• ভাঙা ঘরের মালিক হলেন কোটিপতি
    আজকাল | ২২ ডিসেম্বর ২০২৫
  • আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে কী না হয়! ভাঙা ঘরে, লোকের জায়গায় যাঁরা বাস করেন, তাঁরাই আজ কোটিপতি। পূর্ব বর্ধমানের উচালনের এক ছোট্ট চায়ের দোকানের মালিক মাত্র ৯০ টাকার লটারির টিকিট কেটেছিলেন দু'দিন আগে। শুক্রবার ওই টিকিটটি কাটা হয়। ডিলারের ঘর থেকে টিকিট নিয়ে বিক্রি করেন রিটেলার। সেই ৯০ টাকার টিকিটেই ভাগ্য ফিরল দম্পতির। 

    গত সপ্তাহে ওই টিকিট কাটেন জলি বিষয়ী। তিনি ও তাঁর স্বামী টুলু বিষয়ী বেশ কয়েক বছর আগে বাংলায় আসেন। ওড়িশা থেকে রাইসমিলে কাজ করতে এসেছিলেন তাঁরা। সেই রাইসমিল বন্ধ হলে, স্বামী অন্য রাইসমিলে কাজ করতে শুরু করেন। স্ত্রী একটি ছোট্ট চায়ের দোকান চালান। তাঁদের দু'টি ছেলে রয়েছে। একজন দশম শ্রেণির ছাত্র, আরেকজন প্রথম শ্রেণিতে পড়াশোনা করে। 

    টিকিট কাটার পরে নম্বর মিলিয়ে তাঁরা জানতে পারেন, এক কোটি টাকা জিতেছেন। যাঁর টেবিল থেকে টিকিটটি বিক্রি হয়, তিনিই প্রথম খেয়াল করেন। এই টাকা পেয়ে আনন্দের জোয়ারে ভাসছেন স্বামী, স্ত্রী। 

    দম্পতি জানিয়েছে, এখনও কিছু ভেবে ওঠেননি কোটি টাকা দিয়ে কী কী করবেন। তবে একটা বাড়ি তৈরি করার ইচ্ছে আছে। সেই মতো খোঁজ নিতে শুরু করেছেন। 

    কোটি টাকার মালিক জলি বিষয়ী জানান, এভাবে ভাগ্য ফিরবে ভাবেননি কখনও। তাঁর স্বামী প্রায়ই লটারির টিকিট কাটেন। কী মনে হতে সেদিন নিজেও ৯০ টাকা দিয়ে কেটেছিলেন লটারির টিকিট। আর তারই একটায় ফিরল ভাগ্য। ভাঙাঘরের মালিক হলেন কোটিপতি!

    গত বছর অক্টোবরে এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। স্ত্রীর দেওয়া সার কেনার ১০০ টাকা ভেঙে দুটি টিকিট কিনেই কোটিপতি যুবক। কিন্তু তাঁকেই টিকিট সমেত পুলিশ ফাঁড়িতে কাটাতে হচ্ছিল। জানা গেছে, আউশগ্রামের ডাঙ্গাপাড়ার বাসিন্দা বামাচরণ মেটে। নিরাপত্তার জন্য তাঁকে তিনদিন ধরে থাকতে হয়েছিল আউশগ্রামের ছোড়া ফাঁড়িতেই।

    বামাচরণ মেটে জানিয়েছিলেন, ফসলে দেওয়ার জন্য সার কিনতে ১০০ টাকা দিয়েছিলেন স্ত্রী। আর সেই ১০০ টাকায় বদলে গেছে তাঁর ভাগ্য। সারের দোকান বন্ধ থাকায় সেই টাকা থেকে ৬০ টাকা দিয়ে সোমবার সকালে দুটি টিকিট কাটেন বামাচরণ। তারপর দুপুরে খেতে বসে ফোনে টিকিট মেলাতে গিয়ে চক্ষু চড়কগাছ হয়ে যায় রামচরণের। তাঁর যেন বিশ্বাসই হচ্ছিল না প্রথম পুরস্কার জিতেছেন। 

    তিনি আরও জানিয়েছিলেন, 'দুই সিরিজের টিকিট কিনি। দাম পড়ে ষাট টাকা। অভাবের সংসারে এই টাকার দাম অনেক। তারপর ছাগল চড়াতে যাই। বাড়ি এসে খেতে বসে মিলিয়ে দেখি আমি ফার্স্ট প্রাইজ পেয়েছি!'

    তবে লটারিতে কোটিপতি হয়েও শান্তি নাই তাঁর।নিরাপত্তার অভাবে ভুগছিলেন তিনি। তাই পুরস্কার জেতার ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই ভাইপোকে নিয়ে থানায় চলে যান। সেখানে পুলিশের কাছে নিরাপত্তা চেয়ে আবেদন জানিয়েছিলেন বামাচরণ। অনেকেই তাঁকে সাহায্য করেন। তাঁর আবেদনে সাড়া দেয় পুলিশ। আশ্রয় হয় ফাঁড়িতেই। তখন টিকিট জমা করতে পারেননি বলে একটু চিন্তায় ছিলেন তিনি।

    কিন্তু কী করবেন এত টাকা দিয়ে? বামাচরণ জানিয়েছিলেন, ৫০ লাখ টাকা এম আই এস করবেন। একটা বাড়ি করবেন। দু বিঘা জমি কেনারও ইচ্ছে আছে। তবে যাই করুন গ্রামেই থাকবেন। টাকা এসেছে বলেই শহরে গিয়ে বাস করতে চান না লক্ষ্মীর এই বরপুত্র। 

     
  • Link to this news (আজকাল)