নিজস্ব প্রতিনিধি, হাওড়া: পুজোর জন্য কাকভোরে গঙ্গা থেকে জল নিয়ে ফিরছিলেন দুই ব্যক্তি। খেলনা পিস্তল দেখিয়ে তাঁদের টাকা, মোবাইল ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটল হাওড়ার শিবপুরে দ্বিতীয় হুগলি সেতুর নীচে জনশূন্য এলাকায়। বৃহস্পতিবার এই দুঃসাহসিক ঘটনাটি ঘটিয়েছে বছর পনেরোর দুই নাবালক। যদিও শিবপুর থানার পুলিশের তৎপরতায় কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই আটক করা হয়েছে দুই অভিযুক্তকে।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৪টা নাগাদ শিবপুরের দীনবন্ধু কলেজ সংলগ্ন দ্বিতীয় হুগলি সেতুর নীচে ঘটনাটি ঘটে। ডোমজুড় থেকে কয়েকজন ব্যক্তি শিবপুর ঘাটে এসেছিলেন গঙ্গাজল নিতে। জারে করে জল নিয়ে হেঁটেই ফিরছিলেন তাঁরা। সেই সময় দুই নাবালক আচমকা তাঁদের পথ আটকে দাঁড়ায়। অভিযোগ, খেলনা পিস্তল উঁচিয়ে গুলি চালানোর ভয় দেখায় তারা। ওই খেলনাকে আসল পিস্তল ভেবে ঘাবড়ে যান তাঁরা। আতঙ্কে গলা শুকিয়ে আসে। এই সুযোগে তাঁদের একজনের কাছ থেকে নগদ টাকা ও অন্যজনের মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় তারা। শীতকালে অত ভোরে রাস্তায় তেমন কেউ না থাকায় কোনও প্রত্যক্ষদর্শীকে পাওয়া যায়নি। খবর পেয়ে শিবপুর থানার পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে আসে। শুরু হয় তদন্ত। এলাকার সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখার পাশাপাশি আশপাশের পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করেন তদন্তকারীরা। স্থানীয় সূত্রেও কিছু তথ্য সংগ্রহ করেন তাঁরা। এরপর অল্প সময়ের মধ্যেই অভিযুক্তদের শনাক্ত করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে কাজিপাড়ার বস্তি এলাকা থেকে পুলিশ দুই নাবালককে আটক করে।
ছিনতাই হওয়া টাকা ও মোবাইল ফোন উদ্ধার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে ওই দুই নাবালক স্বীকার করেছে, আতঙ্ক সৃষ্টি করতেই তারা খেলনা পিস্তল ব্যবহার করেছিল। যাতে সহজে ছিনতাই করা যায়। ওই খেলনা পিস্তলটি পুলিশ উদ্ধার করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, আটক নাবালকদের বাড়ি স্থানীয় শিবপুরের কাজিপাড়া এলাকায়। তবে তারা আগে এই ধরনের অপরাধ করেছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। হাওড়া সিটি পুলিশের এক পদস্থ কর্তা জানান, ‘জুভেনাইল কোর্টের নির্দেশে দুই নাবালককে হোমে পাঠানো হয়েছে। ওই এলাকার আরও কেউ এই ধরনের অপরাধে যুক্ত রয়েছে কি না, তা খোঁজ করে দেখা হচ্ছে’। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, কেউই তাদের আগে এমন কাজ করতে দেখেননি। তাঁদের কথায়, এই এলাকায় সাম্প্রতিককালে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেনি। ভোরের নির্জনতাকে কাজে লাগিয়ে তারা এই কাজ করেছে বলে মনে করছেন তাঁরা। এই ঘটনায় পুলিশি নজরদারির অভাব নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে।