• পরকীয়ার প্রতিবাদ করায় স্ত্রীর প্রেমিকের হাতে খুন হলেন স্বামী, গ্রেফতার অভিযুক্ত
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, চুঁচুড়া: স্ত্রীর পরকীয়ার প্রতিবাদে করতে গিয়ে খুন হলেন স্বামী। শনিবার রাতে এই চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির মগরা থানার কুন্তীঘাটে। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম প্রসেনজিৎ দাস (৩৬)। তিনি কুন্তীঘাটের শেরপুরের বাসিন্দা ছিলেন। শনিবার রাতে প্রসেনজিতের স্ত্রীর প্রেমিক মদ্যপ অবস্থায় ছুরি দিয়ে তাঁকে আঘাত করে। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। অভিযোগ, প্রসেনজিতের বাড়িতে এসেই অভিযুক্ত যুবক সুব্রত ভক্ত হামলা চালিয়েছে। রাতেই পুলিশ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে। পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত সুব্রত বলাগড়ের নিত্যানন্দপুরের বাসিন্দা। এই ঘটনায় মৃতের স্ত্রী রত্না দাসকেও পুলিশ আটক করেছে।

    মগরা থানার পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের পরিবার খুনের অভিযোগ দায়ের করেছে। নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। প্রসেনজিতের মা কল্পনা দাস বলেন, আমার বউমার সঙ্গে অবৈধ সম্পর্ক ছিল সুব্রতর। 

    এ নিয়ে আমার ছেলে থানায় আগেও অভিযোগ জানিয়েছিল। শনিবার রাতে ওই যুবক পরিকল্পনা করেই সঙ্গে ছুরি নিয়ে এসেছিল। আমার ছেলেকে বউমা ও তার প্রেমিক মিলেই খুন করেছে। দু’জনেরই দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

    স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, শেরপুরের বাসিন্দা প্রসেনজিৎ পেশায় রাজমিস্ত্রি। প্রায় ১৪ বছর আগে সোদপুরের রত্নার সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। এই দম্পতির বছর দশেকের এক সন্তান রয়েছে। রত্না পঞ্চায়েতের কিছু চুক্তিভিত্তিক কাজ করে। সেই কাজের সূত্রেই সুব্রতর সঙ্গে তার পরিচয়। ক্রমে সেই পরিচয় ঘনিষ্ঠতায় পরিণত হয়। বেশ কিছুদিন ধরেই এনিয়ে স্বামী-স্ত্রী’র মধ্যে বিবাদ চলছিল। প্রসেনজিৎ দু’জনকে মেলামেশা করতে বহুবার নিষেধ করেছিলেন। পরে তিনি থানায় সুব্রতর নামে অভিযোগও করেন। এরপরেই সুব্রত ও প্রসেনজিতের সম্পর্ক আরও তিক্ত হয়ে উঠেছিল। শনিবার রাতে সুব্রত মদ্যপ অবস্থায় রত্নার শ্বশুরবাড়িতে এসে তাণ্ডব শুরু করে। সে বারে বারে প্রসেনজিতের খোঁজ করছিল। কল্পনাদেবী তাকে বাড়ি থেকে চলে যেতে বলেন। অভিযোগ, মায়ের চিৎকারে দেওর ঘর থেকে বেরিয়ে এলে তাঁর উপর হামলা চালায় সুব্রত। ঘটনাচক্রে তখনই কাজ থেকে ফেরেন প্রসেনজিৎ। তারপর দু’জনের মধ্যে বচসা শুরু হয়। সেই সময়েই সুব্রত ছুরি বের করে কোপাতে শুরু করে প্রসেনজিৎকে। উপর্যুপরি কোপানের পর সে পালিয়ে যায়। গুরুতর জখম প্রসেনজিৎকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলেও তাঁকে বাঁচানো যায়নি। রাতেই কল্পনাদেবী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। 
  • Link to this news (বর্তমান)