অয়ন ঘোষাল: শনিবার থেকে এক অদূত খেলা শুরু করেছে শীত। শুক্রবার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৬.৭ থেকে শনিবার তা নেমে গিয়েছিল ২০.৭ ডিগ্রিতে। অর্থাৎ এক দিনে পারদ পতন হয়েছে ৬ ডিগ্রি। কনকনে ঠান্ডায় কাঁপছে কলকাতা-সহ গোটা রাজ্য। বড়দিনে কী রকম আবহাওয়া থাকবে, সেই দিকে সকলের নজর। সোমবার অর্থাত্ সপ্তাহের শুরুতেই চলে এল তার টাটকা আপডেট। জানিয়ে দিল আবহাওয়া দফতর। আরও পারদ পতনের ইঙ্গিত। বড়দিন থেকে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস কমতে পারে।
কলকাতায় কুয়াশা। কুয়াশার সম্ভাবনা বাড়বে পশ্চিমের জেলায় এবং উত্তরবঙ্গের জেলাতে। আজ কুয়াশা থাকবে সব জেলাতেই। সকালে হালকা থেকে মাঝারি কুয়াশা পরে পরিষ্কার আকাশ। কুয়াশার কারণে দিনভর শীতের অনুভূতি।
কুয়াশার সতর্কবার্তা:
ঘন কুয়াশার সতর্কতা পশ্চিম বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদে। ঘন কুয়াশার সতর্কতা মালদা, উত্তর ও দক্ষিণ দিনাজপুর, দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি কোচবিহারে। কলকাতা-সহ বাকি জেলায় হালকা মাঝারি কুয়াশার সম্ভাবনা।
তাপমাত্রা:
কলকাতা-সহ উপকূলের জেলায় ১৪ থেকে ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। পশ্চিমের জেলায় ১০ থেকে ১৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকবে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। উত্তরে পার্বত্য এলাকায় ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর কাছে। ওপরের পাঁচ জেলায় ১০ থেকে ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এবং মালদা সহ নীচের জেলাতে ১৩ থেকে ১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস এর মধ্যে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা।
কলকাতা:
কুয়াশার কারণে দিনের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশ কিছুটা নীচে। দিনভর শীতের অনুভূতি। রাতের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের সামান্য ওপরে। সকালে হালকা কুয়াশা। পরে পরিষ্কার আকাশ। শুষ্ক আবহাওয়া। বৃষ্টির কোনো সম্ভাবনা নেই।
কলকাতার তাপমান:
আজ সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১৫.২ ডিগ্রি। গতকাল দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২০.৯ ডিগ্রি। বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ আপেক্ষিক আর্দ্রতা ৭৫ থেকে ৯৩ শতাংশ।
জেলায় জেলায় কী চিত্র:
পুরুলিয়া: জাঁকিয়ে শীতের আমেজ পুরুলিয়ায়। জেলার তাপমাত্রা নামল ১১ ডিগ্রিতে। সকালের দিকে কুয়াশাচ্ছন রাস্তাঘাট। দৃশ্যমান্যতা কম থাকায় ধীর গতিতে যানবাহন চালাচ্ছেন চালকরা। শীতের আমেজ উপভোগ করতে পুরুলিয়ার বিভিন্ন পর্যটন স্থান গুলোতে নেমেছে পর্যটকদের ঢল। অন্যদিকে ঠাণ্ডা থেকে রেহাই পেতে আগুন জ্বালিয়ে শরীর গরম করছেন সাধারণ মানুষ। যারা নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে বাইরে বেরোচ্ছেন তারা গরম কাপড় গায়ে জড়িয়ে বাইরে বেরোচ্ছেন। ভিড় বাড়ছে চায়ের ঠেকগুলিতে।
দুর্গাপুর: বছরের শেষে শিল্পাঞ্চলে জাঁকিয়ে পড়ছে ঠান্ডা, সপ্তাহের প্রথম দিন কুয়াশাচ্ছন্ন সকাল। সূর্যের দেখা নেই সকাল আটটা বেজে গেলেও। কনকনে শীতে জবুথবু অবস্থা। দক্ষিণের জেলাগুলিতে ১২ থেকে ১৩ ডিগ্রিতে নেমেছে তাপমাত্রা। শিল্পাঞ্চল দুর্গাপুরের প্রতিটি প্রান্তেই শীতের আমেজ উপভোগ করছে মানুষ। এই কনকনে ঠান্ডায় আগুন পোহাতে ব্যাস্ত সকালে কাজে যাওয়ার আগে। কুয়াশার কারনে রাস্তায় যেমন গাড়ি চলাচলে কিছুটা বিঘ্ন হচ্ছে, সেরকম ট্রেন বিঘ্নিত। তবে এই ঠান্ডা উপভোগ করছে শিল্পাঞ্চলের মানুষ।
জলপাইগুড়ি: জলপাইগুড়িতে তাপমাত্রার পারদ নামল ১০ ডিগ্রির ঘরে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যায় ১০.৮ ডিগ্রি জলপাইগুড়ি তাপমাত্রা।
ঝাড়গ্রাম: রোদের দেখা নেই ঝাড়গ্রামে। জেলায় আজও তাপমাত্রা ১৩ ডিগ্রি। অনুভূতি আরও কম। কনকনে ঠান্ডা হাওয়ায় শীত বাড়িয়ে দিয়েছে কয়েক গুণ। প্রচন্ড ঠান্ডায় নাজেহাল অবস্থা। কুয়াশার জেরে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। একাংশ মানুষের যেমন ঠান্ডায় সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তেমনি পর্যটক রা বেজায় খুশি। সকাল সকাল তারা শীত উপভোগ করতে বেরিয়ে পরছেন।
বাকুঁড়া: বাঁকুড়ায় ফের নামল তাপমাত্রার পারদ। একদিকে কনকনে ঠান্ডা অন্যদিকে হিমশীতল উত্তুরে বাতাসের প্রভাবে রীতিমত জবুথবু বাঁকুড়া জেলার মানুষ। উত্তুরে বাতাসের প্রভাবে গত কয়েকদিন ধরেই বাঁকুড়ায় নামছিল তাপমাত্রা। গতকাল বাঁকুড়ার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১১.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আজ সেই তাপমাত্রার পারদ আরও বেশ কিছুটা নেমে দাঁড়ায় ১১.২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। সঙ্গে দোসর কনকনে ঠান্ডা উত্তুরে বাতাস। একদিকে প্রবল ঠান্ডা আর অন্যদিকে ঠান্ডা বাতাসের প্রভাবে রীতিমত জবুথবু বাঁকুড়া জেলার মানুষ।
ভিন রাজ্য:
কর্ণাটক, তেলঙ্গানায় শৈত্য প্রবাহ। চরম ঘন কুয়াশার লাল সতর্কতা রাজধানী দিল্লিতে। অতি ঘন কুয়াশার দাপট বিহার, উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, পঞ্জাব, হরিয়ানা, চন্ডিগড় এবং হিমাচল প্রদেশে।