• বিনিয়োগের টোপে প্রতারণা বিধাননগরে, ৫০ লক্ষ দেওয়ার পরই ব্যালেন্স ৮২ লক্ষ টাকা!
    বর্তমান | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • নিজস্ব প্রতিনিধি, বিধাননগর: শেয়ার ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে উচ্চ হারে রিটার্নের টোপ। বিশ্বাস অর্জনের জন্য ভুয়ো নথিপত্রও দেখানো হয়েছিল। প্রতারকদের খপ্পরে পড়ে বাগুইআটির এক প্রবীণ বাসিন্দা ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেছিলেন। কিছুদিনের মধ্যেই সেই বিনিয়োগের ভুয়ো ব্যালেন্স দেখানো হয় ৮২ লক্ষ টাকা! কিন্তু, সেই টাকা তোলার জন্য আরও কমিশন দাবি করে প্রতারকরা। রিটার্ন তো দূরের কথা, বিনিয়োগ করা অর্থই ফিরে পাননি তিনি। তারপরই তিনি বুঝতে পারেন, প্রতারণার শিকার হয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তিনি শনিবার সল্টলেকে বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।

    পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রতারিতের বয়স ৭৪ বছর। অক্টোবর-নভেম্বর মাস নাগাদ হোয়াটসঅ্যাপে প্রতারকরা তাঁকে পাকড়াও করে। তারপর তাঁকে একটি হোয়াসটসঅ্যাপ গ্রুপে যুক্ত করা হয়। পুরোনো কৌশলে প্রতারকরা শেয়ার ট্রেডিংয়ের নানা ভালো দিক বোঝাতে শুরু করেন। ‘সেবি’র ভুয়ো নথিপত্রও দেখান। সব সত্যি ভেবে তিনি ৫০ লক্ষ টাকা বিনিয়োগ করে ফেলেন। কিছুদিন পর তিনি দেখেন, তাঁর বিনিয়োগ করা অর্থের ব্যালেন্স ৮২ লক্ষ টাকা! পরে প্রতারকরা তাঁর কাছে আরও ৩ লক্ষ টাকা দাবি করে। টাকা না দিলে অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ হয়ে যাওয়ার কথা বলা হয়। যদিও তিনি পরবর্তী ক্ষেত্রে আর কোনও টাকা দেননি। তা না হলে সেই টাকাও লোপাট হতে পারত।

    পুলিশ ও সাইবার বিশেষজ্ঞদের কথায়, এই ইনভেস্টমেন্ট ফ্রডে প্রবীণ থেকে তরুণ প্রজন্মের সকলেই ফাঁদে পড়ছেন। প্রতারকরা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ বা টেলিগ্রাম গ্রুপে যুক্ত করে বিনিয়োগের টোপ দিচ্ছে। ভুয়ো শেয়ার ট্রেডিংয়ের অ্যাপ বানিয়ে সেখানে ভুয়ো ব্যালেন্স দেখার জন্য একটি নকল ওয়ালেট অ্যাপ বানানো হয়। যেখানে কিছুদিনের মধ্যে বিনিয়োগ করা অর্থ বহুগুণ বেশি দেখানো হয়। অনেকে সেই ফাঁদে পড়ে আরও বিনিয়োগ করতে শুরু করেন। কিন্তু, টাকা তুলতে গেলেই আসল সত্য সামনে আসে। কেউ টাকা তুলতে পারেন না। প্রতারকরা শেষ পর্যন্ত ট্যাক্স, কমিশন, সার্ভিস চার্জ ইত্যাদির কথা বলে আরও টাকা চায়। শেষে প্রতারকরা গ্রুপ থেকে বিনিয়োগকারীকে ‘রিমুভ’ করে দিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয়। তাই যে কোনও ধরনের বিনিয়োগের আগে সতর্ক হওয়ার বার্তা দিচ্ছে পুলিশ।
  • Link to this news (বর্তমান)