যে ১৬টি সেলাই পড়েছে। বর্তমানে তিনি রামপুরহাট মেডিকেলে চিকিৎসাধীন। তার ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন শহরবাসী। জাল, খাঁচা সহ নানা কসরত করেও হনুমানটি ধরতে নাজেহাল হতে হচ্ছে। অবশেষে ডনকে কব্জায় আনতে রামপুরহাটের বিধায়কের দ্বারস্থ হল বনদপ্তর।
মধ্যবয়স্ক হনুমানটি মাসখানেক আগে জঙ্গল থেকে রামপুরহাট শহরে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে। দু’দিন পর থেকে তার তাণ্ডব শুরু হয়। কখনও টোটোর মাথার উপর চেপে ঘুরছে। কখনও দাঁড় করানো বাইকের উপরে বসে পড়ছে। আবার কখনও ফুচকা বিক্রেতার গাড়ির দখল নিচ্ছে। সেইসঙ্গে তেড়ে গিয়ে মানুষজনকে কামড়ে দিচ্ছে। দিনকয়েক আগে রামপুরহাট মেডিকেলে তাণ্ডব শুরু করে। রোগীর পরিজনকে কামড়ে দিচ্ছে। শনিবার রামপুরহাট গার্লস স্কুলের কাছে এক ব্যক্তির পায়ে কামড়ে অনেকটা মাংস তুলে নিয়েছে। রবিবার রামপুরহাট স্টেশন যাওয়ার পথে দিলবর শেখ নামে এক ব্যক্তির মাথায় কামড় দেয়। গলগল করে রক্ত বেরতে থাকে। তাঁর শরীরের নানা জায়গায় নখ দিয়ে আঁচড়ে দেয়। স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে উদ্ধার করে রামপুরহাট মেডিকেলে নিয়ে এসে ভর্তি করেন। তাঁর মাথায় ১৬টি সেলাই পড়েছে। রাতেও উৎপাত করছে সে। শহরের অনেকে তার নাম দিয়েছেন, ডন। প্রথম থেকেই তাঁকে ধরতে কখনও জাল নিয়ে, কখনও খাঁচায় খাবারের টোপ দিয়ে ধরার চেষ্টা চালাচ্ছেন বনদপ্তরের কর্মীরা। রাতেও ডনকে ধরতে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন কর্মীরা। কিন্তু ডনকে কব্জায় আনতে ব্যর্থ বনদপ্তরের কর্মীরা। এলাকার বাসিন্দাদের অভিযোগ, এখনও পর্যন্ত শতাধিক পথচারী তার হামলার শিকার হয়েছেন। স্থানীয় বাসিন্দা আমির শেখ বলেন, হনুমানের ভয়ে বাড়ি থেকে বেরতে পারা যাচ্ছে না। বাড়ির ছাদে যেতেও সকলে ভয় পাচ্ছেন। কতদিন এভাবে থাকা যায় বলুন তো? অনেকে হনুমানের কামড় থেকে বাঁচতে হেলমেট পরে ঘুরছেন।
এদিন শহরের গান্ধী পার্কের কাছে হনুমানটি ধরতে কর্মী নিয়ে হাজির হয়েছিলেন রামপুরহাটের তম্বুনি বিট অফিসার কুবের মণ্ডল। সঙ্গে খাঁচা ও জাল ছিল। কিন্তু ডনের দেখা মেলেনি। কুবের সাহেব বলেন, হনুমানটি অসুস্থ নয়। দলছুট হওয়ার পর থেকে অস্বাভাবিক আচরণ করছে। এই ধরনের হনুমান ধরা খুবই কঠিন কাজ। ঘুমপাড়ানি গুলি চালানোর অনুমতি না থাকায় সমস্যা হচ্ছে। এদিন বনকর্মীরা স্থানীয় বিধায়ক আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বারস্থ হন। আশিসবাবু বলেন, বনকর্মীরা হনুমাটির অবস্থান জানতে পারলেও ধরতে পারছেন না। ঘুমপাড়ানি গুলি করে যাতে হনুমানটি ধরা যায় সেব্যাপারে বনকর্মীরা এসেছিলেন। দপ্তরের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদাকে জানিয়েছি।